কেন্দুয়ায় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা, ভর্তি ও নানা অনিয়মের ফিরিস্তি

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউটোরিয়াল/পরীক্ষা কেন্দ্র কেন্দুয়া সরকারি কলেজে চলছে যথেচ্ছাভাবে ডিগ্রি চতুর্থ সেমিস্টার পরীক্ষা, ভর্তি কার্যক্রম ও নানা অনিয়মের ফিরিস্তি । নিয়ম বহির্ভূতভাবে পরীক্ষা হলের দায়িত্ব পালন করছেন স্বয়ং পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সদস্যরা, ভর্তির নির্ধারিত ফি’র চেয়ে ২ হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা করে বেশি নিচ্ছেন অনেকের কাছ থেকে এবং পরীক্ষার্থীদেরকে টাকার বিনিময়ে অসদুপায় অবলম্বন করে খোলা মেলা প্রশ্নোত্তর লিখার সুযোগ করে দিচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক -এমন নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন সূত্রে । তাছাড়া বার্ষিক ক্লাস/টিউটর ফি পর্যন্ত পায় না টিউটররা, অনেক টিউটর জানেন না তারা টিউটর হিসেবে আছেন কিনা- এমন তথ্যও জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষক ।শুক্রবার (৩১ জানুয়ারী) সকাল ১০টা ২০মিনিটে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান-৩ : রাজনৈতিক সংগঠন বিষয়ে অসদুপায় অবলম্বন করে খোলা মেলা প্রশ্নোত্তর লিখছে পরীক্ষার্থীরা এবং পরীক্ষা হলে ডিউটি পালন করছেন পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সদস্য পলাশ রঞ্জন কর । পলাশ রঞ্জন করের কাছে বিভিন্ন বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী ও প্রভাষক মুহাম্মদ তৌহিদ আহমেদ ভূঁইয়া বলতে পারবেন সবকিছু । মুহাম্মদ তৌহিদ আহমেদ ভূঁইয়ার সাথে কথা হলে উল্লেখিত কোনটিরই সদুত্তর দিতে পারেন নি । তিনি ডিগ্রি   পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সদস্য পলাশ রঞ্জন করের পরীক্ষা হলে ডিউটি প্রসঙ্গে বলেন, ফারুক আহমেদ তালুকদারকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম । তিনি আসতে না পারায় পলাশ রঞ্জন করকে দায়িত্ব দিয়েছি ।তৎক্ষনাৎ ফারুক আহমেদ তালুকদারকে মুঠোফোনে বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে অস্বীকার করে বলেন, আজ আমার ডিউটি ছিলো না । তাই কিশোরগঞ্জ আছি । এরপর বিকাল ২টার পরীক্ষায় কাকে ডিউটি দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে, মুহাম্মদ তৌহিদ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, পলাশ রঞ্জন করকে । পলাশ রঞ্জন কর ছাড়া আর কেউ কি নেই -জিজ্ঞেস করলে, শুক্রবার অনেকে ডিউটি করতে চায় না বলে দায় এড়াতে চেষ্টা করেন তিনি । মুহাম্মদ তৌহিদ আহমেদ ভূঁইয়ার কাছে পলাশ রঞ্জন কর ছাড়া অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় এর আগে আর কাকে কাকে পরীক্ষা হলে ডিউটি দিয়েছিলেন জানতে চাইলে তিনি আজিজুল হক বুলবুলের নাম উল্লেখ করেন । অথচ আজিজুল হক বুলবুলের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এ পর্যন্ত কোন ডিউটি পাই নি । তিনি আরো বলেন, আমি জানিই না আমাকে টিউটর হিসেবে রাখা হয়েছে কিনা । আমার কাছে কোন ডকুমেন্টস বা নিয়োগপত্র নেই । পরীক্ষা হলে অসদুপায় প্রসঙ্গে মুহাম্মদ তৌহিদ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, এটা সবাই জানে । ইউএনও মহোদয়ও জানেন । তৎক্ষনাৎ, আপনার কাছ থেকে এমন বক্তব্য আশা করি নি বলে বাধা দিলে, তিনি বলেন, এটা কথার কথা বললাম । তাছাড়া তিনি, পঞ্চম ও ষষ্ঠ সেমিস্টার এক সাথে ভর্তির ক্ষেত্রে সাড়ে ৬ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকারোক্তি দেন ।  এ বিষয়ে সবকিছু অবহিত করে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মালেকের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, অনেক কিছুই আমার জানা নেই । মুহাম্মদ তৌহিদ আহমেদ ভূঁইয়া ভালো বলতে পারবেন । এর দায় অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর উপর বর্তায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি চলতি দায়িত্বে আছি । তাই এ ক্ষেত্রে আমার কিছুটা গ্যাপ রয়েছে ।