মৌলভীবাজারে খেলাঘরের ৭৩তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অভিভাবক ও সাংস্কৃতিক সমাবেশ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৪:৪০ অপরাহ্ণ, মে ৩, ২০২৫
এস.এম. আবু রায়হান।। 
“লাল-সবুজের বাংলাদেশে শিশুর জীবন উঠুক হেসে” এই স্লোগান নিয়ে বৃহস্পতিবার (২ মে) মৌলভীবাজারে জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘর-এর ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করা হয়েছে।
পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলার সুপরিচিত সংগঠন উত্তরণ খেলাঘর আসর, মৌলভীবাজার।
বিকাল ৪টা থেকে শুরু হওয়া এই আয়োজনে মিলনায়তনে জমে ওঠে শিশুকিশোর, অভিভাবক, শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি। শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। এরপর উত্তরণ খেলাঘরের নেতৃবৃন্দ পতাকা উত্তোলন করেন এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, অভিভাবক ও সংস্কৃতিকর্মীরা অংশ নেন। বক্তারা বলেন, “খেলাঘর কেবল একটি বিনোদনমূলক সংগঠন নয়, এটি একটি জীবনঘনিষ্ঠ আন্দোলন। এখানে শিশুরা শিখে কিভাবে একজন সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও মানবিক মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠতে হয়।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এক শিক্ষাবিদ বলেন, “আজকের শিশুরাই আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক, কবি, বিজ্ঞানী ও সংস্কৃতিকর্মী। তাদের মানসিক বিকাশ ও মূল্যবোধ গঠনে খেলাঘরের মতো সংগঠন বড় ভূমিকা রাখছে।”
আলোচনা শেষে শুরু হয় বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শিশু-কিশোরদের পরিবেশনায় ছিল দেশাত্মবোধক গান, কবিতা আবৃত্তি, ছড়া, নৃত্য ও নাটক। বিশেষভাবে প্রশংসিত হয় “আমরা করব জয়” গানের কোরাস পরিবেশনা।
একটি নাটকে তুলে ধরা হয় শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা, যা দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
অনুষ্ঠানে অভিভাবকরাও সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। একজন মা বলেন, “আমার মেয়ে আজ জীবনে প্রথম মঞ্চে উঠে কবিতা বলেছে। আমি নার্ভাস ছিলাম, কিন্তু সে আত্মবিশ্বাসী ছিল। এই অভিজ্ঞতা ওর জীবনের বড় প্রেরণা হয়ে থাকবে।”
অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারী শিশুদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। উত্তরণ খেলাঘর আসরের সমন্বয়কারী বলেন, “খেলাঘরকে আমরা কেবল একটি অনুষ্ঠানভিত্তিক সংগঠন নয়, একটি জীবনচর্চার মঞ্চ হিসেবে দেখি। শিশুদের সৃজনশীলতা ও মূল্যবোধ বিকাশই আমাদের মূল লক্ষ্য।” তিনি জানান, সামনে আরও আয়োজন থাকবে যেমন সাহিত্য পাঠচক্র, গণিত উৎসব, বিজ্ঞানচর্চা ও শিশু-অধিকার ক্যাম্পেইন।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি সম্মিলিত কণ্ঠে গেয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান মৌলভীবাজারে খেলাঘরের এই আয়োজনে প্রমাণিত হয় বাংলার প্রতিটি কোণায় ছড়িয়ে আছে সৃজনশীল শিশুরা, যারা ভালোবাসা, মানবতা ও সংস্কৃতির পতাকা হাতে আগামীর বাংলাদেশ গড়বে।