মিঠাপুকুরে শিক্ষার পবিত্রতা রক্ষায় এক কঠিন সত্যের মুখোম

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:০১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২৫

মো: সজল সরকার।।

মিঠাপুকুর উপজেলায় এবারের এসএসসি পরীক্ষায় নকল নিয়ে বেশ কিছু কেন্দ্রে উদ্বেগজনক অবস্থা তৈরি হয়েছে। আজ শঠিবাড়ী কেন্দ্রে পরীক্ষার পরিদর্শনে গিয়ে এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলাম। মানবিক বিভাগের এক শিক্ষার্থী মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সরাসরি নকল করছিল। হাতে-নাতে ধরে ফেলি। আজ তাদের ইতিহাস পরীক্ষা ছিল। এমন মানবিক বিষয়ের পরীক্ষাতেও কেউ নকল করে—ভাবতেই কষ্ট হয়। মোবাইল চেক করে নিশ্চিত হই, উত্তর সরবরাহ করছিল এডুকেয়ার এবং অনুশীলন কোচিং সেন্টারের দুইজন পরিচালক। মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে একের পর এক উত্তর পাঠাচ্ছিল তারা। অভিযোগ রয়েছে, এই কোচিংগুলো পরীক্ষায় অনৈতিক সুবিধা দেয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করায়। আজ নকলের মাধ্যমে হয়তো কিছু শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল করবে, কিন্তু এই মেধাহীন সাফল্য তাদের ভবিষ্যতের জন্য চরম অন্ধকারের ইঙ্গিত দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় কিংবা বাস্তব জীবনের প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রতি আহ্বান: এডুকেয়ার ও অনুশীলন কোচিং সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি যেন কোনোভাবে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে, তা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। কোনো শিক্ষক যদি এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকেন, তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। অভিভাবকদের প্রতি: আপনারা সন্তানকে কোচিংয়ে পাঠাচ্ছেন, কিন্তু শিক্ষা নয়, চুরি শিখতে পাঠাচ্ছেন। এই নকল করা জিপিএ-৫ দিয়ে কি হবে? একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন। সন্তানকে যখন অসৎ পথে এগোতে উৎসাহ দেন, তখন আপনারও লজ্জা পাওয়া উচিত। নৈতিকতা ও মানবিক দিক বিবেচনায়: একজন শিক্ষার্থীর ভুলের জন্য তার পুরো জীবন ধ্বংস করা উচিত নয়। তাই শিক্ষার্থীর ভিডিও প্রকাশ করলেও ব্লার (অস্পষ্ট) করেছি, যাতে সামাজিকভাবে অপমানিত না হয় এবং মানসিক চাপেও না পড়ে। ‘শিশুর মর্যাদা রক্ষা আইন’ এবং দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার নীতি অনুসরণ করে তথ্য প্রকাশ করেছি। এই পোস্টের উদ্দেশ্য কাউকে অপমান করা নয়, বরং চোখ খুলে দেয়া। যদি মনে করেন তথ্য মিথ্যা বা কারও মানহানি হয়েছে, আইনগত চ্যালেঞ্জ নিন, আমি প্রস্তুত। ব্যক্তিগত অনুভূতি: সবচেয়ে বড় কষ্টের জায়গা—আমি নিজেও এই কেন্দ্রের (স্কুলের) সাবেক ছাত্র। আজকের এই ঘটনা তুলে ধরে নিজেও লজ্জিত ও ব্যথিত। জানি না, আমার স্যাররা আজ আমাকে কীভাবে দেখবেন। হয়তো মন খারাপ করবেন। তবে আমি বিশ্বাস করি, অন্যায়ের সাথে আপোষ হয় না। স্যাররা যদি আমাকে ভুল না বোঝেন, যদি অন্তর দিয়ে ভাবেন—তাহলে বুঝবেন, আমি তাদের সম্মান রক্ষার লড়াই করেছি। স্যারদের কাছে বিনীতভাবে বলছি—আপনারা যদি কিছুটা কষ্টও পান, মাফ করে দিবেন। এই লড়াই শিক্ষার পবিত্রতা রক্ষার জন্য। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছোট্ট এক সাহসী চেষ্টা। “শিক্ষাকে পবিত্র রাখুন, নকলের বিরুদ্ধে সাহসের সাথে দাঁড়ান!”