অনলাইনে পণ্য বিক্রির নামে প্রতারণার ফাঁদ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৬:৩২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২৫

 এস এম জামাল ।। 

বিডি অনলাইন সেল ফেসবুক পেইজ এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পণ্য বিক্রির নামে গ্রাহকদের প্রতারণা ফাঁদে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব প্রতারণার ফাঁদে পড়ে টাকা খোয়াচ্ছেন উঠতি বয়সী ও কিশোর-কিশোরীরা।
এ অবস্থায় ভুয়া অনলাইন পণ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
অনলাইনে পণ্য বিক্রির এসব প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথমে ক্রেতাদের জানায়, অর্ডার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঠিকানায় অর্ডারকৃত মালামাল পৌঁছে দেওয়া হবে। অর্ডার করার পূর্বে অগ্রিম টাকাও নেয় তাঁরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নানা টালবাহানা করে পণ্য আর পৌঁছে দেয় না। এসব ঘটনায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উদাসীনতা রয়েছে বলেও ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে এসব অনলাইনে পণ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা বলেন, আগে টাকা পাঠান। তারপরে পণ্য দেওয়া হবে।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন, বুকিং বাবদ টাকা পাঠালে মালামাল আর পাওয়া যায় না। পরে কল দিলে এই পাঠাচ্ছি, আজ নয় কাল এমন বলে ঘোরাতে থাকে। এভাবেই চলছে বিডি অনলাইন সেল সোশ্যাল মিডিয়ার অনলাইন মার্কেটিং।
ভুক্তভোগী ইরিন জামান নামের এক নারী বলেন, ‘আমি ‘বিডি অনলাইন সেল ’ নামের একটি অনলাইনে পণ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞাপন দেখে ৩০৪ পিছ এর বড় এক ডিনার সেট অর্ডার করি। যার মূল্য ৩ হাজার ৫৯৯ টাকা। তাঁরা বলে বুকিং করতে হলে অগ্রিম ৫৬০ টাকা বিকাশে দিতে হবে। সেই মোতাবেক আমি তাদের একটি নম্বরে ৫৬০ টাকা পাঠাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরের দিন আমার মোবাইল ডেলিভারি দেওয়ার কথা। যথাসময়ে পরদিন সকাল ১১টার সময় একটি নম্বর থেকে আমার নম্বরে সজিব পরিচয় দিয়ে একজন কল দেন। তিনি বলেন, আমি কাশিয়ানী কাঁচা বাজার এলাকায় এসেছি। আপনি বাকি টাকা’টা আমাদের অনলাইনের ওই নম্বরে পেমেন্ট করে আমার সঙ্গে দেখা করুন। তারপর আমি আপনার ৩০৪ পিছ এর বড় ডিনার সেট দেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন আমি কারণ জানতে চাইলে তাঁরা বলে এটা একটি এন্ট্রি কোড দিয়ে কুরিয়ার থেকে পণ্য নিতে হয়, এন্ট্রি কোড ছাড়া কুরিয়ার পণ্য দেয়া না। তাই আপনি টাকাটা পেমেন্ট করে এন্ট্রি কোডটা আমাকে বলবেন। আমি টাকা পাঠানোর পর আমার কাছে কোনো এন্ট্রি কোড আসেনি। আর পরিশোধ করা টাকাও ফেরত পাইনি। শুধু আমি একাই নই। আমার এলাকার ইলমা, আক্তারুল, ইমরান, অজিত রায়সহ বেশ কিছু বন্ধুরা এসব অনলাইন মার্কেটিংয়ের প্রতারণার শিকার হয়েছেন।’
এ বিষয়ে ‘বিডি অনলাইন সেল ’ কোম্পানির কর্মকর্তা মোর্শেদুর হাসান ওরফে (রায়হান) কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল দিয়ে তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে কাশিয়ানী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনমুন পাল বলেন, ‘এসব অনলাইন প্রতারকদের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম আইনে মামলা করা যেতে পারে। যদি কোনো ব্যক্তি অভিযোগ দেয় সে ক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘দেশে প্রতারক চক্রের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদের নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন। তারপরও আমরা বসে নেই। এসব চক্রের সদস্যদের তদন্ত সাপেক্ষে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে। ভুক্তভোগীরা আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে অবশ্যই তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।