আমাদের সোনার জামাইকে ফিরিয়ে দাও, ভারতে নিহত এমপি আনার সম্পর্কে এক নারী

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩:৪৩ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২৪

মোঃ বাহারুল ইসলাম।আমাদের সোনার জামাই কিভাবে চলে গেল। তার সব টাকা-পয়সা নিয়ে যেত, আমাদের জামাইকে ফিরিয়ে দিত। কেন এভাবে নিয়ে গেল, সে তো কারো ক্ষতি করেনি। তাকে কেন মেরে ফেরা হলো। আমরা তার হত্যার বিচার চাই। বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপির কালিগঞ্জের বাসভবনের নীচে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করতে করতে দেখা গেছে এক নারীকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ওই নারী কালীগঞ্জ পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর এবং এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার এর স্ত্রীর আত্মীয়। সম্পর্কে তিনি এমপি আনার এর শ্বাশুড়ি।

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহ উদ্ধার করেছে ভারতের পুলিশ। ভারতে যাওয়ার ১০ দিন পর বুধবার(২২মে) সকালে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে এমপির কালিগঞ্জের বাসভবনের সামনে ভীড় করে হাজারো আত্মীয় এবং নেতাকর্মী। কান্নায় ভেঙে পড়ে সকলে। আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ।
সাংসদ আনার এর ব্যক্তিগত সহকারী(পিএস) আব্দুর রউফ নিশ্চিত করেছেন ১২মে রোববার দুপুরে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চিকিৎসার জন্য দর্শনার গেদে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের কলকাতায় যান। সেখানে পৌছে পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার অন্তর্গত মন্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে পরিচিত এক ব্যক্তির বাড়িতে ওঠেন। পরের দিন ১৩মে ডাক্তার দেখানোর জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। ১৫মে বরাহনগরের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাসের হোয়াটসএ্যাপে মেসেজ করে জানান তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। ১৬মে এমপির ব্যক্তিগত গাড়ি চালক তরিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত মুঠোফোনেও একটি ম্যাসেজ পাঠিয়ে জানান দিল্লি যাওয়ার কথা। এরপর থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান আনোয়ারুল আজিম আনার। এরপর থকে পরিবার ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। তাকে ফোনে বা কোনো মাধ্যমে না পেয়ে বিষয়টি সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে জানান উদ্বিগ্ন এমপি পরিবার। এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে ১৮মে থানায় একটি মিসিং ডাইরি করেন এমপি’র পরিচিত ভারতের বরাহনগরের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাস।
সাংসদ আনার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা ঝিনাইদহ-৪ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য(এমপি) এবং কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি। তিনি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা ৩বার আওয়াামীলীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দীর্ঘ দশ বছর ধরে তিনি এলাকার উন্নয়নে কাজ করছেন। সাংসদ হিসাবে বিভিন্ন সেবামূলক কাজের জন্য তার বেশ সুনাম রয়েছে। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকার গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের সাথে দেখা করে সমস্যা শোনেন ও সমাধান করেন। তিনি চলাচলের সময় কোন পুলিশ প্রটোকল ব্যবহার না করে একা একা চলতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। সবথেকে আলোচিত বিষয় তার নির্বাচনী এলাকায় যে কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার বাড়িতে যান এবং শোকার্ত পরিবারকে শান্তনা দেন। এমনও হয়েছে তিনি একদিনে ১০জন মৃত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সাথে দেখা করেছেন।