গোপালগঞ্জে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রকে গোপনাঙ্গে আঘাত ও চাক্কু দিয়ে কেটে ফেলার ভয় দেখানোর অভিযোগে দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২:৪৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২৫

শেখ ফরিদ আহমেদ ।।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রের ওপর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে দুই সহকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা হলেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সুমাইয়া বিনতে হায়দার ও সাবরিনা খানম।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা সুমি বেগমের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তার চতুর্থ শ্রেণীর ছেলে তাওসিয়াদকে গোপনাঙ্গে আঘাত ও চাকু দিয়ে কেটে ফেলার ভয় দেখানো হয়। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা স্থানীয় সাংবাদিকদের নজরে আসে।
২৬ মে ২০২৫ তারিখে সুমি বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। ইউএনও অভিযোগটি তদন্তের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেন। এরপর সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পলাশ সরদার ২৭ মে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন এবং শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত করেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোছা: জ্যোৎস্না খাতুন ২৩ জুন ২০২৫ তারিখে অভিযুক্ত দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে “সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮”-এর ৩(খ) ধারায় বিভাগীয় মামলা রুজু করেন। অভিযোগপত্রে শিক্ষিকাদের ১০ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে—কেন তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অন্য কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না।
এছাড়াও, অভিযুক্তদেরকে ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক কিনা, তাও জবাবে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব না পেলে একতরফাভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
জেলা শিক্ষা অফিসার জানান, অভিযুক্ত দুই শিক্ষিকা ইতিমধ্যে তার দপ্তরে লিখিত জবাব দিয়েছেন। তবে বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে।
ঘটনার ব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও অভিযুক্ত দুই শিক্ষিকার কেউই ফোনে কিংবা সরাসরি মন্তব্য দিতে রাজি হননি।
এদিকে ঘটনাটি নিয়ে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত শিক্ষকরা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১০৪ নম্বর মাদ্রাসা সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত।