ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির কাউন্সিলে মির্জা ফয়সাল আমিনের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৪:২৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২৫
মো:সোহেল রানা।।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছোট ভাই ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা তাকে লক্ষ্য করে চেয়ার ও বাঁশ ছুড়ে মারে এবং তার ব্যবহৃত গাড়িটি ভাঙচুর করে।
শনিবার (১২ জুলাই) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বালিয়াডাঙ্গী সমীর উদ্দিন কলেজ মাঠ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এতে জেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীও আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, ওইদিন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা নিয়ে শুরু হয় উত্তেজনা। ফল ঘোষণার দাবিতে স্থানীয় নেতাকর্মীরা মির্জা ফয়সাল আমিনসহ জেলা বিএনপির অন্য নেতাদের প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। তারা বিভিন্ন স্লোগানে জানান, ফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত কাউকে স্থান ত্যাগ করতে দেওয়া হবে না।
অবরুদ্ধ অবস্থায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর রাত ৯টার দিকে মির্জা ফয়সাল আমিন কাউন্সিলের ফলাফল ঘোষণা করেন। পরে তিনি বাড়ি ফেরার জন্য গাড়িতে ওঠার সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তার ওপর চড়াও হন।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, তাকে লক্ষ্য করে উপর্যুপরি চেয়ার ছুড়ে মারা হয়। তিনি দ্রুত গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করলে হামলাকারীরা গাড়িটিতেও হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। তাকে সরাসরি মারধরের চেষ্টা করা হলেও সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা বাধা দিলে তিনি রক্ষা পান। এ সময় কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
মির্জা ফয়সাল আমিনের গাড়ির মালিক ও তার সফরসঙ্গী মো. রাশেদ বলেন, “এই গাড়িটি দিয়ে ভাইয়া (মির্জা ফয়সাল) এবং আমি নিয়মিত চলাচল করি। আজও আমরা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলে এসেছিলাম। সবকিছুই শান্তিপূর্ণভাবে চলছিল। কিন্তু ফলাফল ঘোষণার পর যখন ভাইয়া গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই তার ওপর অতর্কিত হামলা হয়। আমার গাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়েছে।”
এই ঘটনার পরপরই পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তবে ততক্ষণে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শওকত আলী সরকার বলেন, “ফলাফল ঘোষণার পর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গাড়িতে উঠতে গেলে তার ওপর হামলা হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। কারা এই হামলা চালিয়েছে তা এখনও সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। তদন্ত শুরু হয়েছে।”
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পলাশ কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের বলেন, “তিনি (মির্জা ফয়সাল) ফলাফল ঘোষণা করে গাড়িতে ওঠার সময় হামলার শিকার হন। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে কাজ চলছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির এক নেতা সাংবাদিকদের বলেন, “জেলা নেতৃত্ব কোনো কমিটি চাপিয়ে না দিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন করেছে। তারপরও এ ধরনের হামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র হতে পারে। এ ধরনের অগণতান্ত্রিক আচরণ দল সহ্য করবে না।”
এদিকে, বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, মির্জা ফয়সাল বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন।