বান্দরবান সনাতনী সমাজের বিক্ষোভ সমাবেশ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৪:১২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২, ২০২৪
দীপংকর মল্লিক।। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, লীলারাজ গৌর দাস ব্রক্ষচারী সহ সনাতন জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়কবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে  বান্দরবান সনাতনী সমাজের বিক্ষোভ সমাবেশ।আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সংগঠক শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী,  লীলারাজ গৌর দাস ব্রক্ষচারীসহ সনাতনী জাগরন মঞ্চের সদস্যসহ ১৮জন সনাতনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে বান্দরবানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বান্দরবান সনাতনী সমাজ।আজ শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিকেলে ৩.০০ঘটিকায়  বান্দরবান প্রেসক্লাবের সামনে বান্দরবান পার্বত্য জেলার সকল সনাতনী সংগঠনের আয়োজনে হাজার হাজার সনাতনী একত্রে হয়ে বিভিন্ন ফ্যাস্টুন হাতে সমাবেশ অংশ নেন এবং ৮দফা দাবি আদায়ের কথা তুলে ধরেন।এসময় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা, সনাতন ধর্মালম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় গুরু ও আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৮জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং দ্রুত এই মামলা প্রত্যাহারের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।উক্ত সমাবেশে বক্তারা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, লীলারাজ গৌর দাস ব্রক্ষচারী সহ সনাতন জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়কবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ করেন এবং যারা সাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে  এবং সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় তাদের হুশিয়ারি দেন এবং প্রশাসনকে অনুরোধ করেন দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে এবং সনাতনীরা যাতে সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারে সেই বিষয়ে বর্তমান বৈষম্য বিরোধী সরকার তথা অন্তরর্তীনকালীন সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন ।মানববন্ধনে বক্তব্য কালে শয়ন দাশ গুপ্ত বলেন  এদেশে আমাদের  জন্ম হয়েছে মরলে আমরা এদেশেই মরবো। আমরা এদেশের ভুমিপুত্র সুতরাং আমরা এই জন্মভুমিতে মরতে রাজি কিন্তু দেশ ছাড়তে রাজি নই এবং শিমুল দাশ বলেন জন্মের সময় পশু পশুত্ব নিয়ে জন্মায় কিন্তু মানুষকে জন্মের পর মনুষত্ব অর্জন করতে যা সকলকে অর্জন করতে পারে না।  কিছু সাম্প্রদায়িক মানুষ ও দুষ্কৃত মহল সনাতনীদের নানা ট্যাগ দিয়ে থাকে যা সনাতনীদের জন্য বড় দুঃখের বিষয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।  ব্যক্তবকালে  সুমন দাশ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলার মাটিতে সনাতনীদের উপর অত্যাচারের কোন বিচায় হয়নি। বর্তমানে এবং বিগত সময়ে আমরা দেখেছি যারা জেলা উপজেলায় সনাতনী সমাজের নেতৃত্ব দেন তাদের নানা মামলা হামলার হুমকি দেওয়া হয় এমনকি জাতীয় পতাকা অবমাননার দায়ে শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী,  লীলারাজ গৌর দাস ব্রক্ষচারীসহ সনাতনী জাগরন মঞ্চের সদস্যসহ ১৮জন সনাতনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়ছে সেই মামলায় ৮নং আসামী হিসেবে বান্দরবান বাঘমারা উপজেলার আইনজীবী এডভোকেট রাজীব দাশের নাম রয়েছে,  যিনি সিতাকুন্ড সাইন কমিটির সদস্য। সাইন কমিটির যেসব জায়গা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ দখল করে আছে তাদেরকে উদগাত না করার জন্য রাজীব দাশের বিরুদ্ধে নানা রকম মিথ্যা মামলা  দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। সনাতনী সমাজের অহংকার যিনি সবকিছু ত্যাগ করে সন্ন্যাস জীবন গ্রহণ করেছেন তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে পরিহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের কাছে জোড় দাবি জান্নাচ্ছি। পাশাপাশি মিন্টু আইচ ৮টি দাবি দাবীগুলোর তুলে ধরেন যার  মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন, শারদীয় দুর্গাপূজায় ৫দিনের ছুটি প্রদান,সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রনয়ন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা ,সংখ্যালঘু নির্যাতনের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনবার্সনের ব্যবস্থা করা, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ করা, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়ন করার জোর দাবি রয়েছে।এদিকে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে সনাতনীরা বান্দরবানের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের সামনে গিয়ে কর্মসূচীর সমাপ্ত করেন।
প্রসঙ্গত: বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো.ফিরোজ খান ইসকনের চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভু সহ ১৮ জন অজ্ঞাতনামা আরো ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুন্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত, নগরীর প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাশ ব্রহ্মচারীসহ আরো বেশ কয়েকজনের সনাতন ধর্মালম্বী নেতৃবৃন্দের নাম রয়েছে। এই মামলায় পুলিশ ২জনকে গ্রেপ্তার করে এবং আজ বিকালে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দলের একটি অব্যাহতি পত্রের মাধ্যমে মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ খানকে দলের নীতি আদর্শ পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দল থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।