মেহেরপুর গাংনীতে সন্তান প্রসব করিয়ে বাচ্চা নিয়ে গেল জ্বিনেরা। দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৩:৪৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪ মাহাবুল ।।লোকমুখে শোনা যায় জ্বিন নিয়ে নানা ঘটনা। কখনো শোনা যায় জ্বিনে মানুষ তুলে নিয়ে গেছে, কাউকে জ্বিনে ধরেছে আবার জ্বিনে গাছের ডাল ভেঙ্গে চলে গেছে এমন অনেক ধরনের ঘটনার গল্প শোনা যায় লোকমুখে। তবে এবার ভিন্ন ধর্মী এক অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নওদা মটমুড়া গ্রামে। এক গর্ভধারিনী মায়ের বাচ্চা প্রসব করিয়ে বাচ্চা নিয়ে গেছে জ্বিনে এমনই অভিযোগ করেছে গর্ভধারিনী মা আজমিরা। নয় মাসের গর্ভধারিনী মা আজমিরা খাতুন সিজারিয়ানের জন্য হাসপাতালে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঠিক সেই মুহূর্তে ৫ জন জ্বিন তার রুমে এসে বাচ্চা প্রসব করে নবজাতককে নিয়ে চলে যায়। এসময় বাচ্চার সাথে সাথে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালের রিপোর্ট গুলিও নিয়ে যায় জ্বিনেরা। ঘরের দেওয়ালে দুই হাতের রক্তমাখা ছাপ, হাত ও পায়ে জ্বিনের নখের আচড়ানো দাগ আজমিরা খাতুনের শরীরে। নবজাতক বাচ্চা হারিয়ে দিশেহারা তিনি। ঘরের মধ্যে দুটি সাপ মারা তার জীবনে কাল হয়ে দাড়িয়েছে। আজমিরা নয় মাস আগে গর্ভবতী হওয়ার পর, পেটের মধ্যে চার মাসের বাচ্চা থাকা অবস্থায় তিনি ও তার ভাই ঘরে থাকা ২টি সাপ পিটিয়ে মারে। এর কছুদিন পর একটি জ্বীন এসে আজমিরার গলা চেপে ধরে এবং বলে তুই আমার বাচ্চা মেরেছিস আমি তোর বাচ্চা নিয়ে যাব। স্থানীয়রা জানান, আজমিরা খাতুন জেলার গাংনী উপজেলার নওদা মটমুড়া গ্রামের উত্তর পাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে এবং উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া মোল্লা পাড়া গ্রামের ছহির উদ্দিনের ছেলে সৌদি প্রবাসী মোকাদ্দেসের স্ত্রী। আমরা ঘটনা শুনে দেখতে এসেছি। তবে কিভাবে কি হয়েছে তা আমরা বিস্তারিত জানিনা। শুধু শুনছি সন্তান ও কাগজপত্র সব নিয়ে গেছে জ্বিনে। আজমিরা খাতুন জানান, গতকাল রোববার সকাল ১১ দিকে সিজারিয়ানের জন্য হাসপাতালে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক এমন সময় জ্বীনেরা প্রবেশ করে আমার ঘরে। ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে বাচ্চা প্রসব করায় পাঁচ জন জ্বিন। আমি তাদের সাথে জোর করতে গেলে তারা আমার উপরে শারীরিক নির্যাতন চালায়।আমি চিৎকার করলেও বাহিরের কেউ শুনতে পায়না। আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বাচ্চা প্রসব করানোর পর বাচ্চা ও হাসপাতালের রিপোর্টগুলি নিয়ে যায় জ্বিনেরা। দীর্ঘক্ষণ ঘরে থাকাই আমার মা ঘরের দরজা ধাক্কাধাক্কি করে কোন সাড়া পায় না। এরপর ঘরের দরজা খুলে চলে যায় জ্বিনেরা। পরে ঘরের মধ্যে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে আমার মা।আজমিরা খাতুনের বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমার মেয়ে ও ছেলে দুজন মিলে গর্ভবতী অবস্থায় দুটি সাপ মেরেছিল সে কারণেই জ্বিনেরা ছেলেকে নিয়ে গেছে। মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাজহারুল ইসলাম জানান, আজমিরা খাতুন গর্ভবতী অবস্থায় দুটি সাপ মেরেছিল সে কারণেই জ্বিনেরা ছেলেকে নিয়ে গেছে এমন ঘটনা শুনতে পেয়ে আমরা সেখানে যায়।সেখানে ইউএনও মহোদয় ও ডাক্তার এসেছিল পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে চূড়ান্ত বিষয়টি জানা যাবে।তাছাড়া তার শরীরে বিভিন্ন আঘাদের চিহ্ন রয়েছে। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাসুদুর রহমান জানান, আমরা ঘটনা শুনতে পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। আমাদের এক্সপেরিয়েন্স অনুযায়ী পরীক্ষা করে দেখলাম তিনি গর্ভবতী ছিলেন না। তারপরও আমরা ঘটনার সত্যতা জানার জন্য রোগীকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাব। তিনি আরও জানান, আমরা রোগীর বাবার পরিবার ও শ্বশুরের পরিবারের সাথে কথা বলে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি।আমরা তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাছাড়া বৈজ্ঞানিকভাবে এর কোন সত্যতা নেই। গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান, আমরা ঘটনা শুনেই দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলেছি তাদের পরিবারের সাথেও কথা বলেছি। তবে জ্বিনেরা সন্ধান প্রসব করিয়ে সন্তান নিয়ে গেছে এমন কোন তথ্য বা সত্যতা পাইনি।তাছাড়া সে গর্ভবতী ছিল এমন কোন কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেনি। তারপরও আমাদের মেডিকেল অফিসার এসেছেন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমেই মূল ঘটনা জানা যাবে। SHARES সারা বাংলা বিষয়: