হাতিয়ায় আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপি, বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগ দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১:০৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫ ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপির পক্ষ থেকে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে দলীয়ভাবে কঠোর অবস্থান নিলেও নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সুযোগ সন্ধানী কিছু আওয়ামী লীগ নেতাদের বিএনপিতে পুনর্বাসন করার অভিযোগ উঠেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রঙ বদলে বিএনপিতে ভেড়ার চেষ্টা করেছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের নেতারা। এই তালিকায় আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের কমপক্ষে কয়েক ডজন নেতাকর্মী রয়েছেন। এ ঘটনায় বিএনপির স্থানীয় নেতারা ছাড়াও তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম বুড়িরচর ইউনিয়নের আশিকুল ইসলাম নোমান, তমরদ্দি ইউনিয়নের এনায়েত, জাহাজমারা ইউনিয়নের জসীম মেম্বার সহ কয়েক ডজন আওয়ামী লীগ নেতা। এর মধ্যে কয়েক ডজন নেতা রয়েছেন যারা বিএনপি করেও আওয়ামী লীগ থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন, এখন আবার বিএনপির কিছু নেতা কর্মীকে ম্যানেজ করে বিএনপিতে যোগদানের চেষ্টা করছেন। সাম্প্রতি জেলা বিএনপির সদ্য নির্বাচিত সদস্য সচিব হারুনুর রশীদ আজাদের সাথে আওয়ামী লীগ নেতাদের একাধিক ছবি তুলে ফেসবুকে শেয়ার দেয়ায় বিএনপিতে অনুপ্রবেশের বিষয়টি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নজরে আসে। এতে বিএনপি নেতারা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। এই নিয়ে উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। জানা যায়, ৮ আগস্ট বিএনপির পক্ষ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করা হয়। ওয়ার্ড থেকে জাতীয় পর্যায়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কোনো কমিটিতে অন্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী বা অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে যোগদান করানো যাবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নির্দেশনাই এখন মানছেন না অনেকে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের নেতারা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খোলস পাল্টে বিএনপিতে ভিড়ছেন বলে অভিযোগ উঠছে। তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ কেউ সুবিধা নিয়ে এসব অনুপ্রবেশকারীকে দলে ভেড়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। বিএনপির সূত্রমতে, দলীয় নির্দেশনা অমান্য করার পাশাপাশি নানা অনিয়মের অভিযোগে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০-এর বেশি নেতার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ব্যবস্থা নিলেও অনুপ্রবেশ থামানো যাচ্ছে না। তাই দলের শৃঙ্খলা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় ‘কঠোর নীতি’ বাস্তবায়নের পথে হাঁটতে হচ্ছে বিএনপিকে। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপিতে ঠিক কতজন অনুপ্রবেশ করেছেন, কাদের হাত ধরে দলে তারা ঢুকেছেন তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরে। বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন ‘আওয়ামী লীগের লোকজন এখন বিএনপির নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে অনুপ্রবেশ করতে চাইছেন। কারা দলে আসতে চাইছেন তাদের পরিচয় জানতে হবে। কারা এদের দলে অনুপ্রবেশ করাচ্ছেন তাও দেখতে হবে। তৃণমূলের কর্মীরা সাধারণত জায়গা দিতে চান না, এদের সুযোগ করে দেন বড় বড় নেতারা। পদ-পদবিও পাইয়ে দেন অনেকে। আবার কেউ কেউ আওয়ামী লীগের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনকে শেল্টার দিচ্ছেন বলে আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে।’ বলেও জানান বিএনপি নেতা। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ আগস্টের আগে আন্দোলন মিছিল মিটিংয়ে করার জন্য যারা আমাদেরকে বাঁধা দিয়েছেন তারাই এখন সামনের সারিতে অবস্থান করছেন এবং কেন্দ্রীয় ও জেলা কমিটির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করছেন জানান দিচ্ছেন তারা বিএনপির ত্যাগী নেতা। এসব বিষয়ে আশিকুল ইসলাম নোমান বলেন, আমি কখনোই আওয়ামী লীগে যোগদান করিনি, বিএনপি করার কারনে আমার পরিবার, ব্যবসা বানিজ্য, মেম্বারি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। বিএনপি করার কারনে আমি ২৩ টা মামলার আসামি হয়েছি, আমার দোকান ও হোন্ডা পুড়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলো বুড়িরচর ইউনিয়নবাসী জানে। নতুন করে বলার কিছু নেই। আমার দুর্দশা দেখে আমার বাবা হার্ট অ্যাটাক করে মারা যায় তবুও আমি আওয়ামী লীগে প্রবেশ করিনি। হ্যাঁ আমার জীবন বাঁচাতে একদিনের জন্য মোহাম্মদ আলীর কাছে যেয়ে সালাম বিনিময় করে চলে এসেছি। আমি কখনোই তারেক জিয়ার আদর্শ থেকে দূরে সরে যাইনি। আছি থাকবো আজীবন। এই বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক তানভীর উদ্দিন রাজিবকে বারবার মুঠোফোনে এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিলেও তিনি তা রেসপন্স করেন নি। এই বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি একে এম ফজলুল হক খোকন বলেন, আশিকুল ইসলাম নোমান সহ যাদের নাম আপনি বলেছেন সবার বিষয়ে আমরা অবগত রয়েছি এবং কারা বিএনপিতে তাদেরকে প্রবেশ করাতে যাচ্ছে আমারা তাদেরকে দলীয় ভাবে পদক্ষেপ নিব। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ আমাদের ও একই নির্দেশ। সেই নির্দেশ মেনেই কাজ করে যাচ্ছি। এই বিষয়ে নোয়াখালী জেলা বিএনপি সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ আজাদের মতামত নিতে হোয়াটসঅ্যাপে ও অফলাইনে কল দিলেও তিনি তা রেসপন্স করেন নি। এই বিষয়ে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবদুর রহমান বলেন, যারা আওয়ামী লীগের লোকজনকে পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে বিএনপিতে তাদের জায়গা নেই এটা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ আমারও একই নির্দেশ। SHARES জাতীয় বিষয়: