মিঠাপুকুরে এক সপ্তাহ ধরে দুটি পরিবারের বাড়ী যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে আপন মামা ও তার ছেলেরা

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩:৪৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০২৫
মো: সজল সরকার।৷
রংপুরের মিঠাপুকুরে আপন মামা ও মামাতো ভাইয়েরা এক সপ্তাহ ধরে বাঁশের বেড়া দিয়ে দুটি পরিবারের বাড়ী যাতায়াতের রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে রেখেছে।বাড়িতে ঢোকার কোনো রাস্তা নেই। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভুক্তভোগী পরিবার দুটি র সদস্যরা। যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ থাকায় তারা মানুষের জমির আইল এবং জঙ্গল দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলার ১৩ নং গোপালপুর ইউনিয়নের সাদ-কৃষ্ণপুর এজরা পাড়ায় দুটি পরিবারের বাড়ি যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ। বড় বড় বাঁশের খুটি ও  বেড়া দিয়ে রাস্তাটি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।ঐ বাঁশের বেড়া যাতে ভেঙে ফেলা না হয় সেজন্য কিছু লোকজন পাহারা দিচ্ছে। এসময় জঙ্গলের ভিতর থেকে শিশু সহ ৭/৮ জন পুরুষ মহিলা বের হয়ে এসে জানালেন, সম্পর্কে তাদের মামাতো ভাইয়েরা তাদের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। জমি নিয়ে বিরোধের কারনে প্রায়ই তারা রাস্তা বন্ধ করে দেন। স্থানীয়রা জানান, আব্দুল আজিজ এজরা পাড়ায় মৃত নছির উদ্দিনের মেয়েকে বিয়ে করে ঘরজামাই ছিলেন। ঘরজামাই থাকাকালে আব্দুল আজিজ তার স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে সেখানেই বসবাস করতেন। নছির উদ্দিনের মৃত্যুর পর মৃত আব্দুল আজিজের পরিবারকে তাড়াতে ব্যস্ত হয়ে উঠেন সাহেব আলী,আইয়ুব মিয়া, সোহান মিয়া, রহমত আলী,বোরহান সহ চাঁন মিয়া। নছির উদ্দিনের মেয়ের ভাগের জমি তার সন্তানদের না দিয়ে ভাইয়েরা ভাগ্নেদের বাড়িঘর উচ্ছেদ করেন। পরে স্থানীয়দের তোপের মুখে কবরস্থানের পাশে ভাগ্নেদের জায়গা দেন এবং সবার পক্ষ থেকে ৩ শতাংশ জমি তাদের যাতায়াতের জন্য দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী মোন্তেজার বলেন, নানার বাড়িতে আমাদের বাড়ি ছিল। পরে মামা এবং মামাতো ভাইয়েরা আমাদের উচ্ছেদ করে। নতুন বাড়ি করতে বাঁশ বাগানের ভিতর দিয়ে রাস্তা দেয়। ১০/১২ বছর আগে আমরা এখানে বাড়ি করি। কিছুদিন আগে তাদের দেয়া একটি মামলায় আমরা ১২ শতাংশ জমি ভাগ পাই। এখন ওই জমিটা লিখে নিতে আমাদের চাপ দিচ্ছে এবং সেই আক্রোশে রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আমার ভাই সহ আমি চরম বিপাকে পড়েছি। বাচ্চারা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেনা।
ভুক্তভোগী আজাহার বলেন,আমরা দুই ভাই কৃষি কাজ করি। কোনো রকমে সংসার চলে। রাস্তার জমিটিও আমাদের নামে রেকর্ড আছে। তবু মামা এবং মামাতো ভাইয়েরা আমাদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছে। যেহেতু এখানে আমাদের আপন কেউ নেই, তাই তারা হত্যার হুমকি দিচ্ছে । স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম মিয়া বলেন, এই রাস্তা দিয়ে এঁরা ১০ বছর থেকে হাঁটাচলা করে। সাহেব গং  বারবার অসহায় এই লোকগুলোকে হেনস্তা করছে। যাতে ভয়ে এরা গ্রাম ছাড়া হয়। অভিযুক্ত সাহেব মেম্বার বলেন, সমস্যা সমাধান হবে। তবে ওদের শিক্ষা দিতে হবে। আমরা বাড়ি করে দিলাম,আমাদের সঙ্গেই ওরা বেয়াদবি করছে। বেয়াদবির শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এমদাদ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘেরা সরানোর কথা বলেছি কিন্তু তারা আমার কথা শোনেন নাই। তিনি বলেন, রাস্তা বন্ধ করে প্রতিপক্ষ কাজটা মোটেও ঠিক করেনি। এটা অমানবিক কাজ। ভুক্তভোগীকে গ্রাম্য আদালত/বিজ্ঞ আদালতের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
স্থানীয় ইউপির সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হাছিনা বেগম এবং চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ বলেন, ঘটনা জানি না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো।