ভুয়া আন্দোলনকারী শাহীন আলমকে বহিষ্কার করা না হলে শহীদদের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে হবে -প্রকৃত আন্দোলনকারীদের দাবী

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১:২০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২৫

শান্ত শিফাত।।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা শাহীন আলম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের অভিযোগ তুলেছেন। তাদের দাবি, শাহীন আলম প্রকৃত আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা না রেখেও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় থেকে নিজেকে নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং নানা সুবিধা আদায় করেছেন। শুধু ব্যক্তিগত সুবিধা নেওয়াই নয়, শাহীন আলম আরও ভয়ংকর এক পরিকল্পনায় লিপ্ত হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, তিনি তার অনুগত কিছু লোক নিয়ে গোপনে একটি ‘এজেন্ডাবাহিনী’ গঠন করেছেন। এরপর তাদের নাম ঝিনাইগাতী উপজেলা কমিটির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে জেলা কমিটিতে পাঠিয়েছেন। এর উদ্দেশ্য স্পষ্ট, প্রকৃত আন্দোলনকারীদের বাদ দিয়ে তার অনুগত লোকজনকে কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো। এ বিষয়ে জেলা কমিটির কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, আন্দোলনের কঠিন সময়ে যখন অন্যরা রাজপথে লড়াই করছিল, তখন শাহীন আলম ব্যাক্তিভত কাজে তার ফার্মেসীর জন্য ওষুধ সামগ্রী কিনতে এসেছিলেন বাজারে। অথচ পরবর্তীতে তিনি নিজেকে আন্দোলনের অন্যতম নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রশাসনের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ গ্রহণ করেছেন। কৃষি অফিসের প্রণোদনা স্লিপ বিতরণে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়েও অভিযোগ উঠেছে, যেখানে প্রকৃত কৃষকরা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এছাড়াও, তিনি ভালো কাজের নাম করে সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করছেন। তারা আরও অভিযোগ করেছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেলসহ প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার আনুকূল্যেই শাহীন আলম এতদিন সুবিধাভোগী হিসেবে টিকে আছেন। আন্দোলনকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন প্রশাসন সবসময় তাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়? কেন প্রকৃত আন্দোলনকারীরা উপেক্ষিত হন? তবে, এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছুটিতে থাকায় তার কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে, শাহীন আলম নিজে বলেছেন, “আমি সবসময়ই আন্দোলনের ন্যায়সঙ্গত দাবিগুলোকে সমর্থন করেছি। যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন, তারা হয়তো ভুল তথ্যের ভিত্তিতে কথা বলছেন।” কিন্তু ঝিনাইগাতী থেকে আন্দোলনকারী শান্ত শিফাত, রাফসান জানি, নয়ন, ফেরদৌসসহ আরও অনেক তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে দাবি জানিয়েছেন, “শাহীন আলমকে অবিলম্বে বহিষ্কার করতে হবে। তারা স্পষ্ট করে বলেছেন, জেলা কমিটি থেকে তাকে বহিষ্কার এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে তাকে ও তার এজেন্ডাদের নিষিদ্ধ করা না হলে আমাদের শহীদ ভাইদের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে হবে।” তারা আরও বলেন, “এই আন্দোলন কোনো চাটুকারের ব্যক্তিগত স্বার্থ বাস্তবায়নের জন্য হয়নি। আমাদের ভাই-বোনরা এজেন্ডাবাজদের জন্য প্রাণ দেয়নি।” আন্দোলনকারীরা জেলা কমিটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে, যদি শাহীন আলমকে বহিষ্কার করা না হয় এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার প্রতি পক্ষপাতিত্ব বন্ধ না করা হয়, তাহলে তারা আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।