গোপালগঞ্জে বিআরটিএ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৬:৩০ অপরাহ্ণ, মে ৬, ২০২৫

শেখ ফরিদ আহমেদ।।

০৭-০৫-২০২৫ গোপালগঞ্জ বিআরটিএ অফিসে দুদক জেলা কার্যালয় গোপালগঞ্জ কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করা হয়। শুরুতে সকাল ১০.৩০ ঘটিকা হতে ১১.৩০ ঘটিকা পর্যন্ত সাদা পোষাকে গোপনে তথ্যানুসন্ধান করে বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য সংগ্রহ করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। অনিয়ম সমূহ নিম্নরূপ:
১. বিআরটিএ গোপালগঞ্জ অফিসে লাইসেন্স প্রদান, যানবাহন নিবন্ধন এবং ফিটনেস সনদ ইস্যুতে ঘুষ লেনদেন ও অনিয়মের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। বিগত ০১-১০-২০২৪ তারিখ হতে ৩০-০৪-২০২৫ তারিখ পর্যন্ত বিআরটিএ গোপালগঞ্জ অফিসে মোট ২৮৮৪ টি লাইসেন্স এর আবেদন জমা হয়। এর মধ্যে অনুমোদনের অপেক্ষাধীন রয়েছে ৬৭টি ও বাতিল করে আবেদনকারীকে ফেরত দেয়া হয়েছে ৪৭টি। বাতিল ও অপেক্ষাধীন আবেদনসমূহ যাচাই করা হচ্ছে ।
২. বিআরটিএ গোপালগঞ্জ অফিসের পত্র ইস্যু রেজিস্ট্রারে ব্যাপক অনিয়ম পাওয়া গেছে। পত্র ইস্যু রেজিস্ট্রারে অসংখ্য নম্বর ফাকা রাখা হয়েছে যা ভবিষ্যতে ব্যবহার করে দুর্নীতি করার জন্য ।
৩. সরেজমিনে তথ্যানুসন্ধানকালে মো: রেজাউল ইসলাম দুখু নামীয় ব্যক্তি তার লার্ণার আবেদন বাতিল করার জন্য আবেদন করলে তাকে আগামী সপ্তাহে আসতে বলা হয়। দুদক টিমের নিকট তিনি তৎক্ষনাৎ অভিযোগ করলে দায়িত্বরত সহকারী পরিচালক ৫ মিনিটে কাজটি করে দেন।
৪. জনৈক রেজাউল হাসান এর নিকট থেকে মালিকানা পরিবর্তন বাবদ ৬০০০/- টাকা স্থানীয় দালাল গ্রহণ করেছেন মর্মে জানা যায়। যেখানে সরকারী ফি ৩০০০/- থেকে -৩৫০০/-। স্থানীয় কম্পিউটারের দোকানের কর্মচারী আব্দুর রহিমের সাথে বিআরটিএ অফিসের কর্মচারীদের যোগসাজশে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটছে মর্মে প্রতিয়মান হয়েছে।
৫. অভিযান পরিচালনাকালে দেখা যায় উক্ত অফিসের উচ্চমান সহকারী জনাব শরিফুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ থাকার পরও তিনি বিগত ০১-১২-২০১৬ তারিখ হতে দীর্ঘ ৯ বছর নিজ জেলায় একই কর্মস্থলে চাকুরী করছেন।
৬. বিআরটিএ গোপালগঞ্জ অফিসের অফিস সহায়ক জনাব ইয়াসিন শেখ এর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারী দুদক কর্তৃক আয়োজিত গনশুনাণীতে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হলে কমিশন কর্তৃক তাকে বদলীর সুপারিশ করা হয়। তৎপ্রেক্ষিতে তাকে বদলী করার জন্য সহকারী পরিচালক পত্র প্রেরণ করলেও অদ্যাবদি তিনি একই কর্মস্থলে থেকে অনিয়ম করেই যাচ্ছেন।
৭. অপর অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মো: লিখন শেখ ১৬ তম গ্রেডে চাকুরী করে গ্রামের বাড়ি নড়াইল হলেও পরিবারসহ খুলনায় বসবাস করেন। প্রতিদিন গোপালগঞ্জ হতে খুলনা যাতায়াত করে। খুলনায় বাড়ি, নড়াইলে জমি, ব্যক্তিগত গাড়িসহ নামে বেনামে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন মর্মে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে, তার একাধিক স্ত্রী রয়েছে মর্মেও তথ্য পাওয়া গেছে।
৮. গোপালগঞ্জ বিআরটিএ অফিসের সহকারী পরিচালক পদটিতে বাগেরহাট জেলার সহকারী পরিচালক অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তিনি সপ্তাহে ১ দিন অফিস করেন বিধায় জনগণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি নিয়মিত অফিসে না থাকার সুবাদে অফিসের কর্মচারীগণ দালালদের সাথে মিশে একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে জনভোগান্তি তৈরী করছেন।
উক্ত অনিয়মসহ সংগৃহীত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিস্তারিত প্রতিবেদন দুদক প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে। প্রতিবেদনে অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হবে। পরবর্তীতে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।