রাজশাহীর পুঠিয়ায় চলছে একের পর এক অনিয়ম-লুটপাট

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১:০৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫
এস.এম. মাহবুবুল ইসলাম লিটন ।। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে নিত্য নতুন পুকুর খননের মাটি বিক্রয় নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ। ৭ই ফেব্রুয়ারী ২০২৫ রোজ শুক্রবার পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পুকুর সংস্কার করার নামে, তিন ফসলের জমিতে চলছে পুকুর খননের কাজ। এই পুকুর খননের মাটি বিভিন্ন ইট ভাটাতে অর্থের বিনিময়ে বিক্রয় করা হচ্ছে। মাটি বিক্রয়ের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে চলে সংঘর্ষ। স্বঘোষিত পুঠিয়া বিএনপির বাপ পুঠিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আল মামুন খানের দুই গ্রুপে টাকা ভাগাভাগি নিয়ে এক পর্যায়ে বড় ধরনের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দীপ গ্রুপ ও মিজান গ্রুপ। স্বঘোষিত বিএনপির বাপ আল মামুন খানের পার্সোনাল পি.এস. বাবু, কোনও এক মাধ্যম দিয়ে জানতে পারে যে, মিজান গ্রুপ ও দীপ গ্রুপ প্রতিদিন যে টাকা চাঁদা আদায় করে, তা দুই গ্রুপের মধ্যে ভাগ-বন্টন হয়ে যায়। এই কথা জানার পরে, ৬ই ফেব্রুয়ারী ২০২৫ রোজ বৃহস্পতিবার দুইটা ড্রাম ট্রাক মাটি সহ আটক করে মামুনের পার্সোনাল পিএস বাবু, ১৮ হাজার টাকায় বিক্রয় করে দেন। মিজান গ্রুপ এ কথা জানার পরে, তার লোকজন নিয়ে এসে, বাবুকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করার পরে, মারতে মারতে আফজালের বাস কাউন্টারের ভিতরে নিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে দিপ গ্রুপ জানতে পারলে, বাবুকে উদ্ধার করার জন্য আফজালের বাসটিকিট কাউন্টারে চলে আসেন। তখন শুরু হয়ে যায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ। বলে রাখা ভালো যে, পুঠিয়ায় স্বঘোষিত বিএনপির বাপ আল মামুন খানের জন্ম দেওয়া গ্রুপগুলো কাঙ্গাল টোকাই গ্রুপ নামে পরিচিত। পুঠিয়ার প্রাণকেন্দ্রে দুই কাঙ্গাল টোকাই গ্রুপের এমন ঘটনায় হতভাগ হয়ে দাঁড়িয়ে শতশত জনতা দেখেন এবং তিব্র নিন্দা প্রকাশ করেন। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বড় শরিক দল বিএনপির এমন কর্মকাণ্ডে সাধারণ জনগণ হতাশা প্রকাশ করেন। তাৎক্ষণিক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের স্বঘোষিত বাপ মামুন খান বিষয়টি জানতে পারলে, তাদেরকে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে বসার পরিবেশ করতে বলেন। কিন্তু এরই মধ্যে পরিস্থিতি, স্বঘোষিত বাপ মামুনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুঠিয়া উপজেলাতে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর আদর্শকে ধারণ করেন এমন সকল নেতাকর্মী রয়েছেন, তারা দৈনিক স্বাধীন সংবাদের গণমাধ্যম কর্মীর কাছে দু:খ প্রকাশ করে বলেন যে, আমরা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ দলের রাজনীতি করি। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের সাথে প্রকৃত বিএনপি জড়িত নয়। আমরা এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের তিব্র নিন্দা জানায়। ৫ই আগষ্টের আওয়ামী সরকার পতনের পরে বহু সংখ্যক আওয়ামী লীগের দোসর, বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি, অবৈধ পুকুর খনন, ও.এম.এস ডিলারশীপ দখল, অবৈধ উপায়ে জলমহাল দখল সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে।  এতে আমাদের প্রকৃতপক্ষে যারা বিএনপির আদর্শ ধারণ করেন, তাদের সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে বিধায়, এমন ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ড যারা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিতে, বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের কাছে আকুল আবেদন জানাতে থাকে। পুঠিয়া  উপজেলার নেতাকর্মী এবং সাধারণ ভোটাররা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন যে, অনেক পেপার-পত্রিকা, অনলাইন নিউজ, ইউটিউব চ্যানেলে এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে একাধিক নিউজ প্রকাশ হচ্ছে, এগুলো কি জেলা, বিভাগীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা দেখতে পাচ্ছেন না । এই সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, লুটেরা, চোরদের অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? সাধারণ ভোটার, সাধারণ নেতাকর্মী এবং ত্যাগী নেতাকর্মীরা সন্ত্রাসীদের ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না। দৈনিক স্বাধীন সংবাদের গণমাধ্যম উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের নিকট তাদের মনের কথা প্রকাশ করেন। তারা বলেন যে, আপনাদের মাধ্যমে আমরা উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের জানাতে চাই যে, এই সন্ত্রাসী গডফাদার স্বঘোষিত বিএনপির বাপ আল মামুন খানের হুকুমে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পর্যায়ের তৃণমূল বিএনপির নেতা-কর্মীদের নির্যাতন করা হয়। আমরা কোন ভাবেই এটা মেনে নিতে পারছি না। আওয়ামীলীগের দোসর কাঙ্গাল বাহিনী আজ বড় বিএনপির নেতাকর্মী হয়ে গেছেন। আর আমরা কালো চাদরের আড়ালে রয়ে গেছি। তাই আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদের নিকট আকুল আবেদন জানায় যে, এই সন্ত্রাসী বাহিনীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী। পুঠিয়া উপজেলা বিএনপিতে যে সকল ত্যাগী নির্যাতিত নেতাকর্মী আছেন, তারা আজ মহা বেকায়দায় আছেন। বিএনপির একজন বিশিষ্ট নেতা বলেন, এভাবে চলতে থাকলে এক সময় পুঠিয়া দূর্গাপুরে তৃতীয় শক্তি উদিত হবে। এখন থেকে আগাছাগুলোকে ছেটে, না ফেলা হইলে বিএনপি’র ভরাডুবি হইতে পারে। পুঠিয়া-দূর্গাপুর রাজশাহী ৫ আসন, তৃতীয় শক্তির হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এবং এই নেতা বলেন, আমাদের সম্মানিত কেন্দ্রীয় পর্যায়ে যে নেতাগুলো রয়েছেন, তাদের কাছে জোর আবেদন জানাচ্ছি যে, যত তাড়াতাড়ি পুঠিয়া দুর্গাপুরে সন্ত্রাসী বাহিনীগুলোকে নির্মূল করা যায়, ততই বিএনপির জন্য মঙ্গল। এবং এই ত্যাগী নেতা আরোও বলেন যে, ৫ই আগস্টের পরে স্বৈরাচার সরকার পতনের পরে, নতুন নতুন বিএনপির বাপ বলে কিছু নেতা দাবি করছেন, তারা প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগের দোসর। এখনও পর্যন্ত আওয়ামীলীগের নেতাদের সাথে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। এমনকি পার্টনারশিপে বড় বড় ব্যবসাতেও জড়িত রয়েছেন। সেগুলো গোপন সূত্রে খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্রিয় পর্যায়ের নেতাদের কাছে আবেদন করেছেন। বিএনপির বাপ বলে যে নেতা দাবি করেন সে প্রকৃতপক্ষে বিএনপি’র কর্মীও হওয়ার জন্য অযোগ্য। কয়েকদিন আগে এক জাতীয় পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে, এই সন্ত্রাসী বাহিনীর গডফাদার খান মামুন অনেক অশ্লীল ভাষায় কথাবার্তা বলেছিলেন এবং বিএনপির বাপ বলে দাবি করেছিলেন। সেগুলো আমি অডিও রেকর্ডে শুনেছি এবং নিউজেও দেখেছি, তারপরও কেন কেন্দ্রীয় নেতারা ব্যবস্থা নেন না এই সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আমি বুঝতে পারছি না।  এই কথাগুলো বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে এবং বিভিন্ন পত্রিকাতে দেখা গিয়েছে, আমি একজন বিএনপি’র ত্যাগী নেতা হয়ে জিয়াউর রহমানের আদর্শ বুকে রেখে বলছি যে, এই ধরনের অশ্লীল ভাষা ব্যাবহারকারীর বিরুদ্ধে কঠোর কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হোক।  এবং পুঠিয়া  উপজেলা বিএনপির,  এই ত্যাগী নেতা আরও বলেন যে, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে আমার কাছে বড় অভিযোগ এসেছিল পুঠিয়া উপজেলা শীলমারিয়া ইউনিয়নে ৩৫ বিঘা পুকুর খনন করতেছিল এই খান মামুনের নেতৃত্বে হান্নান বাহিনীর এক গ্রুপ, সেখানে আমাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়, এবং  পুঠিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ,  গোপন  সংবাদের ভিত্তিতে গিয়ে পুকুর খননের কাজ বন্ধ করে দিয়ে আসেন। এবং গোপন সূত্রে জানা যায় এই খান মামুন, পুকুর খননকারীর নিকট হইতে ছয় লক্ষ টাকা চাঁদা নিয়েছিলেন সেটারও প্রমাণ রয়েছে। এই সন্ত্রাসী বাহিনীদের জন্য সাধারণ নেতা কর্মীরা জনগণের কাছে যেতে পারছেন না। বিভিন্ন প্রকার কথাবার্তা বলছেন জনগণ। আজ যারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করছে, চাঁদাবাজি জবরদখল টেন্ডার বাজি হাটবাজারের ইজারা দখল করছে, তারা প্রকৃতপক্ষে বিএনপি’র কোন প্রকার নেতাকর্মী হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। তাই অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য  কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে বিশেষভাবে  অনুরোধ জানায়, পুঠিয়া  উপজেলা বিএনপি’র নির্যাতিত নিপীড়িত নেতাকর্মীরা।  এখন পর্যন্ত স্বাধীনভাবে কাজকর্ম করতে পারছে না এবং সাধারণ জনগণের কাছে যেতে পারছেন না। তারা সুখ দুঃখের কথাগুলো শুনে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারছেন না। কারণ হিসেবে তারা বলেন, সাধারণ জনগণ সন্ত্রাসীদের এইসব কর্মকান্ডগুলো আমাদের কাছে তুলে ধরছে, এবং আমরা তখন নির্বাক হয়ে যাচ্ছি, দলীয় কাজ করতে গিয়ে লজ্জায় পরছি। বিএনপির আরেক নেতা বলেন, আমাদের দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা সাধারণ জনগণের পাশে গিয়ে দাঁড়াবো এবং তাদের সুখ-দুঃখে পাশে থাকবো। বিএনপি’র পৌর ওই নেতা বলেন, এক মন দুধ নষ্ট হওয়ার জন্য এক ফোঁটা চানাই যথেষ্ট। সেই রকম হয়ে গেছে পুঠিয়া উপজেলা রাজনীতির প্রেক্ষাপট। সন্ত্রাসী চাঁদাবাজিদের হাতে চলে গেছে পুঠিয়ার রাজনীতি। প্রকৃতপক্ষে যারা জিয়াউর রহমানের আদর্শে গড়া রাজনীতি বুকে ধারণ করে রাজনীতি করে আসছেন বিগত দিনগুলোতে, তারা আজ কালো চাদরের ভিতরে ঢাকা পড়ে গেছেন। কারণ, লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছেন না এই বিএনপির প্রকৃত নেতা-কর্মীরা।