উলিপুরে কালভার্ট ভে‌ঙে ফেলায় ৮ গ্রামের মানুষের দর্ভো‌গ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২:৪৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২৪

মোঃ রেজাউল ইসলাম

উলিপুরে এক‌টি রিং কালভার্ট ভেঙে ফলায় চরম দুর্ভো‌গের শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বা‌সিন্দারা। প্রায় ৬ মাস আগে নতুন ব্রিজ করার কথা বলে কালভার্টটি ভেঙে ফেলা হ‌য়। শুষ্ক মৌসুমে খানাখন্দ পা‌রি দিয়ে যাতায়াত করা গেলেও, বর্ষা মৌসুমে সীমাহীন দুর্ভো‌গে পড়েছেন ওই পথে যাতায়াতকারী ৮ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ।

জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে জাইকার অর্থায়নে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস বর্ধিতকরণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের অধীনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় সড়কের মাটি ভরাট, প্রশস্ত ও এইচবিবির কাজ হা‌তে নেওয়া হয়। এ ল‌ক্ষ্যে গত ২০২২ সালের ২৪ মে সড়‌ক উন্নয়ন কা‌জের উদ্বোধন করা হয়। হাতিয়া ইউনিয়নের দাঁড়ারপাড় সবদুলের মোড় হতে মণ্ডল পাড়া হয়ে রিয়াজ উদ্দিন সরকা‌রের বা‌ড়ির সামন পর্যন্ত ৩৩০০ মিটার রাস্তার কাজ শুরু হয়।

এক‌টি সূত্র জানায়, কাজ‌টি পান নোয়াখালীর মোস্তফা অ্যান্ড সন্স নামে এক‌টি ঠিকাদা‌রি প্রতিষ্ঠান। পরে সাব ঠিকাদা‌রি নেন স্থানীয় এক আওয়ামী লী‌গ নেতা। কাজের শুরু থেকে নানা অ‌নিয়মের অ‌ভিযোগ থাকলেও দা‌য়িত্বরত ব্যক্তিদের ভূ‌মিকা দায়িত্বহীন।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাতিয়া ভবেশ বগাপাড়া এলাকায় নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রায় ২২ বছ‌র আগের পু‌রোনো এক‌টি কালভার্ট ভেঙে ফেলা হয়। সেখা‌নে ৮-১০ ফুট গর্ত করা হয়। কালভার্ট ভে‌ঙে ফেলা হ‌লেও মানু‌ষের চলাচ‌লের জন্য কো‌নো সং‌যোগ সড়ক করা হয়‌নি। স্থানীয়‌দের উদ্যো‌গে অ‌ন্যের জ‌মি দি‌য়ে রাস্তা তৈ‌রি করা হয়। কিন্তু বর্ষা মৌসু‌মে কোমর সমান পা‌নি হওয়ায় দু‌র্ভো‌গের শিকার হ‌চ্ছেন পথচা‌রীরা।

স্থানীয় বাসিন্দা খয়বর আলী (৬৫), জোবেদ আলী (৬০), মোশারফ হোসেন (৫৫), হায়দার আলী (৪৫) সহ একা‌ধিক বা‌সিন্দা জানান, ব্রিজ নির্মা‌ণের জন্য পূ‌র্বের কালভার্ট‌টি ভে‌ঙে ফে‌লে ঠিকাদা‌রের লোকজন উধাও হয়ে যায়। বর্ষা মৌসু‌মে স্কুল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ মানুষজ‌নের চলাচ‌লে দু‌র্ভোগ হ‌য়ে‌ছে। কেউ অসুস্থ হলেও এই পা‌নি পা‌ড়ি দি‌য়ে যে‌তে হয়।

তারা আরও জানান, উচাভিটা, বগাপাড়া, মণ্ডলপাড়া, ওলামাগঞ্জ, ঘোলদার পাড়সহ কয়েক গ্রামের মানুষ বগাপাড়া ঈদগাহ মাঠে প্রতিবছর ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই মাঠে আসার একমাত্র রাস্তা এটি। এ অবস্থায় আসন্ন ঈদুল আযহার নামাজে মুসল্লিরা এই মা‌ঠে আস‌তে পার‌বেন না ব‌লেও জানান তারা।

হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শায়খুল ইসলাম নয়া বলেন, আমি ব্রিজটি নির্মাণের জন্য ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। খুব শীঘ্রই ব্রিজের কাজ শুরু করবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে উপ‌জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজু‌দ্দৌলার ব‌লেন, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া জাইকা প্রকল্পের কা‌রও স‌ঙ্গে যোগা‌যোগ করা সম্ভব হয়‌নি।

কু‌ড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হাই সরকার ব‌লেন, প্রক‌ল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় পূণরায় মেয়াদ বৃ‌দ্ধি করা হ‌য়ে‌ছে। শু‌নে‌ছি সে‌টিরও মেয়াদ প্রায় শে‌ষের দি‌কে। প্রকল্প‌টি ঢাকা থে‌কে ম‌নিট‌রিং করায় আমা‌দের কা‌ছে তেমন তথ্য নেই। ত‌বে জনদু‌র্ভো‌গের বিষয়‌টি স্থানীয় চেয়ারম্যানের সমন্ব‌য়ে সে‌টি নিরসন করা দরকার। কেননা সং‌শ্লিষ্ট চেয়ারম্যানরা এই প্রক‌ল্পের সঙ্গে জ‌ড়িত।