দেড় বছর পার হলেও খোঁজ মিলেনি নিখোঁজ শাহাদাত মোল্লার, খুঁজে পেতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন মা

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১:৩৭ অপরাহ্ণ, জুন ২, ২০২৪

সাজ্জাদ হোসেন।প্রায় এক যুগ ধরে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় নিজ ঘরের বিছানায় ছটপট করছেন দিনমুজুর স্বামী মো. মান্নান মোল্যা। স্বামী রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে পাঁচ সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে থাকেন স্ত্রী ছালেহা বেগম। এমন অবস্থায় ভ্যান চালিয়ে সংসারের হাল ধরেন সন্তান মো. শাহাদাত মোল্যা (২৫)। এরপর ভ্যান চালিয়ে তিন বোনেরও বিয়ে দেন তিনি।

কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, কিছুদিন পর (গত ৮ বছর আগে) ছিনতাইকারীরা শাহাদাতকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে তার অটোভ্যানটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এতে নিজের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে অনেকটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এ ঘটনার ১৭ মাস পার হলেও আর বাড়ি ফেরেননি শাহাদাত।
এদিকে অসুস্থ স্বামীকে ঘরে রেখে বর্তমানে নিখোঁজ সন্তানের খোঁজে সারা দেশ চষে বেড়াচ্ছেন মা ছালেমা বেগম। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও ছেলে শাহাদাতের সন্ধান পাননি ছালেহা বেগম।
শুক্রবার (৩১ মে) সকালে ছালেহা বেগমকে তার ছেলের ছবি আর একটি নিখোঁজ জিডির কপি ব্যাগে করে নিয়ে ঘুরতে দেখা যায় ফরিদপুরের সালথা উপজেলা সদরে। এ সময় ছেলে নিখোঁজসহ তার পরিবারের এসব তথ্য জানিয়ে কাঁদতে থাকেন তিনি।
ছালেমা বেগম সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের যদুনন্দী গ্রামের অসুস্থ দিনমুজুর মান্নান মোল্যার স্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘মাঠে আমাগো এক কাঠা জমিও নেই। অনেক বছর ধরে আমার স্বামী রোগী হয়ে ঘরে শুয়ে রয়েছে। সে কোনো কাজ-কাম করবার পারে না। আমার তিন মাইয়া ও দুই ছেলে।
বড় ছেলে বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতে আমাদের কোনো খবর রাখে না। ছোট ছেলে ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতো। সে তিন মাইয়াকেইও বিয়ে দিয়েছে। কিন্তু গত ৮ বছর আগে আমার ছেলেডারে মাইরা তার ভ্যানখান নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। এরপর আমার ছেলেডা পাগলের মতো হয়ে গত ১৭ মাস আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত আমার ছেলেডার কোনো খোঁজ পাই নাই। থানায় ডিজি করেছি, প্রেস ক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের জানাইছি। খেয়ে না খেয়ে সারা দেশের বিভিন্ন মাজার ও শহরে গিয়ে তাকে খুঁজেছি। কোথাও তার দেখা পাই নাই। আমার ছেলেডারে আপনারা খুঁজে দেন। নইলে আমি বাঁচব না। ছেলেডার জন্যি মারা যাবো।’
শুক্রবার দুপুরে সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফায়েজুর রহমান  বলেন, ঘটনাটি অনেক আগের। তবে ডিজি করেছে গতমাসে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ছেলেটাকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।