হাতিয়া তমরদ্দি ফাজিল মাদ্রাসায় এখনো আওয়ামীলীগ পন্থী শিক্ষকদের দাফট

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১:৫৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫
নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায় তমরদ্দি ইউনিয়নে  অবস্থিত  তমরদ্দি আহমদিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা।
পুরনো এই বিখ্যাত বিদ্যাপিঠ বিগত ১৬ বছরে তাদের সুনাম ধরে রাখতে পারেনি। দীর্ঘদিন আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে কিছু শিক্ষক। কিছু শিক্ষক আওয়ামী দাফট দেখিয়ে করে যাচ্ছে ব্যবসা। ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট ক্ষমতা পরিবর্তন হওয়ার পর কিছু শিক্ষক গায়ে নব্য-জামায়াতের আবরণ ও কিছু শিক্ষক নব্য-বিএনপির আবরণ নিয়ে ক্ষমতার দাফট দেখিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী প্রতিষ্ঠানকে রাজনীতি মুক্ত করার জন্য জোর দাবী জানিয়ে যাচ্ছে।
কোন অদৃশ্য শক্তির বলে তারা এই দাফট দেখায় তা জনগণ বিভিন্ন সাংবাদিককে  তথ্য দিয়ে পরিষ্কার করে। অত্র মাদ্রাসার প্রভাষক আনাস তার নিজস্ব কর্মস্থলের কাজ গাফলতি করে দীর্ঘদিন হাতিয়া দ্বীপ কলেজ, হাতিয়া ডিগ্রি কলেজে ক্লাস করেন। তিনি হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি অধ্যাপক ওয়ালী উল্লাহ এর চাচাতো ভাই। তিনি হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। দীর্ঘদিন মাদ্রাসা গর্ভনিং বডিতে অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জোর খাটিয়ে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে  কমিটিতে থাকতেন। এখন তিনি নিজেকে বিএনপি পরিচয় দেন।
হাফেজ  নোমান, সহকারী শিক্ষক ( মাধ্যমিক শাখা)  বিশিষ্ট আলু ও পিঁয়াজ এবং আদা ব্যবসায়ী। তার বাজারে বড়ো আড়ৎ। মাদ্রাসা চলাকালীন সময়ে ক্লাস রেখে অধিকাংশ সময় উনি ওনার আলু,পিঁয়াজ এবং আদা আড়ৎতে থাকেন বলে জানায় এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।
হাফেজ নোমান আওয়ামী লীগের সাথে সমন্বয় করে বিভিন্ন মুজিব কেল্লার কাজ করে আয় করেন লাখ লাখ টাকা। তার আপন ভাতিজা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্য আমিরুল ইসলাম ( সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ) হাফেজ নোমান হাতিয়া উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মুহিউদ্দিন মুহিন এর ঘনিষ্ঠ আত্বীয় হওয়ায় ভাগিয়ে নেই অনেক ঠিকাদারী কাজ।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় বর্তমানে তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছে হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা ও তমরদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন ও তমরদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাহেদ।
ওনার ছেলে ছাত্রলীগের সাথে জড়িত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী প্রোগ্রাম সহ একাধিক মিছিল মিটিংয়ে অংশ গ্রহণ সহ কিশোর গ্যাং এর সাথেও জড়িত জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
গতকাল ১৩/২/২০২৫  বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটাই হাফেজ নোমান শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ পন্থী শিক্ষক যারা আওয়ামীলীগ থাকা কালীন সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর সুপারিশে সিলেক্টেড হয়ে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে মাদ্রাসার কমিটিতে ছিলো। তাদের কে নতুন মাদ্রাসার শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে কমিটিতে বহাল রাখতে সকল ধরনের ষড়যন্ত্র ওনার হাত দিয়েই হচ্ছে, এই খবর জনতা জানার পর মাদ্রাসার সামনে হাতেনাতে জনতার প্রশ্নের সম্মুখী হন তিনি একপর্যায়ে এখন নব্য-বিএনপি মতাদর্শী পরিচয় দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কেটে পড়েন। ওই জায়গার একটা ভিডিও ফুটেজ আমাদের হাতে এসেছে,ফুটেজে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে কমিটিতে থাকা ফ্যাসিস্ট (প্রভাষক) আনাস উদ্দিন সহ আনাস উদ্দিনের সহযোগী ফ্যাসিস্ট টিচারদের দেখা যায়।
এলাকাবাসী এই দূরাবস্থা থেকে মুক্তি চাই। এলাকাবাসী জানায় বিগত স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজ দলীয় শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বিবেচনায় অযোগ্য, মাদকাসক্ত, দুর্নীতিবাজ লোকদের দিয়ে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার কমিটি করতো। অনেক শিক্ষকেরা ফ্যাসিস্ট সরকারে তেলবাজি করতো, সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠনের নেতাদের অবৈধ সুবিধা দিতো, ভিন্ন মতাদর্শী শিক্ষকদের হেনস্তা করতো, সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করতো।
বিগত আওয়ামী-লীগের সময়ে এসব সুযোগসন্ধানী  শিক্ষক আর কমিটির লোকজন মিলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে মেরুদন্ডহীন করে ছেড়েছে। আর এতে ইন্ধন দিয়ে কিছু অসৎ সরকারি কর্মকর্তারা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো।
৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লব পরবর্তী এদেশের ছাত্রসমাজ নতুন আশায় বুক বেঁধে ছিলো। কিন্তু নামধারী কিছু  অসৎ শিক্ষকদের অনৈতিক লিপ্ততা আর অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ কমিটির কারণে জুলাই  বিপ্লবের স্প্রিরিটকে ধ্বংস করতেছে।
আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক বিবেচনায় অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ, লম্পট লোকদেরকে বাদ দিয়ে মেধাবী, সৎ ও যোগ্য লোকদের দিয়ে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠন করতে হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এই দুইজন শিক্ষকদের মোবাইল সিম ট্যাকিং এর জন্য জনসাধারণ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। যে সিমে বেজে উঠবে আলু, পিয়াজ ও আদার দাম। বেজে উঠবে হাতিয়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগদের সাথে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কথোপকথন। অচিরেই তাদের সিমসূমহ প্রশাসন ট্যাকিং দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন হাতিয়া উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা সহ এলাকাবাসী।