নবীনগরে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করায় শিক্ষকদের মানববন্ধন

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৫:১১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪

ফরিদ আহমেদ।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রজ্ঞাপনকে উপেক্ষা করে কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদাউসুর রহমানকে লাঞ্ছিত করে জোর করে পদত্যাগ করাতে বাধ্য করার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) নবীনগর প্রেসক্লাব চত্বরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে শিক্ষকদের এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে বল প্রয়োগ পদত্যাগ ও বিদ্যালয়ে আসতে বাধা সৃষ্টির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে শিক্ষা সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে তাদের কর্মস্থলে ফিরে আসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং উস্কানিদাতাদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানানো হয়। এ সকল ঘটনা চলমান থাকলে, সুষ্ঠ বিচার নিশ্চিত না হলে, শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে যাওযার ঘোষণা দেয়।

কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদাউসুর রহমান বলেন, ব্যক্তিগত আক্রোশে গত রবিবার পহেলা সেপ্টেম্বর স্থানীয় বিএনপির সমর্থক দুই প্রভাবশালী নূরে আলম ও জাহাঙ্গীর আলম এর নেতৃত্বে কিছু বাহিরাগত অফিসে ঢুকে তাকে জিম্মি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করায়। ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে ও স্কুলের জায়গার দোকান সংক্রান্ত বিষয়ে ওই দুই ব্যক্তি তাদের স্বার্থ হাসিল করতে না পারায় আমার বিরুদ্ধে নানাহ্ অভিযোগ ছড়িয়ে এ ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা “অন্যায় ভাবে জোর পদত্যাগ এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সদস্য সচিব নবীনগর ইচ্ছাময়ী পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ কাওছার বেগম এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অন্যায় ভাবে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করে জোরপুর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা কাম্য নয়। কোন শিক্ষকের অন্যায় থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাতে পারে।বক্তব্য রাখেন, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি মোর্শেদুল ইসলাম লিটন, প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক আমির ফয়সাল, প্রধান শিক্ষক আহাম্মদ আলী, অধ্যক্ষ গোলাম সাদেক, প্রধান শিক্ষক হোসাইন কবির, প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, প্রধান শিক্ষক শাহজাহান কবির, অধ্যক্ষ আব্দুল কাদির, সিনিয়র শিক্ষক পার্থ পাল, সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ ইমতিয়াজ বেগ ইমন প্রমুখ।

এ বিষয়ে অভিযুুক্ত নূরে আলম ও জাহাঙ্গীর আলম তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, এ ঘটনার সাথে আমরা কোনভাবেই জড়িত নই, ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটিকে আওয়ামীদলীয়করণ ও নানাহ্ দুর্নীতির কারণে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র জনতা তাকে এ পদ থেকে সরে যেতে বলেন। তাকে কোন প্রকার চাপ ও জোর করা হয়নি তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করেন।
এ ব্যাপারে ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামিম বলেন, সারা দেশের ন্যায় নবীনগরেও এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, এতে শিক্ষকদের মাঝে আতংক ছড়িয়েছে। জোর করে কিছু করা যাবে না সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। তারা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনাসহ নিরাপক্তা নিশ্চিতের দাবী জানায়। স্মারকলিপিটি মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।