বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুদকের অভিযানে প্যাথলজিতে অনিয়ম, খাবারে দুর্নীতি ও দালালদের দৌরাত্ম্য দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৩:০৯ অপরাহ্ণ, মে ১, ২০২৫ মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ মন্ডল।। দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্যাথলজি বিভাগে সেবার মান, রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত খাবার, ওয়ার্ড ব্যবস্থাপনা এবং দালাল চক্রের সক্রিয়তা নিয়ে নানা অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সরেজমিনে অভিযান পরিচালনা করেছে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল আনুমানিক ১১ ঘটিকায় দিনাজপুর দুদকের সহকারী পরিচালক খায়রুল বাশারের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করে। অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন দুদকের দিনাজপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন, উপ-সহকারী পরিচালক কামরুন্নাহার সরকার ও ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মাইদুল ইসলাম। প্রাথমিকভাবে তাঁরা কমপ্লেক্সের ওষুধ বিতরণ, সেবার মান, ওয়ার্ড ব্যবস্থাপনা ও দালালদের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। প্যাথলজি বিভাগে দুই টেকনোলজিস্টের বিরুদ্ধে স্বার্থসংঘাতের অভিযোগ তদন্তে উঠে আসে, প্যাথলজি বিভাগে কর্মরত দুজন মেডিকেল টেকনোলজিস্টেরই নিজস্ব ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এদের মধ্যে শাহ্ আল এমরান নামে এক টেকনোলজিস্টের বাবার নামে রয়েছে “রাজু ডায়াগনস্টিক সেন্টার” এবং অপরজন ইয়াসিন আলীর স্ত্রীর নামে পরিচালিত হচ্ছে “নাজমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার”। সরকারি দায়িত্বে থেকে বেসরকারি ব্যবসার এই জটিল স্বার্থসংঘাত তদন্তকারী কর্মকর্তাদের দৃষ্টিগোচর হয়। এ বিষয়ে তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন এবং এদের বদলির বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেন। খাবারে অনিয়ম, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ অভিযানে দেখা যায়, ভর্তিকৃত রোগীদের জন্য নির্ধারিত মেনু অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হয়নি। মুরগির মাংসের পরিবর্তে কম পরিমাণে মাছ এবং নিম্নমানের মোটা চালের ভাত পরিবেশন করা হয়েছে। এই অনিয়মের দায়ে খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং দায়িত্বরত সুপারভাইজারকে শোকজ করার কথা জানানো হয়। দালাল চক্র সক্রিয়, গোয়েন্দা নজরদারির ঘোষণা পরিদর্শনের সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে এক ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি ও এক ব্যক্তিকে রোগীদের সঙ্গে অনিয়মিত কথাবার্তায় জড়িত থাকতে দেখা যায়। দুদক কর্মকর্তারা তাদের দালাল সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। অভিযানের সময় পুরুষ ওয়ার্ড, মহিলা ওয়ার্ড, প্যাথলজি, এক্সরে বিভাগ ও স্টোর রুম ঘুরে দেখা হয় এবং প্রতিটি বিভাগেই অনিয়মের প্রমাণ মেলে। সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, এই কমপ্লেক্সের কার্যক্রমে আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত থাকবে। দায়িত্বপ্রাপ্তরা যদি নিয়ম লঙ্ঘন করেন, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, প্যাথলজি বিভাগের যেসব কর্মকর্তা নিজেদের ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনা করছেন, তাঁদের বদলি হলে এই ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট ভেঙে যাবে। আমরা তাঁদের বদলির ব্যাপারে সুপারিশ করব এবং পরবর্তীতে তাঁদের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণে রাখব। দুদকের এ অভিযান স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সাধারণ মানুষ সঠিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার আশায় দুর্নীতি দমন কমিশনের এ ধরনের তৎপরতাকে স্বাগত জানিয়েছে এবং দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে। SHARES সারা বাংলা বিষয়: