রংপুরের মিঠাপুকুরে নর্থ বেঙ্গল জুট মিলস দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ২:২৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫ মো:সজল সরকার।। রংপুরের মিঠাপুকুরে নর্থ বেঙ্গল জুট মিলস প্রাইভেট লিমিটেডের মালিকানা ও দখল সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মিলটির বৈধ এমডি মাহবুবুর রহমান দখল-স্বত্ব পুনরুদ্ধারের দাবি জানান এবং অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে মিল রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। মানববন্ধন ও অভিযোগ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। চাকরিচ্যুত শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী এতে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে মাহবুবুর রহমান দাবি করেন, তিনি নর্থ বেঙ্গল জুট মিলের বৈধ এমডি। কিন্তু আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি আদালতে মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও অবৈধভাবে মিলটি দখল করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, সাবেক পরিচালক ওয়েহেদ চৌধুরী, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলরাম শাহা এবং প্রস্তাবিত ক্রেতা মো. নূরুল ইসলাম ডাবলু জনতা ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার সহায়তায় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দখল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। তিনি আরও বলেন, “ব্যাংকের স্যাংশন লেটারে ভুল রয়েছে, যেখানে এককালীন টাকা পরিশোধের কথা বলা হয়েছে, যা ‘one way exit’ নীতির মধ্যে পড়ে। এই অসঙ্গতির সুযোগ নিয়ে তৎকালীন ক্ষমতাবানরা অবৈধভাবে মিলটি দখল করেছেন।” শ্রমিকদের দুর্দশা জুট মিলের শ্রমিক নেতা ও সুপারভাইজার নাহিদ প্রধান বলেন, “আমরা শতাধিক শ্রমিক এই মিলের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। যখন কাশেম-ডাবলু গং জুট মিল দখল করে নেয়, তখন আমাদের ছাঁটাই করা হয়। এখন আমরা বেকার হয়ে পরিবার নিয়ে চরম সংকটে আছি। আমাদের দাবি, মিলটি আগের পরিচালকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।” বিরোধের উৎস নর্থ বেঙ্গল জুট মিলস লিমিটেড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চলছে। মিলটির মালিকানা ও দখল নিয়ে একাধিক পক্ষের দাবি থাকায় বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। তবে, এক পক্ষ অভিযোগ করছে, প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে এবং কিছু ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজশে এটি বেআইনিভাবে অন্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মানববন্ধনের গুরুত্ব এটি শুধু একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকানা বিরোধ নয়, বরং এর সঙ্গে শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারীর জীবন-জীবিকা জড়িত। যদি অবৈধ দখলের অভিযোগ সত্য হয়, তাহলে এটি দুর্নীতির একটি ভয়াবহ দৃষ্টান্ত। অন্যদিকে, যদি মালিকানা হস্তান্তর বৈধভাবে হয়ে থাকে, তাহলে মাহবুবুর রহমানের পক্ষ থেকে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রশাসনের করণীয় ১. সুষ্ঠু তদন্ত: অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের উচিত নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা। 2. শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা: মালিকানা নিয়ে যে-ই বিরোধী থাকুক, শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও পুনরায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা জরুরি। 3. আইনি পদক্ষেপ: আদালতের চূড়ান্ত রায়ের ভিত্তিতে মিলের বৈধ মালিকানা নির্ধারণ করে জোরপূর্বক দখলের ঘটনা রোধ করতে হবে। পর্যবেক্ষণ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, যা শুধু একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং আর্থিক দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব ও শ্রমিকদের জীবন-জীবিকার প্রশ্নের সঙ্গে জড়িত। প্রশাসন যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এটি ভবিষ্যতে আরও বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান দখলের দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যদি সত্য উদঘাটন হয়, তবে এটি দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাশেম-ডাবলু গং-এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়, ফলে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। SHARES সারা বাংলা বিষয়: