ম্যানগ্রোভ খ্যাত বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে বেড়েছে বাঘের সংখ্যা দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১২:৩০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০২৫ অরবিন্দ কুমার মণ্ডল।। বিশ্ব বাঘ দিবস আজ। দিবসটি সামনে রেখে সুন্দরবনের বাঘ সুরক্ষায় নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে বনবিভাগ। এসব পদক্ষেপের কারণে এর মধ্যে বাঘের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। ভবিষ্যতে আরো বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে গত কয়েক বছরে বাঘের সংখ্যা ১১৪ থেকে বেড়ে বর্তমানে ১২৫টি হয়েছে। ২০২৪ সালের সর্বশেষ বাঘ জরিপে সুন্দরবনে ১২৫টি বাঘ রয়েছে বলে ক্যামেরা ট্রাকিং জরিপে উঠে এসেছে। তবে বন বিভাগের বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার বা বাঘের সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে বিশেজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবনই হচ্ছে এশিয়ার মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বন্যপ্রাণীর বৃহত্তম আবাসভূমি। তবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসভূমিকে তাদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সুন্দরবনকে বন্যপ্রাণীর জন্য নিরাপদ করা গেলে দ্রুত বাঘের সংখ্যা আরো বাড়বে। বর্তমানে সুন্দরবনে চলছে প্রবেশ নিষিদ্ধ সময়। এর আগে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় বাঘের অবাধ বিচরণ ও প্রতিনিয়ত বাঘের সাবক দেখা মিলছে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল জেলে বাওয়ালীরা। বন বিভাগের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের জরিপে সুন্দরবনে বাঘ ছিল ৩৫০টি। এরপর ১৯৮২ সালে জরিপে ৪২৫টি এবং এর দু’বছর পর ১৯৮৪ সালে সুন্দরবন দক্ষিণ বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্যের ১১০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় জরিপ চালিয়ে ৪৩০ থেকে ৪৫০টি বাঘ থাকার কথা জানানো হয়। ১৯৯২ সালে ৩৫৯টি বাঘ থাকার তথ্য জানায় বনবভিাগ। পরের বছর ১৯৯৩ সালে সুন্দরবনের ৩৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় প্যাগমার্ক পদ্ধতিতে জরিপ চালিয়ে ধন বাহাদুর তামাং ৩৬২টি বাঘ রয়েছে বলে জানায়। ২০০৪ সালে জরিপে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি। ১৯৯৬-৯৭ সালের জরিপে বাঘের সংখ্যা উল্লেখ করা হয় ৩৫০টি থেকে ৪০০টি। ওই সময়ে বাঘের পায়ের ছাপ পদ্ধতিতে গণনা করা হয়। ২০১৫ সালের জরিপে সুন্দরবনের বাংলাদশে অংশে বাঘের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে দাঁড়ায় ১০৬টিতে। হঠাৎ করে সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা ৪০০টি থেকে ১০৬টিতে এসে দাঁড়ালে সারা বিশ্বে হৈচৈ পড়ে যায়। সর্বশেষ বাঘ জরিপে সুন্দরবনে ১১৪ থেকে বেড়ে বর্তমানে বাঘের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৫ টিতে। ২০২৪ সালে শেষ হয়েছে সর্বশেষ বাঘ গণনার কাজ। সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের পিপলস ফোরামের সভাপতি মোল্যা মনিরুজ্জামান বলেন, লোকালয়ে আসা বাঘ নিরাপদে ফেরাতে ইতিমধ্যে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হয়েছে। যার ফলে এখন আর মানুষ বাঘ পিটিয়ে মারে না। সম্প্রতিকালে সুন্দরবনে বাঘের আনাগোনা যেভাবে দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হয় বাঘের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুন্দরবন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫০টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে স্বাভাবিকভাবে মারা গেছে মাত্র ১০টি। ১৪টি বাঘ পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয় জনতা, একটি মারা গেছে ২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন সিডরে ও বাকি ২৫ বাঘ মেরেছে চোরা শিকারিরা। সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এজেডএম হাছানুর রহমান বলেন, বন বিভাগ বাঘের সংখ্যা বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যে কারনে বাঘ বৃদ্ধির সুফল কিন্তু দেখা যাচ্ছে। বন্যপ্রাণি শিকার বন্ধ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে নানামুখী তৎপরতা। বন বিভাগ বাঘ সুরক্ষায় যেভাবে কাজ করছে তাতে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাবে। SHARES সারা বাংলা বিষয়: