মরহুম ডাঃ সৈয়দ আব্দুল খালেকের ৩৫তম মৃত্যু বার্ষিকী দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৫:৪৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০২৪ কোহিনূর আলম।।২৯ অক্টোবর মরহুম ডাঃ সৈয়দ আব্দুল খালেকের ৩৫তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ । মৃত্যুকালীন তাঁর বয়স হয়েছিল ৫১বছর ।তিনি ছিলেন একাধারে বীর মুক্তিযোদ্ধা, সময়ের সাহসী রাজনীতিবিদ, ডাক্তার, শিক্ষানুরাগী ও একজন আপাদমস্তক সমাজ সেবক । মরহুম ডাঃ সৈয়দ আব্দুল খালেকের জন্ম তৎকালীন নেত্রকোণা মহকুমার অন্তর্গত বর্তমান কেন্দুয়া উপজেলার ১১নং চিরাং ইউনিয়নের গোপালাশ্রম গ্রামে ২৭ জুলাই ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে এক সম্রান্ত মুসলিম পরিবারে । তাঁর পিতার নাম সৈয়দ আলাউদ্দিন এবং মাতার নাম তব্বতের নেছা । মরহুম ডাঃ সৈয়দ আব্দুল খালেক কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক পাশ করে ১৯৬৩ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারী পড়া শেষ করেন । পরবর্তীতে খুলনায় চাকুীতে যোগদান করলেও কিছুদিন চাকুরী করার পর চাকুরীতে মন বসাতে না পেরে কেন্দুয়ায় ফিরে আসেন এবং জনসেবার স্বার্থে ও অঙ্গিকারে চিকিৎসক হিসেবে নিয়োজিত করেন নিজেকে ।অন্যদিকে তিনি তখনকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও দেশের ক্রান্তিলগ্নে নিজেকে জড়িয়ে নেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও । ১৯৬৭ সালে কেন্দুয়া থানা আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাকাল থেকে প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ।পাকিস্তান সরকারের শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীন করার চিন্তা ধারায় কাজ করে গেছেন তিনি আমৃত্যুকাল । ১৯৭১ সালে দেশ মাতৃকার টানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, পুলিশ, আনসার, যুবক ও সর্ব সাধারণকে সংগঠিত করে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মহেষখলায় মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অবস্থান করেন । মুজিব নগর সরকারের নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের তদারকির জন্যে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হলে আব্দুল হেকিম চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও ডাঃ সৈয়দ আব্দুল খালেককে সদস্য সচিব করা হয় । এ সময় মুক্তিযোদ্ধা দল গঠন ও পাকিস্তানিদের অগ্রযাত্রা ঠেকানোর জন্য কেন্দুয়া, কলমাকান্দা ও দূর্গাপুর থানার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ।মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণসহ মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা প্রদান করাই ছিল ডাঃ সৈয়দ আব্দুল খালেকের প্রধান কাজ । কাজের দায়িত্ব পালনে অগ্রণী ভূমিকা রাখায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ডাঃ সৈয়দ আব্দুল খালেক চির স্মরণীয় ।দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশকে গড়ে তুলতে অবিরাম কাজ করে গেছেন সময়ের সেরা মানুষটি ।১৯৬৭ সাল হতে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত কেন্দুয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন, ১১নং চিরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন এবং কেন্দুয়া সাজিউড়া স্কুলের সভাপতির দায়িত্ব পালনসহ সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মানে অক্লান্ত পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন তিনি ১৯৭৭ সালে পুনরায় চাকুরীতে যোগদান করেন । আমৃত্যু চিকিৎসকের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও সক্রিয় রাখেন নিজেকে ।১৯৮৯ সালে ঢাকা ধানমন্ডির ডেল্টা মেডিকেল ক্লিনিকে মৃত্যুবরণ করেন এই সাহসী বীর সন্তান । বাঙালি জাতির সূর্য সন্তান মরহুম ডাঃ সৈয়দ আব্দুল খালেককে তাঁর আপন ঠিকানা গোপালাশ্রম গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে বিনম্র শ্রদ্ধায় সমাহিত করা হয় ।কেন্দুয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রহমান ডাঃ সৈয়দ আব্দুল খালেক সম্পর্কে বলেন, ডাঃ সৈয়দ আব্দুল খালেক ছিলেন সামাজিক, সৎ ও সাহসী মানুষ । তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন ও কেন্দুয়া জয় হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যও ছিলেন । SHARES সারা বাংলা বিষয়: