কালিয়াকৈরে ভাড়ায় ডাকাতি মাটি ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা,গ্রেপ্তার-২ দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ৩:০২ অপরাহ্ণ, মার্চ ২২, ২০২৫ নাজমুল হক।। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মাত্র ১ হাজার টাকা করে ভাড়ায় ডাকাতি করতে গিয়ে এক মাটি ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে ডাকাত সদস্যরা। এসময় তাদের হামলায় অপর এক মাটি ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ডাকাত দলের দুই সদস্যকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী। তবে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত এ নৃশংস্য হত্যাকান্ডের ঘটনায় কালিয়াকৈর থানা পুলিশ এখনো মামলা নেয়নি। নিহত হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের গাবচালা এলাকার মুক্তার আলীর ছেলে সজীব হোসেন (৩৮)। তিনি একজন মাটি ব্যবসায়ী ছিলেন। অপরদিকে গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত সদস্যরা হলেন- বগুড়ার শেরপুর থানার হাটিগাড়ি এলাকার আসাদুল শেখের ছেলে সোহেল শেখ (৪০) ও দিনাজপুরের বিরামপুর থানার মহেশপুর এলাকার মিরাজ হোসেনের ছেলে মিজানুর রহমান (৪৫)। এলাকাবাসী, নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার হাটুরিয়াচালা এলাকায় গত বৃহস্পতিবার রাতে ডাকাতি ও হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাতে সজীব হোসেন ও রয়েল হাসান নামে দুই মাটি ব্যবসায়ী মোটরসাইকেল যোগে উপজেলার গাবচালা থেকে পাশ্ববর্তী হাটুরিয়াচালা এলাকায় যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বড়ইবাড়ি-জামালপুর আঞ্চলিক সড়কের হাটুরিয়াচালা এলাকার একটি নির্জন স্থানে পৌঁছলে তাদের গতিরোধ করে ১০/১৫ জনের একদল ডাকাত। এ সময় ডাকাত সদস্যরা ওই দুই যুবকের টাকা-পয়সা লুট করার চেষ্টা করে। এক পর্যায় ওই দুই ব্যবসায়ী দৌড়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় ডাকাত সদস্যরা সজীবকে ধারালা অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে জখম করে। তার সাথে থাকা অপর ব্যবসায়ী রয়েল কৌশলে দৌড়ে পাশের একটি বাড়ীতে ঢুকে ডাকাত ডাকাত বলে ডাকচিৎকার করে। পরে এলাকাবাসী ওই সড়কের ঘটনা স্থলে গেলে ডাকাত সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় ধাওয়া দিয়ে ডাকাত দলের সদস্য সোহেলকে আটক করে গণধোলাই দেয় এলাকাবাসী। পরে এলাকাবাসী আহত অবস্থায় ডাকাত সদস্য সোহেলকে পুলিশে সোপর্দ করে। এসময় আহত ওই দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে সফিপুর মর্ডান হাসাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সজীবকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর আহত রয়েলকে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছাড়াও অজ্ঞান অবস্থায় আহত দুই ডাকাত সদস্যকে উদ্ধার করে পুলিশি নজরদারীতে উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত সদস্যের বরাদ দিয়ে মৌচাক ফাড়ির এসআই সাইদুর রহমান জানায়, সোহেল ও মিজানুর বাড়ইপাড়া এলাকায় কয়েল কারখানার পাশে বাসা ভাড়া থেকে স্থানীয় চন্দ্রা স্পিনিং মিলে নামে কারখানায় চাকরি করেন। বৃহস্পতিবার তারাসহ কয়েকজন মাত্র এক হাজার টাকা করে ভাড়ায় ডাকাতি করতে যায়। ডাকাতিকালে সজীবকে কুপিয়ে জখম করলে তিনি মারা যান। ওইদিন রাতেই পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরে ময়নাতদন্তের পর শুক্রবার বিকেল তার জানাযা নামাজ শেষে তাদের পারিবারিক কবর স্থানে দাফন সম্পূর্ণ করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সজীব হত্যাকান্ডের ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় মামলা নেয়নি পুলিশ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহতের পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী। নিহতের স্ত্রী শারমিন বেগম অভিযোগ, স্বামী সজীব এবং ৫ম শ্রেনীতে পড়ুয়া সোয়াত ও নার্চারীতে পড়ুয়া দুই ছেলেকে নিয়ে আমার সংসার। কিন্তু আমার স্বামী সজীবকে পরিককল্পিতভাবে ও নৃশংস্যভাবে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ তার হত্যাকান্ডের মামলা না নিয়ে নিয়মিত মামলা দিয়েছে। ঘটনায় থানায় এখনো মামলা নেয়নি। তবে যাহারা পরিকল্পিতভাবে সজীবকে নৃশংস্যভাবে হত্যা করেছে, সেই হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন নিহতের পরিবার। এব্যাপারে কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ জানান, এ ঘটনায় থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও গ্রেপ্তারকৃতদের গাজীপুর জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় আরো যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। SHARES অপরাধ ও দুর্নীতি বিষয়: