বদলগাছীতে বাড়ছে শীতের তীব্রতা।দিনে সূর্যের দেখা নেই।

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৪:০৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০২৪
সৈকত সোবাহান ।। নওগাঁর বদলগাছীতে দিন দিন বাড়ছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত পড়ছে জনজীবন। সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে গেলে মেলেনি সূর্যের দেখা। এদিকে শীত বাড়ার সাথে সাথেই বাড়ছে ঠান্ডা,কাশি ওজ্বর।
আজ ৯ই ডিসেম্বর সোমবার  সকালে বদলগাছী আবহওয়া অফিস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৪ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে। এর আগে গত ৭ই ডিসেম্বর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৯ ডিগ্রি পরদিন ৮ই ডিসেম্বর ১০.৬ সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছিল বলে জানাযায়।সোমবার ৯ই ডিসেম্বর ভোর থেকেই ঘন কুয়াশার জন‍্য গাড়ির হেড লাইট জালিয়ে রাস্তার যানবাহন চলাচল করছিলো। সকাল বাড়ার সাথেসাথে হিমেল বাতাস ও কুয়াশার মেঘে দুপুরেও সূর্যের দেখা মেলেনি।  হিমেল বাতাস ও কুয়াশায় কনকনে শীত বিরাজ করছে প্রকৃতিতে। আর এই কনকনে ঠাণ্ডায় উপজেলার প্রান্তিক ও খেটে খাওয়া পর্যায়ের  সাধারণ আর ছিন্নমূল মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এদিকে এই বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করতে থাকলে জনজীবন বিপর্যস্ত হবে।তবে শীত বাড়ার সাথে সাথেই লোক সমাগম বেড়েছে চা দোকানে। ঠান্ডায় একটু গরমের স্বাধ পেতে চা’য়ের দোকানে ভীড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।ভ‍্যান চালক জলিল বলেন, সকাল থেকেই প্রচুর শীত। সকাল থেকেই বাজারে লোকসমাগম সংখ্যা কম । ঠাণ্ডায় রাস্তায় বসে থাকা কষ্টকর। আবার সন্ধ্যার পরই বাজারে আর লোকজন থাকে না। লোকজন বাজারে না থাকায় ভাড়া নেই বললেই চলে।থানা মোড়ের চা দোকানী বিদুৎ জানান, খুব সকাল থেকেই চায়ের দোকানে চা খেতে লোকজন ভীড় জমায় যা সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে। গরমের সময় এতো লোকজন আসেনা। শীত পড়লে চা বিক্রি বেড়ে যায়।
উপজেলা বনগ্রাম আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা রফিকুল   বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই প্রচুর শীত পড়ছে। তবে  আজ সোমবার সকাল থেকে শীতের অনুভব বেশি এবং দুপুরেও সূর্যের দেখা নেই। আমাদের এই আবাসন প্রকল্পে  সকল অসহায় দরিদ্র  মানুষের বসবাস। আমরা উপজেলার শেষ প্রান্তে বসবাস করি এখানে প্রতিটি মানুষ  শ্রম বিক্রি করে খায়। জিনিসপত্রের যে দাম তাতে বেঁচে থাকা কঠি। তারপর আবার শীতের কাপড় কেনা।সব মিলিয়ে চরের মানুষের জীবন অনেক কষ্টের।গত বছরও শীতে সরকারের পক্ষ থেকে গরম কাপড় ঠিকমত কেহই পায় নি। এবার সরকারের কাছ থেকে আমাদের জন‍্য শীত নিবারণের গরম কাপড় দাবি করছি।স্থানীয় কৃষক পলাশ বলেন, শীতের কারণে  আজ ক্ষেতে যেতে পারিনি। ঘর থেকে বাইরে বের হওয়া কষ্টকর। আমাদের মতো বয়স্কদের কাছে শীত বেশি মনে হয়। হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে। তাছাড়াও সূর্যের আলো না থাকায় বরো ধানের বীজতলা তৈরি এবং চারা গজানো নিয়ে বিপাকে আছি।ঠাণ্ডাজনিত রোগের ওষুধ বিক্রির ব‍্যপারে বদলগাছী চারমাথা মোড়ের ঔষধ দোকানি মামুন জানান, বিকেল হলেই দোকানে শিশুদের ঠাণ্ডা-কাঁশির ওষুধ নিতে ভিড় পড়ে যায় মায়েদের। গত কয়েক দিনে ঠাণ্ডাজনিত রোগের ওষুধ বিক্রি বেড়েছেবদলগাছী আবহওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাহবুবুল আলম জানান,  গতকালের চেয়ে তাপমাত্রা বেড়েছে আজ ১২.৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।তাপমাত্রা বাড়লেও  কুয়াশা ও শৈত‍্যপ্রবাহ বেড়েছে।কুয়াশা বেশি থাকায় সূর্যের দেখা কালও না মিলতে পাড়ে। সাথে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা থাকবে এবং  মাঝে মাঝারি শৈত‍্য প্রবাহ বয়বে।উপজেলা কৃষি অফিসার সাবাব ফারহান জানান,সূর্যের আলো না থাকায় ফসলের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বোরো ধানের বীজতলা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া ঠান্ডার কারণে কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা মাঠে কাজ করতে পারছে না। এ রকম কুয়াশা ও ঠান্ডা আর কয়কদিন থাকলে ফসলের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।ঠান্ডাজনিত রোগের ব‍্যপারে জেলা সিভিল সার্জন ড.নজরুল ইসলাম জানান, ঠাণ্ডা বাড়লে কিছু কিছু রোগ বাড়বে। শীত যত বাড়লে রোগ বাড়বে। শুধু হাসপাতাল না সকলকেই সাবধান থাকতে হবে। আমরা সর্বাত্বক সহযোগিতা করছি। আপনাদের মাধ্যমে একটা ম‍্যাসেজ দিতে চাই “বিশেষ করে শীতের সময়  শিশুদের যেন  ঠাণ্ডা না লাগায় আর বয়স্কদের জন‍্য বিশেষ যত্ন নেয়।এ ব‍্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব আলম জানান, বদলগাছীতে শীতের প্রকোপ একটু বেশি আমি ত্রান ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তার সাথে শীতার্তদের জন‍্য গরম কাপড় বরাদ্দের ব‍্যপারে কথা বলেছি।আমরা দ্রুতই সাধারণ ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের জন‍্য গরম কাপড় বিতরণ করবো।