বড়াইগ্রামে স্বামীর মাছ চুরি, লজ্জায় গৃহবধূর আত্মহত্যা, পুকুর মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৩:০৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ৫, ২০২৫ বড়াইগ্রামে স্বামী পুকুর থেকে মাছ চুরি করে ধরা পড়ার লজ্জায় আত্মহত্যা করেন গৃহবধূ সুমাইয়া খাতুন (১৪)। ঘটনার এক মাস পরে ওই পুকুর মালিকের বিরুদ্ধে উলটো আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন স্বামী সুরুজ মণ্ডল (২১)। অন্যদিকে, সুরুজসহ পুকুর মালিক মেয়েকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছেন দাবি করে আদালতে মামলা করেছেন সুমাইয়ার বাবা। এখন জামাই-শ্বশুরের পরস্পরবিরোধী তথ্যে দুই মামলায় গ্রেফতার এড়াতে মাহবুব হোসেন নামে পুকুর মালিক বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সরেজমিনে স্থানীয়রা জানান, উপজেলার দ্বারিকুশী বাবুপাড়ায় সুরুজ মণ্ডলের বাড়ি সংলগ্ন একটি পুকুর ৫ বছরের জন্য লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেন চন্ডিপুর গ্রামের মাহবুব হোসেন। কিন্তু মাঝে মধ্যে পুকুর থেকে কে বা কারা মাছ চুরি করে নেয় এমন কথা উঠে স্থানীয়দের মধ্যে। সর্বশেষ গত ২১ মে মাহবুব গোপনে খবর পেয়ে লোকজনসহ সুরুজের বাড়িতে গিয়ে পুকুর থেকে চুরি করা মাছ জব্দ করেন। স্বামীর মাছ চুরির বিষয়টি জানাজানি হলে ওইদিনই ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন সুমাইয়া। ওই সময় স্বজনদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না করায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। কিন্তু এ ঘটনার এক মাস পরে গত ২২ জুন সুরুজ মণ্ডল আদালতে মাহবুবের নামে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেছেন। অন্যদিকে, সুমাইয়ার বাবা আব্দুল করিম জামাই সুরুজকে প্রধান আসামি করে পুকুর মালিক মাহবুবসহ কয়েকজনের নামে মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন। এ ব্যাপারে চন্ডিপুর গ্রামের মাসুম হোসেন ও সিরাজুল ইসলাম বলেন, মাহবুবের কথায় তার সঙ্গে সুরুজের বাড়িতে গিয়ে পুকুর থেকে চুরি করা মাছ দেখতে পাই। এ সময় সুরুজের মা ও তার ছেলে রাতে মাছ চুরি করে বাজারে বিক্রি করেছেন, আর কিছু বাড়িতে রেখেছেন বলে জানান এবং এটি তার অন্যায় হয়েছে বলে স্বীকার করেন। কিন্তু পরে সুরুজের স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাই। অভিযুক্ত সুরুজ মণ্ডল বলেন, আমি মাছ চুরি করিনি, খাওয়ার জন্য দুই-একটা মাছ নিয়েছিলাম। পরে আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করলে এলাকার লোকজনের নানান কথার জন্য মামলা দিয়েছি। আর শ্বশুর আমাকে প্রধান আসামি করে যে মামলা করেছেন; এ বিষয়ে যা বলার আদালতে গিয়ে বলবো। সুরুজ মণ্ডলের দায়ের করা মামলার স্বাক্ষী দ্বারিকুশী গ্রামের বাসিন্দা মো. বাবু মিয়া বলেন, মামলায় আমাকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। কিন্তু আমি এ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না। অপর মামলার স্বাক্ষীরাও একই ধরনের কথা বলেন। বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারওয়ার হোসেন জানান, এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলার তদন্তে প্রকৃত বিষয় জানা যাবে এবং সে অনুযায়ী পরবর্তী মামলাগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বেলহাজ উদ্দিন বাঁধন।। SHARES সারা বাংলা বিষয়: