কেন্দুয়ায় ধর্মের বোনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৬:২৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২৫
কোহিনূর আলম ।।
বিধবা ও সন্তান-সন্ততিহীন আনোয়ারা বেগম (৬০) কিডনি সমস্যায় ভুগছেন দীর্ঘদিন যাবত । এর উপর তিনি তাঁর ধর্মের বোন সাফিয়া (৪৭) দ্বারা বিভিন্ন দমকি হুমকিতে নিরাপত্তাহীন দিনাতিপাত করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে ।
সরেজমিনে গেলে, নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের মাচিয়ালী গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম এ অভিযোগ করেন । বর্তমানে তিনি পার্শ্ববর্তী গড়াডোবা ইউনিয়নের জনতা বাজারে বসবাস করছেন ।
জানা যায়, বহুকাল আগে আনোয়ারা বেগম (৬০) একটি হত্যা মামলায় জেলে যান । ওখানেই পরিচয় ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার সুন্দাইল গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে কিশোরী সাফিয়ার সাথে । তাঁদের মধ্যে গড়ে ওঠে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক । এরপর একে অপরের ধর্মের বোন হিসেবে এক সাথে কাটে দীর্ঘ প্রায় ৩০/৩৫ বছর । আনোয়ারা আপন বড় বোনের দায়িত্ব নিয়ে সাফিয়াকে বড় করে তোলে । সাফিয়ার বাউল গানের প্রতি আসক্ত থাকায় – তাকে গানের শিক্ষক দিয়ে তালিম দেয়া থেকে শুরু করে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন । কিন্তু সাফিয়া কয়েক বছর যাবত তার খেয়াল খুশি মতো চলতে থাকে । নিজেকে জড়িয়ে ফেলে সামাজিক বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের সাথে । যেমন -জুয়া খেলা, আজে-বাজে ছেলে -মেয়ের সাথে আপত্তিকর মেলামেশা ইত্যাদি । যদিও এরিমধ্যে আনোয়ারা জনতা বাজারে প্রায় ৩শতাংশ ও মাচিয়ালীতে ১শতাংশ কম ৪কাঠা জায়গাও লিখে দেয় তার ধর্মের বোন সাফিয়াকে । এরপরও সমস্যা বাধে জনতা বাজারে একখন্ড জমিতে আবাসস্থল ও একটি মাদ্রাসা গড়ে ওঠাকে কেন্দ্র করে । যা আনোয়ার জীবনের শেষ সম্বল ।
ভুক্তভোগী আনোয়ারা বেগম ও জনতা বাজারের স্থানীয় সূত্রে উল্লেখিত এ সব তথ্য মিলে । আনোয়ারা বেগম আরো বলেন, আল্লা ছাড়া আমার কেউ নেই । সাফিয়া আমাকে ঘর থেকে প্রায়শই বের করে দিতে চায় । মামলা হমলার ভয় দেখায় । আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি ।  আমি ন্যায় বিচার চাই ।
মাসকা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জহিরুল হক স্বপনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে এর আগে দরবার শালিসি হয়েছে । জায়গা জমির মালিক আনোয়ারা । সে অসহায় ও বৃদ্ধ মানুষ । তিনি আরো বলেন, সাফিয়া বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ।
সাফিয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, জায়গাটা আমার নামে লিখে দেয়ার কথা ছিলো দেয় নাই  । বাজারের ঘরটি আমি নির্মাণ করেছি । তাই আমার পাওনা আছে । অন্যদিকে আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা । তিনি আরো বলেন, আনোয়ার ভয়ে আমি ৭দিন যাবত বাড়ির বাইরে । আমি মামলায় যাবো ।
গড়াডোবা ইউনিয়নের স্থানীয় মেম্বার মোঃ আনিছুর রহমান মুঠোফোনে জানান, সাফিয়ার কিছু দাবি আছে । কিন্তু আনোয়ারা তৎকালীন আওয়ামী লীগের কিছু নেতাদের যোগ সাজশে তা পূরণ করে নি । তাছাড়া ঘর নির্মাণের যাবতীয় খরচও সে করেছে -বলে সাফিয়া আমাদের জানিয়েছে । সবমিলিয়ে একাধিক দরবারেও তাদের দ্বন্দ্ব শেষ করা যায় নি ।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে অবগত হয়েছি । লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে ।