তালতলী ছোটভাইজোড়া ছলেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ ও ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগে গোপন কৌশল

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৫:৪৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫
কাওসার হামিদ।।
বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোটভাইজোড়া ছলেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ ও ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গোপন কৌশল,ব্যাপক অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে। এতে যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২১ আগস্ট মাদ্রাসার সভাপতি এডভোকেট জাকির হোসেনকে না জানিয়ে গোপনে অধ্যক্ষ নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল কালাম। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন জমা দিতে হবে। তবে সেটি ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন রাখায় কাঙ্ক্ষিতভাবে কেউ আবেদন করতে পারেননি; শুধু বর্তমান উপাধ্যক্ষ আবুল কালাম ও তাকে সাপোর্ট দিতে তাঁরই ঘনিষ্ঠ কয়েজন প্রার্থী আবেদন করেন।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে সভাপতি ১৯ সেপ্টেম্বর জরুরি বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত হয় এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, পরবর্তী বিজ্ঞপ্তিটিও গোপন রাখা হয়েছে। কোথায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে তা জানানো হয়নি, এমনকি মাদ্রাসা প্রাঙ্গণেও নোটিশ টানানো হয়নি। ফলে স্থানীয়ভাবে যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন না।
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদ শূন্য থাকলেও নিয়ম অনুযায়ী উন্মুক্তভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। বরং উপাধ্যক্ষ আবুল কালাম নিজেই অধ্যক্ষ পদে বসার উদ্দেশ্যে এ অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন।
এদিকে আগ্রহী প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসাইন আবেদন করতে না পেরে ২৯ সেপ্টম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি অভিযোগে বলেন, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে। সরকারী নীতিমালা- অনুযায়ী অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক হলেও তা মানা হয়নি।
একজন স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ও প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অনিয়ম হলে এর প্রভাব সরাসরি শিক্ষার মানের ওপর পড়বে। তাই বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পাশাপাশি অভিযোগপত্রের কপি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, বরগুনার জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল কালাম বলেন, একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল সেটি স্থগিত করে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এখনো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলে আপনাদের জানানো হবে। তিনি আরও বলেন, আমি যেভাবে নিয়োগ দেবো সেভাবেই হবে, নয়তো আমি বেঁচে থাকতে এই মাদ্রাসায় কোনো নিয়োগ হবে না।
অন্যদিকে মাদ্রাসার সভাপতি এডভোকেট জাকির হোসেন বলেন, প্রথমে আমাকে না জানিয়ে প্রথমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় আমি তা স্থগিত করেছি। পরবর্তীতে আবার বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।” কোন পত্রিকায় দিয়েছে সে বিষয়টি আমাকে জানায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত রোকনুজ্জামান খান বলেন,একটি অভিযোগ আমার দপ্তর দিয়েছেন।  তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।