দেশে খাদ্যশস্য ঘাটতির শঙ্কা

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১:৩১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪

জেমস রানা বিশ্বাস।।দেশে খাদ্যশস্য ঘাটতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে খাদ্যশস্যের মজুত দিয়ে সরকার সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যাবে পারবে কিনা, তা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা সংশয়ে আছেন। এর কারণ গত বছর এ সময়ে সরকারি গুদামে যে পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত ছিল, চলতি বছর একই সময়ে তার চেয়ে প্রায় ৪ লাখ টন চাল-গম কম মজুত রয়েছে। জানা গেছে, দেশে উৎপাদিত মোট চালের কমবেশি ৪০ শতাংশ চালই আসে আমন থেকে। খাদ্যে উদ্বৃত্ত থাকা ময়মনসিংহ অঞ্চলসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় অনেক জমির আমন ধান নষ্ট হয়েছে। এর প্রভাব দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় পড়বে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। তাই এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে সঠিক সময়ে বাজারে চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ না নিলে দেশে খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও মনে করছেন, বর্তমান মজুত দিয়ে সংকট মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে। তাদেও মতে, স্থানীয় হোক কিংবা আন্তর্জাতিক উৎসই হোক, চাল-গম সংগ্রহ করে এখনই খাদ্যশস্যের মজুত বাড়ানো জরুরি। অন্যথায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিগুলো চালিয়ে নেওয়া কঠিন হবে। বর্তমানে সরকারি গুদামে চাল ৯ লাখ টন এবং গম ৪ লাখ টন অর্থাৎ ১৩ লাখ টন মজুত রয়েছে। গেল বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ১৭ লাখ টন। অবশ্য খাদ্য সচিব সংকট হবে না বলেই আশ্বস্ত করেছেন। পরিস্থিতি উপলব্ধি করে ইতিমধ্যেই সরকার চালের আমদানির ওপর থেকে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে, বেসরকারিভাবে ২ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫০ হাজার করে পৃথক দুটি দরপত্রে এক লাখ টন গম আমদানির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। ফলে দেশে গমেরও কোনো সংকট হবে না বলে মনে করছে সরকার। তবে শুল্ক-করমুক্ত সুবিধায় চাল আমদানি করা হলে বাজারে চালের দাম কিছুটা কমবে। তবে আমদানির পরিমাণ বা নির্ধারিত সময় বেঁধে দিতে হবে। এটি না করলে দেশের কৃষকরা নিরুৎসাহ হবেন। সরকার জিটুজি পদ্ধতিতে স্বচ্ছতার সঙ্গে চাল আমদানি করে তা খোলাবাজারে বিক্রি করতে পারলে ভালো হব খাদ্যশস্য সংকট নিরসেন দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হলে যে সংকট এড়ানো সম্ভব। এবং এজন্য জরুরি ভিত্তিতে মজুত বাড়াতে হবে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনে চাল আমদানির বিষয় তো আছেই, পরবর্তী বছরগুলোয় এমন পরিস্থিতি যাতে না হয়, সেজন্য আগাম চিন্তা-গবেষণায় মনোযোগ দিতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগর্তির এই সময়ে সাধারণ মানুষ এমনিতেই কঠিন অবস্থায় আছে এরমধ্যে খাদ্যশস্য সংকট হলে তাদের বিক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে। আমরা আশা করব সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।