আকিকার দাওয়াত নিয়ে সংঘর্ষ, জামাতা-শ্বশুরসহ আহত ৯।

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫
দিনাজপুরের বিরামপুরে আকিকা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথির সংখ্যা নিয়ে জামাতা ও শ্বশুরপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৯ জন আহত হন। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে আছেন— সুমন হোসেন (২৫), তাঁর বাবা সোলায়মান হোসেন, মা আকতারা বেগম, ছোট বোন উম্মে হাবিবা, মামা রাশেদুল ইসলাম ও আবু সাঈদ। সুমনের শ্যালিকা ইয়াসমিন আক্তার, তাঁর বন্ধু হাবিবুর রহমান, আরিফুল ইসলাম ও আল রিমন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কেশবপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমন হোসেন তাঁর নবজাতকের আকিকা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। ব্যয় কমানোর জন্য শুক্রবার স্থানীয় বাজার থেকে দুটি ছাগল কেনা হয়। বিষয়টি সুমনের স্ত্রী ফোনে তাঁর বাবাকে জানান। কিন্তু শ্বশুর মো. অছিম উদ্দিন অনুষ্ঠান বড় পরিসরে আয়োজনের পরামর্শ দেন এবং কিছু টাকা দিয়ে মাংস কিনে অতিথি সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলেন। জামাতা সুমন আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে এতে রাজি না হলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সুমন তাঁর স্ত্রীর গায়ে হাত তোলেন। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে শ্বশুর অছিম উদ্দিন ক্ষুব্ধ হয়ে ৩০-৩৫ জন ভাড়া করা লোক নিয়ে জামাতার বাড়িতে হামলা চালান। হামলা, পাল্টা হামলা ও পুলিশের হস্তক্ষেপ জামাতা সুমন অভিযোগ করেন, আমার স্ত্রীকে মারধরের বিষয়টি জানার পর শ্বশুর লোকজন নিয়ে এসে আমাদের বাড়িতে হামলা চালান। এতে আমার পরিবারের সদস্যরা আহত হন এবং ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষের সময় সুমনের মা চিৎকার করলে প্রতিবেশী মো. আমানুর রহমান ৯৯৯-এ কল করে পুলিশকে খবর দেন। এরপর গ্রামের মসজিদের মাইকে প্রতিহতের ঘোষণা দেওয়া হলে স্থানীয়রা সংঘর্ষ ঠেকাতে এগিয়ে আসেন। এ সময় তিনজন ভাড়াটে যুবককে গ্রামবাসী আটক করে। পরে পুলিশ এসে তাদের মুচলেকা নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শ্বশুর মো. অছিম উদ্দিন বলেন, আমার মেয়ে মাত্র চার দিন আগে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দিয়েছে। আকিকার আয়োজন ছোট পরিসরে করায় আমি কিছু অর্থ দিয়ে বড় করার প্রস্তাব দিই। কিন্তু জামাতা তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে অপমান ও মারধর করে। এরপর আমার আত্মীয়রা আসলে সংঘর্ষ বাধে। কেশবপুর জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. গোলাপ হোসেন বলেন, গ্রামের লোকজন মসজিদের মাইকে হামলাকারীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিতে বলেন, তাই আমি তা প্রচার করি। মুকুন্দপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা দুঃখজনক। স্থানীয় মুরুব্বিদের মাধ্যমে উভয় পক্ষকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যেন ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে। বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, “৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।