বরগুনায় স্ত্রীকে হত্যার পর থানায় স্বামীর আত্মসমর্পণ।

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৪৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫

বরগুনায় ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে নিজেই থানায় এসে অপরাধের কথা স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করেছে। হত্যা ও আত্মসমর্পণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান।

রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বরগুনা পৌর শহরের বাগান বাড়ি এলাকায় জনৈক রাসেল মিয়ার ভাড়া বাসায় চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ঘটনা ঘটে। এক মেয়ে এক ছেলে নিয়ে ত্রিশ উর্দ্ধে আসমা ও আবুল কালামের সংসার। রবিবার সন্ধ্যায় ঘরে ঘুমানো অবস্থায় চিৎকার শুনে মেয়ে রুকাইয়া  মা আসমা আক্তার পুতুলের গলাকাটা দেখতে পায়। মেয়ে রুকাইয়া জানান,  বিকালে বাবার সাথে মায়ের হাতের রুলি নিয়ে ঝগড়া হয়। পরে বাবা  স্প্রাইটের সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে আমাদের খাওয়ায়। সন্ধ্যায় মায়ের চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙ্গে দেখি মায়ের গলা কাটা। নিহত গৃহবধূ আছমা আক্তার পুতুল (৩০) বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের বকুলতলী গ্রামের ইউনুসের মেয়ে। আসমা আক্তার পুতুল পুবালি ব্যাংক বরগুনা শাখায় অফিস সহায়ক পদে কর্মরত ছিল। স্বামী আবুল কালাম (৩৫) বরগুনা পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ স্মৃতি সড়কের বড়িয়াল পাড়া এলাকার আবদুল করিম আকনের ছেলে। পেশায় তিনি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীক। বরগুনা থানা সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবুল কালাম নামের ওই ব্যক্তি থানায় এসে তার স্ত্রী আসমা আক্তার পুতুলকে ধারাল ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি লেকের পানিতে ফেলে দিয়েছেন বলে জানান আবুল কালাম। বরগুনা সদর থানার পুলিশ আবুল কালামকে সাথে নিয়ে পৌর শহরের বাগানবাড়ী এলাকার জনৈক রাসেল মিয়ার ভাড়া বাসায় গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পুতুলকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক আসমা আক্তার পুতুলকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত গৃহবধূ আসমা আক্তার পুতুলের গালে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে গভীর ক্ষতসহ মাথায় ও পেটে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। পারিবারিক কলহের জেরেই এ হত্যা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। বাড়ির মালিক রাসেল মিয়া বলেন, আসমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশকে আমিও ঘটনার বিষয় জানিয়েছিলাম। আবুল কালাম ও আসমা বছর খানেক আগে আমার বাসায় ভাড়া থাকে। এই সময়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব কলহ দেখতে পাইনি। এ ঘটনার বিষয়ে আমরা বা পার্শ্ববর্তী ঘরের লোকজন কোনো চিৎকার চেচামেচির শব্দও শুনতে পাইনি। এমনকি তাদের বড় মেয়েও কোনো শব্দ শুনতে পায়নি। বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি থানায় এসে নিজের স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে জানায়। তাৎক্ষণিক তার দেওয়া তথ্য মতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হওয়া অবস্থায় আসমা আক্তার পুতুল নামের ওই গৃহবধূকে দেখতে পায় পুলিশ। তাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আসমা আক্তার পুতুলকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বামী আবুল কালামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার ও পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান আছে।