কেন্দুয়ায় ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবির অভিযোগে মামলা

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৬:৫৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪

কোহিনূর আলম,কেন্দুয়া। নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় স্বামী, ভাসুর ও ননাসের দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের এবং ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে এক ভুক্তভোগী নারী ।

এ ঘটনায় রোববার (১১ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ভুক্তভোগী ঐ নারী থানায় লিখিত অভিযোগ করলে রাতেই তা নথিভুক্ত হয় বলে জানায় তদন্ত কর্মকর্তা । অভিযোগে স্বামী রিয়াজ আহমেদ সিরাজ (৪০), ভাসুর অলি উল্লাহ (৪৫) ও ননাস (স্বামীর ভগনী) শিল্পী আক্তার (৪৭) কে যথাক্রমে আসামী করা হয়েছে ।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারী) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের কচন্দরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে । আরো জানা যায়, ভুক্তভোগী রুনা আক্তার উপজেলার বান্দনাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক । তাঁর বাবার বাড়ি নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নে । দাম্পত্যজীবনে তাঁর এক পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে । বর্তমানে তিনি কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন ।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা রুনা আক্তার বলেন , বিয়ের পরে এ পর্যন্ত বাপের বাড়ি থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা এনে দিয়েছি তাকে । চাকুরী বেতনের টাকা সে ভোগ করে । ৪ লাখ টাকা লোন তুলে দিয়েও তার মন পাইলাম না । এরপরও বাপের বাড়ি থেকে আরো ১০ লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্যে চাপ সৃষ্টি করে রিয়াজ (স্বামী) । ঘটনার দিন টাকার জন্য আবার চাপ দিলে আমি টাকা এনে দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমার প্রতি প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে বেধড়ক মারপিট করে আমার স্বামী, স্বামীর বড় ভাই ও বোন । তিনি আরো বলেন, আমাকে তারা লোহার রড দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করে । আমি এদের অত্যাচার ও নির্যাতনে অতিষ্ঠ । আমি প্রশাসন ও সচেতন মহলের সহযেগিতা এবং সুষ্ঠু বিচার বিচার দাবি করি ।

দম্পতির ছেলে রেজোয়ান আহমেদ অপূর্ব (১০) বলে, আমার বাবা আমার মাকে মেরেছে ।বান্দনাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হামিদুর রহমান আকন্দ বলেন, মারামারি বা যৌতুকের বিষয়ে আমার জানা নেই । রুনা আক্তার শারীরিকভাবে অসুস্থ শুনেছি । তাই তিনি দু’দিনের ছুটিতে আছেন ।

রিয়াজ আহমেদ সিরাজ (৪০) বলেন, আমার ও আমার ভাই -বোনদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে । মূল ঘটনা হচ্ছে আমার বড় ভাইয়ের গাছ কাটার সময়গাছের ডাল পড়ে আমার গোয়াল ঘরের চালের সামান্য ক্ষতি হলে এ বিষয়ে ঝগড়াঝাটি হয় । তিনি আরো বলেন, ১৩ বছর আগে প্রথমে প্রেম ও পরে পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয় । তাছাড়া তাঁর বেতনের টাকা আমাদের পরিবারেই খরচ করা হয় । যৌতুক চাওয়ার প্রশ্নই আসে না । তদন্ত ছাড়া অভিযোগ কিভাবে এফআইআর হয় এ জিজ্ঞাসাও করেন রিয়াজ । অলি উল্লাহর স্ত্রী হোসনা আক্তার বলেন, আমার স্বামী ঘটনার সময় ছিলো না । তবুও তাঁর নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে ।

একই গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসমিনা আক্তার বলেন, শুনেছি গাছের ডাল পড়ে গোয়াল ঘরের চাল ভাঙ্গার ঘটনায় ঝগড়া হয়েছে । যৌতুকের বিষয় জানি না ।এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার এসআই ( তদন্ত কর্মকর্তা) মোঃ ইমরান জানান, তদন্ত অব্যাহত আছে । তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনি ব্যাবস্থা নেয়া হবে । তদন্ত ব্যতিরেখে অভিযোগ এফআইআর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে এফআইআর হয় না । কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নতা রয়েছে ।