হাতীবান্ধা দোলা সঃপ্রাঃ বিদ্যালয় শিশু ঝরে পড়া রোধে প্রাথমিক শিক্ষা হোম ভিজিটের বিকল্প নেই দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫ মো. নুর ই আলম সিদ্দিকী ।। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া (Dropout) একটি বড় চ্যালেঞ্জ। শিশুদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখা শুধু শিক্ষার মান উন্নয়নই নয়, তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের ভিত্তি গড়ে তুলতেও অপরিহার্য। প্রাথমিক শিক্ষা যে দেশে যত সুষ্ঠুভাবে দেয়া হয় সেদেশ তত বেশি টেকসই উন্নয়নে সক্ষমতা অর্জন করে। এজন্য দেশের সঠিক উন্নয়নে সব শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বেশকিছু শিক্ষার্থী অনুপস্থিত লক্ষ্য করা যায়। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে অভিভাবকদের অসচেতনতা, আর্থিক অসচ্ছলতা এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার সুষ্ঠু পরিবেশের অভাব। শিশুদের নিয়মিত বিদ্যালয়মুখী করা পড়ালেখার প্রতি মনোনিবেশ করার জন্য অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি খুবই প্রয়োজন। এই সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কার্যকর পদ্ধতি হলো নিয়মিত হোমভিজিট করা। শিক্ষক,শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এরই সমন্বিত রূপ হলো মানসম্মত শিক্ষা। একজন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে না আসার কারণ হোম ভিজিটের মাধ্যমে উঠে আসে তাছাড়া শ্রেণীতে অমনোযোগী, বাড়ির কাজ না করা, মাঝে মাঝে খাতা-কলম, বই নিয়ে বিদ্যালয়ে না আসা ইত্যাদি বিষয়ে যখন একজন শ্রেণী শিক্ষক বিদ্যালয়ের সময় সূচীর বাহিরে অভিভাবকদের শরণাপন্ন হন তখন আসল ঘটনা জানা যায়। একজন শ্রেণী শিক্ষক যখন মাসে কমপক্ষে এক থেকে দুইটি হোম ভিজিট করবে তখন শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে বাড়বে এবং শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য শ্রেণি শিক্ষক অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত মোবাইলে যোগাযোগ স্থাপন করবেন। এর ফলে অভিভাবক এবং অন্যান্যদের মধ্যে শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যায়। নিয়মিত হোম ভিজিট ও মোবাইলে অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হলে শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মাঝে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে ফলশ্রুতিতে ঝরে পড়া এবং অনিয়মিত শিক্ষার্থীর হার অনেকাংশে কমে যায়। এছাড়াও মাসে একবার উঠান বৈঠক, শ্রেণীভিত্তিক অভিভাবক সমাবেশ ও দুই থেকে তিন মাসে একবার সকল শ্রেণির অভিভাবকদের নিয়ে অভিভাবক সমাবেশ করা হলে অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে, তারা তাদের মতামত প্রদর্শন করতে পারবে ফলে শিক্ষার মান এগিয়ে যাবে। শিশুরা যেহেতু বেশি সময় ধরে মায়েদের সাথে থাকে সেহেতু মায়েরাই শিশুদের ভালো-মন্দ বোঝেন তাই শিশুর সার্বিক অবস্থা জানার জন্য প্রতিটি বিদ্যালয় নিয়মিত উঠান বৈঠক, হোম ভিজিট করা, মা সমাবেশের আয়োজন করা উচিত এতে একটি বিদ্যালয়ের মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে প্রত্যাশা। যেসব শিক্ষার্থী পড়াশোনায় দুর্বল বা ঝরে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে, তাদের দ্রুত শনাক্ত করা জরুরি। তাদের জন্য বাড়তি ক্লাস, পরামর্শ ও বিশেষ সহায়তা দিলে তারা বিদ্যালয়ে টিকে থাকতে পারে। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধের জন্য প্রয়োজন শিশুবান্ধব, আনন্দমুখর ও নিরাপদ বিদ্যালয় পরিবেশ। বিদ্যালয়ে ইনোভেশন যেমন স্মার্ট ক্লাস, আকর্ষণীয় শিক্ষণ উপকরণ, লাইব্রেরি কর্নার বা “ফান-ডে” চালু করা যেতে পারে। শিশুরা যখন আনন্দের সাথে শিখবে, তখন ঝরে পড়ার হার স্বাভাবিকভাবেই কমে যাবে। ফলে মানসস্মত শিক্ষা নিশ্চিত হবে। SHARES সারা বাংলা বিষয়: