মৎস্য চাষ বদলে দিয়েছে কেরোয়া গ্রামের চিত্র দারিদ্রতার ভিতর থেকে বেরিয়ে এসেছে অনেক পরিবার

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৪:৫৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২৪

মোঃ শাখাওয়াত হোসেন।। মাছে ভাতে বাঙ্গালীর এই দেশে প্রায় অধিকাংশ অঞ্চলেই মাছ চাষ করা হয়। আর মাছ চাষে সাফল্যতায় বদলে গিয়েছে গোটা একটি গ্রামের চিত্র। মৎস্য চাষ করে অনেকে পরিবার বেরিয়ে এসেছে দারিদ্র সীমার ভিতর থেকে। মাছ চাষ কে কেন্দ্র করেই বদলে গিয়েছে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ডাকাতিয়া নদীর পাড়ের কেরোয়া গ্রামের চিত্র। মাছ চাষকে পেশা হিসেবে নিয়ে সাফল্য পেয়েছেন অনেকে মৎস্য চাষি। শুধু চাষীরাই না পাশাপাশি মাছের ঘেরে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ  করছে প্রায় ৩শতাধিক পরিবার। মাছ চাষকে ঘিরে গড়ে ওঠেছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। উন্নত হয়েছে যোগাযোগ ব্যাবস্থারও। মাছের খাদ্য ব্যবসায় জড়িত হয়েও ভাগ্য খুলেছে অনেক ব্যবসায়ীর। স্বল্পপূঁজীতে পাম্পের ব্যবহারে মাছ বহনকৃত ড্রাম পানিতে ভরিয়ে দেওয়ার ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেকেই। ক্রমশই গ্রামে কমছে বেকারত্বের সমস্যা। সকল শ্রেণীর পেশার মানুষ উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন মাছ চাষে। আমিষের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ও ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে এই মৎসচাষীরা। সারা জমিনে দেখা যায় কেরোয়া গ্রামে ৩০টি বড় মাছের ঘের ও ছোট পুকুর মিলিয়ে সর্বমোট মাছের ঘের রয়েছে প্রায় ১৫০টি। যার পরিমান প্রায় ৮০০ হেক্টোর। প্রতি বছরে বিনিয়োগ হচ্ছে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা। মৎস্য অফিসের তথ্য সূত্রে জানাযায় গত অর্থবছরে উপজেলায় মোট ১৯হাজার ৩৫ মেট্রিকটন মাছ উৎপাদন হয়েছে যার তিন ভাগের এক ভাগ উৎপাদন হয় কেরোয়া গ্রামে। উৎপাদিত মাছ ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাজারগুলোর চাহিদা পূরণের পর রামগঞ্জ, রায়পুর,  লক্ষীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, মতলব, চাটখীল, কুমিল্লা ও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন মৎস আড়তে বিক্রয় করা হয়।মাছ চাষের সাথে জড়িত রয়েছেন প্রায় ৮০জন চাষী যারা প্রত্যেকেই আগে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। পূর্বের পেশা ছেড়ে বর্তমানে মাছ চাষ করেই সাফল্য পেয়েছেন। একাদিক মৎসচাষীর সাথে কথা বলে জানা যায় মাছ চাষের মাধ্যমেই তারা আজ সাবলম্বী পূর্বের চেয়ে বর্তমানে ভালোই কাটছে তাদের দৈনন্দিন জীবন। তবে গত কয়েকদিন পূর্বের জলাবদ্ধতায় এবছর কিছুটা ক্ষতিরও আশঙ্কা করছেন অনেকে।মৎস্য চাষী শামছুল আলম রিপন বলেন আমাদের গ্রামে অনেকেই মাছ চাষের মাধ্যমে আজ স্বাবলম্বী। আমি তিন বছর আগে প্রবাস থেকে এসে মাছ চাষের সাথে জড়িত হয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ ভালো সফলতাও পেয়েছি।আরেক চাষী আসাদুজ্জামান আরজু জানান তিনি উপজেলার গ্রামীণফোন, ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সহ বিভিন্ন পরিবেশন ব্যাবসার সাথে জড়িত। মৎস্য চাষীদের সফালতায় মুগ্ধ হয়ে জড়িত হয়েছেন মৎস্য চাষের সাথে।অপর এক চাষী কামাল মাল বলেন আমি ১৪ বছর আগে প্রবাস থেকে এসে মাছ চাষের সাথে জড়িত হয়েছি আমি সহ এলাকার অনেক যুবক মৎস্য চাষের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছেন। কিন্তু গত দুই মাস আগের জলবদ্ধতায় এ বছর বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে।উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ বেলায়েত হোসেন জানান মাছ চাষের জন্য উপজেলার মধ্যে কেরোয়া গ্রাম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল। উপজেলায় মাছের চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে এই গ্রামের মৎস চাষীরা। উপজেলায় উৎপাদিত মাছের এক-তৃতীয়াংশ উৎপাদন হয় এই গ্রামে। উপজেলা মাছের চাহিদা ৭ হাজার মেট্রিক টন থাকলেও গত বছরে উৎপাদন হয়েছে ১৯ হাজার ৩৫ মেট্রিক টন।