কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড বানারীপাড়ার বৈশাখী মেলা দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৬, ২০২৫ আছিবুল ইসলাম।। বরিশালের বানারীপাড়ায় নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত বৈশাখী মেলা উৎসবমুখর পরিবেশ থেকে মুহূর্তেই রূপ নেয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যে। হঠাৎ করে আঘাত হানা কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় মেলার স্টল, অস্থায়ী মঞ্চ এবং মেলার সামগ্রিক অবকাঠামো। প্রকৃতির এই আচমকা আঘাত যেন নববর্ষের আনন্দ-উৎসবকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে যায়। ১৪ এপ্রিল সোমবার, পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ বাংলা বর্ষকে বরণ করে নিতে বানারীপাড়া হাই স্কুল মাঠে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল বর্ণিল এক বৈশাখী মেলা। সকাল থেকেই নানা আয়োজন আর মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা মাঠ। মেলায় ছিল পিঠাপুলির আয়োজন, হস্তশিল্পের বাহারি পসরা, শিশুদের খেলনা, বেলুন, বই ও নানা পণ্যের দোকানসহ গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বায়েজিদুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোস্তফা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের কর্মকর্তারা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, অভিভাবক এবং অসংখ্য সাধারণ মানুষ। সবকিছুই চলছিল উৎসবমুখর পরিবেশে, কিন্তু দুপুর দুইটার দিকে আচমকাই আকাশ কালো হয়ে আসে। মুহূর্তের মধ্যেই শুরু হয় প্রচণ্ড বাতাস, বজ্রসহ ঝড়। শুরু হয় প্রবল কালবৈশাখী ঝড়, যা মেলার আয়োজনকে একেবারে তছনছ করে দেয়। শক্তিশালী ঝড়ে উড়ে যায় মেলার স্টলগুলোর ত্রিপল, ভেঙে পড়ে অস্থায়ী মঞ্চ। দোকানিদের মালামাল ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। অনেক দোকানি মালপত্রকে বাঁচাতে প্রাণপণে চেষ্টা করেন, কিন্তু অনেকেই ততক্ষণে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েন। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ জানান, ঝড়ের আগে কোনো ধরনের আগাম সতর্কতা বা পূর্বাভাস না থাকায় দোকানিরা সময়মতো প্রস্তুতি নিতে পারেননি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়াও, পরবর্তীতে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা ভাবছে প্রশাসন। এই বৈশাখী মেলা যেমন ছিল উৎসবের, তেমনি হয়ে উঠল এক শিক্ষা—প্রকৃতির অপ্রতিরোধ্য রূপের কাছে মানুষ আজও কতটা অসহায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, একদিনের ঝড় হয়তো ক্ষতি করেছে, ‘কিন্তু মানুষের সাহস ও সংস্কৃতি চর্চার মনোবল ভাঙতে পারেনি।’ নববর্ষের আশার আলো বুকের মাঝে নিয়েই আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বানারীপাড়ার মানুষ। SHARES সারা বাংলা বিষয়: