ওসমানীনগরে বিলিনের পথে প্রাচিন নদী ও খাল জনর্দূভোগ চরমে ।

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:১২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩, ২০২৪

শরীফ আহমদ চৌধুরী ।। সিলেটের ওসমানীনগরে ঐতিহ্যবাহী প্রাচিন নদী ও খাল খননের অভাবে বিলীনের পথে। এতে অসংখ্য প্রাচিন খাল ও সরকারি গোপাট দখল সহ একাধিক নদী ও খাল ভরাট করে  বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করে চির চেনা গ্রামীন জনপদের চিত্র পাল্টে দিয়েছে প্রভাবশালীরা। এতে পানি নিষ্কাশন পথ  বন্ধ হওয়ার ফলে বর্ষা মৌসুমে দখল ব্যাতিত খাল ও নদীর অন্য অংশে নদী রূপ ধারণ করলেও দেখা যানা জোয়ার ভাটা। এসময় মরা নদী ও খালের দূ ধারের ভূমি ও লোকায় বৃষ্টির পানিতে ভরে চিত্র হয় সাগরের মত।  বৃষ্টির জল,পাহাড়ি ঢল বহন ক্ষমতা সম্পূর্ণ নদী, খাল ও গোপাট পলিবালি ও ঝুপ জঙ্গলের আবরনে  বিলিনের পথে, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বুড়ি নদী,নাটকিলা নদী, কেওয়ালী খাল, দাশপাড়া খাল, হুফরাখালী, রত্নানদী, সেই কবে হারিয়ে ফেলেছে  রূপ যৌবন । এতে প্রতিটি গ্রামে সরকারী গোপাট,  নদী ও খাল  ভূমি খেকু চক্র ও প্রবাভশালীদের দখলে। খাল ও নদীর অনেকস্থানে নির্মান করা হয়েছে ছোট ব্রিজ কালবাট এবং ব্যাক্তিগত মার্কেট সহ বিভিন্ন ধরনের স্থায়ী স্থাপনা। এতে নদী ও খাল পানি ধারন ক্ষমতা ও চলাচলের গতি হারিয়েছে। বৃষ্টি র্মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে উপজেলার গ্রাম গঞ্জের অধিকাংশ লোকালয়ে জলাবদ্ধতার  সৃষ্টি হয়ে দেখা দেয় দূর্যোগ। এদূর্যোগকে পাকৃতিক দূর্যোগ বলে প্রতিবছর চালিয়ে দেয়া হয় ওসমানীনগরের কিছু কিছু এলাকায়  বুড়ি নদী ও নাটকিলা নদীর  রূপরেখা দেখা গেলও দখলের কারণে নদী গুলো আজ বিলিন প্রায় । এদিকে সম্প্রতি  কেওয়ালী খালের চরালীবন্দ এলাকায় বর্তমান ৩ হাত প্রস্ত খালের উপর লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায়ে প্রায় ৩০ হাত প্রস্ত ব্রিজ নির্মান করা হয়েছে।  উক্ত খালের বুরুঙ্গা রাস্তা সংলগ্ন খাসের বন্দ এলাকায়  ৬০ হাত কেওয়ালী  খালের উপর  ব্যাক্তি সার্থে নিজ অর্থায়নে ২০ হাত প্রস্ত ব্রিজ নির্মান করে খালটিতে পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে।  এদিকে নাটকিলা নদীর কলারাই মুতিয়ারয়গাও সংযোগ রাস্তা বিহীন  নিচু ব্রিজ নির্মাণ করে এলাকার মৎসবীজ সহ কৃষকের নৌকা চলাচলের রাস্তা বন্দ করে দিয়েছে প্রভাবশালীরা। উপজেলার  একাধিক স্থানে নদী ও খালের পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সরকারী ও প্রভাবশালীদের নিজ অর্থায়নে অপরিকল্পিত ব্রিজ  নির্মান করা হয়েছে এবং শীতকালে  নদী ও খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় নদীন পারের বাসিন্দারা নদীর তলদেশে গর্ত করে মাটি তুলা তুলতে দেখা যায়।  কালের বিবর্তনে বিশাল বুড়ী নদী, নাটকিলা নদী, কালনী নদী, খাল,  সরকারী দীঘি ও ডোবা সমতল বসতবাড়ি ও ধানী জমিতে পরিণত হয়েছে।  নদী ও জলাশয়  গিলে ফেলেছে এলাকার প্রভাবশালীরা। বুড়ী  নদী সিলেটের ওসমানীনগর  উপজেলার উত্তর পূর্ব কোনে দয়ামীর, চিন্তামনি দিয়ে প্রবেশ করে উছমানপুর, বোয়ালজুড়, তাজপুর, গোয়ালা বাজার, বুরুঙ্গা, পশ্চিম পৈলনপুর ও সাদীপুর ইউনিয়ন ছুঁয়ে বর্তমান বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলাকে বিভক্ত করে নবীগঞ্জের দিকে প্রবাহিত হয়েছিল।ওসমানীনগর  উপজেলায় বুড়ী নদীর আকাঁবাকাঁ  দৈর্ঘ্য  প্রায় ৫০ কিলোমিটার। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নের  অধিকাংশ স্থানেই নদীর রূপ রেখা রয়েছ ।  উপজেলার নদী ও খাল জল প্রবাহের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার কারণে বর্ষায় বন্যাক্রান্ত হয়ে চরম দূর্ভোগে স্বীকার জনসাধারণ । এদিকে শুকনা মৌসুমে বোরো সহ বিভিন্ন ফসল পানি সেচের অভাবে   কৃষক আবাদ করতে পারছেনা ফসল। এতে এলাকার কৃষক সহ জনসাধারণের  দাবি বিলীন হয়ে যাওয়া নদী ও খাল  দখল মুক্ত করে খনন করা হলে হাজার হাজার হেক্টর জমি ১ ও ২ ফসলা ধানী জমিতে পরিনত হবে।  অন্যদিকে অনাকাংখিত বন্যা থেকে রক্ষা পাবে  উপজেলাবাসী। কিন্তু নদী ও হাওর খালে অপরিকল্পিত ভাবে খনন দখল ও ছোট ব্রিজ  এবং  কালবাট নির্মন করে নদী ও খালকে গলাটিপে হত্যা করেছে প্রভাবশালীরা। এবিষয়ে ওসমানীনগর উপজেলার একাধিক সচেতন নাগরিক বৃন্দ  বলেন,  নদী ও খাল দিয়ে আগের মতো নৌকা চলাচল করতে দেখা যায়না। প্রচন্ড খরস্রুতা নদী,  খাল, বিল ও হাওয়র পলিবালিতে ভরে যাওয়ার ফলে উপজেলা বাসীর ক্ষতির কারণ। তারা আরও বলেন নদী ও খাল খনন করা হলে পাকৃতিক মাছ এবং কৃষি জমিতে সহজে ফসল উৎপাদন  সম্ভব হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপমা দাসের  সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ কালে তিনি বলেন খাল, নদী ও সরকারি গোপাট দখলের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী  প্রকৌশলী দিপক রঞ্জন বলেন, নদীর জায়গা অবৈধ দখলের একটি তালিকা তৈরি করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অস্থিত্ব আছে এমন নদী গুলোর অবৈধ দখল উচ্ছেদের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন এবং অস্থিত্বহীন নদীর জায়গা দখল মুক্ত করতে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।