দেওয়ানগঞ্জে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা ভুয়া এনজিও

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৫:১৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১, ২০২৪

রিয়াদ হাসান হৃদয়। জামালপুর দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নে,ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এন্টারপ্রাইজ (IDE) এনজিওর নামে দুই হাজার মানুষের কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা একটি ভুয়া এনজিও ।

জানা যায়, উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের নিমাইমারী গ্রামে দুটি রুম সাত মাস আগে ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করেন কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার, রেজাউল করিম রেজা,ফিল্ড অফিসার। সাজু আহমেদ একাউন্টস অফিসার । মোঃ রনি আহমেদ ম্যানেজার। ও কামরুজ্জামান বন্ধন অডিট ম্যানেজার হিসেবে অফিসটি পরিচালনা করেন।তারা অফিসে বিভিন্ন গ্রাম থেকে ১৩ জন কর্মী নিয়োগ দিয়েছিলেন।

যাদের মাধ্যমে থ্রি কোয়ার্টার ঘর ও শিশু ভাতার কার্ডের নাম দেওয়ার কথা বলে। চর আমখাওয়া ও ডাংধরা ইউনিয়ন এর বিভিন্ন গ্রামের সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখন লাপাত্তা ভুয়া এনজিওটি। এতে দিশেহারা ভুক্তভোগীরা।ভুক্তভোগী মালা খাতুন বলেন, আমি ভিক্ষা করে খাই সেই অফিসের কর্মী পারভীন এর কথা শুনে অনেক কষ্ট করে ৪৫ হাজার টাকা দিয়েছি।

কিন্তু এখন শুনি অফিসের লোক নাকি পালাইয়া গেছেগা।এখন আমি কি করবো, আমার সব শেষ সব নিয়া গেলো।অন্য ভুক্তভোগী আলামিন বলেন,স্থানীয় মোঃ বকতিয়ার (বক্তো মেম্বার) এর কথা শুনে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছি পনেরো হাত ঘরে জন্য।আমায় শুধু খাম দিছে,এখন শুনি কোম্পানি নাকি পলাইয়া গেছেগা।

ওই অফিসে কর্মরত আসমাউল হুসনা নামে এক কর্মী বলেন, বিভিন্ন গ্রাম থেকে আমাদের ১৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকার মধ্যেই আমাদের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছিল। আমাদের মূল কাজ ছিল, গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষকে ঘর ও শিশু ভাতার কার্ডের নাম দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে অফিসে জমা দেওয়া।

বিশ হাত ঘরের জন্য অফিস নির্ধারিত ৪০ হাজার টাকা ও শিশু ভাতার জন্য ৭৭৫ টাকা করে অফিসে জমা দিয়েছি আমরা।।তিনি আরো বলেন,অফিসের নির্ধারিত টাকার চেয়েও অনেক কর্মীরা মানুষের কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়েছে।।

কয়েকটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়,এই অফিসের প্রায় সব কাজ অলিখিতভাবে পরিচালনা করতো মোঃ বকতিয়ার(বক্তো মেম্বার)।এই বিষয়ে উনার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার দুই মেয়ে এই অফিসের কর্মী হিসেবে কাজ করতো। ডাংধরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান ও চর আমখাওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া, এই অফিসের একটি কাগজে সাইন দিয়েছে।

যেটা আমরা দেখে বিষয়টিকে আরো সত্যি ভেবে মানুষের কাছ থেকে টাকা এনে অফিসে জমা দিয়েছি। তিনি আরো বলেন চেয়ারম্যানরা যেহেতু বিষয়টি জানে তাই কোন সমস্যা হবে না এটাই ভেবেছি আমরা।।এই বিষয়ে ডাংধরা ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান মোঃ আজিজুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে আমার কাছে কিছু মানুষ অভিযোগ করেন এই অফিসের নামে ঘর দেওয়ার নামে ৪৫-৫০ হাজার টাকা নিচ্ছে।

আমি তাদের ডেকেছিলাম তাদের কাজ সঠিক আছে কিনা জানার জন্য। পরে আমি ও চর আমখাওয়া ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া মিলে তাদের কাছে জানতে পারি ২০ হাত ঘরের জন্য ৪০ হাজার টাকা অফিস নিয়ে থাকে।তখন আমরা ১৫ হাত ঘরের জন্য একটা আবেদন দেই।কিন্তু এখন শুনতেছি সেই কোম্পানি পালিয়ে গিয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন,এই এনজিওর ব্যাপারে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।