সৌদিতে ১’শ প্রবাসীর বেতন আত্মসাৎ করে উধাও গোপালগঞ্জের মামুন, ভিডিও বার্তায় কাঁদছেন প্রবাসীরা দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৩:৫৮ অপরাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২৫ শেখ ফরিদ আহমেদ।। সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি শতাধিক রেমিট্যান্স যোদ্ধার কয়েক মাসের বেতন আত্মসাৎ করে গোপালগঞ্জের এক প্রতারক উধাও হয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে তিনি এখন আত্মগোপনে। প্রবাসীরা এখন টাকার অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এবং ভিডিও বার্তার মাধ্যমে দেশে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, অভিযুক্ত ব্যক্তি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব নিজড়া গ্রামের হান্নান শেখের ছেলে মামুন, যিনি সৌদিতে ‘সাগর’ ও ‘আব্দুল্লাহ’ নামে পরিচিত এবং AGC ও ACT নামক দুটি সাপ্লাইয়ার প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ছিলেন। তিনি সৌদি আরবে বিভিন্ন কোম্পানিতে বাংলাদেশের প্রায় ১০০ জন শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে তাদের মাসের পর মাস কাজ করিয়েছেন এবং মূল কোম্পানি থেকে বেতন আদায় করে নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। “মুখ বুঝে কাঁদছি, খাবারেরও টাকা নেই” সৌদি আরব থেকে পাঠানো ভিডিও বার্তায় প্রবাসীরা বলেন, “আমরা প্রতিদিন ১৪ ঘণ্টা কাজ করছি, অথচ মাস শেষে বেতন না পেয়ে পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। বাসা ভাড়ার টাকা জোগাড় করতে দেশে থাকা পরিবার থেকে ধার করে টাকা আনতে হয়েছে।” গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার শফিকুল ইসলাম বলেন, “AGC কোম্পানির মাধ্যমে সৌদির একটি সোলার প্লান্টে কাজ করতাম। তিন মাসের বেতন—প্রায় ৯ হাজার রিয়াল (বাংলাদেশি টাকায় ৩ লক্ষ)—মামুন আত্মসাৎ করেছে।” একই অভিযোগ করেছেন রাজবাড়ীর রেজাউল মল্লিক, গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ার তুহিন ও হানিফ শেখ, এবং নারায়ণগঞ্জের আরও একাধিক প্রবাসী। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রতারক মামুন কেবল একা নন—তার প্রতারণায় সহযোগিতা করেছে তার বোন জামাই আল-আমিন (সোহেল), স্ত্রী রিতু, ভাই সোহাগ, এবং শ্বশুর মনির মোল্লা। অভিযোগ রয়েছে, মামুন তার আত্মসাৎকৃত অর্থ দিয়ে ঢাকায় ব্যবসাও শুরু করেছে। মামুনের পাসপোর্ট নম্বর EM0326785, যেখানে ঠিকানা টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ উল্লেখ থাকলেও প্রকৃত বাড়ি সদর উপজেলার পূর্ব নিজড়া গ্রামে। প্রবাসীরা জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনি মদিনায় আত্মগোপনে রয়েছেন। প্রবাসীরা তাদের কষ্টে উপার্জিত অর্থ ফেরত ও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা বলেন, “আমরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করি। অথচ নিজেরাই বিদেশে এমন ভয়াবহ প্রতারণার শিকার হয়ে বাঁচার সংগ্রাম করছি।” এটি কেবল ব্যক্তিগত প্রতারণা নয়, বরং রাষ্ট্রীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা প্রবাসীদের বিরুদ্ধে এক গভীর অপরাধ। দ্রুত প্রশাসনিক তদন্ত এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে এমন ঘটনা ভবিষ্যতে রেমিট্যান্স প্রবাহ ও প্রবাসী আস্থায় বড় ধরনের আঘাত হানতে পারে। SHARES অপরাধ ও দুর্নীতি বিষয়: