মিঠাপুকুরে শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন প্রতিবাদ: ধর্ষকের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে থানার সামনে কুশপুত্তলিকা দাহ ও মহাসড়ক অবরোধ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৫:০৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫
সারা দেশে যখন ন্যায়ের দাবিতে সোচ্চার কণ্ঠ শোনা যাচ্ছে, তখন মিঠাপুকুরের শিক্ষার্থীরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এক নজিরবিহীন প্রতিবাদ গড়ে তুলেছে। থানার সামনে ধর্ষকের কুশপুত্তলিকা তৈরি করে মিছিলসহকারে উপজেলা চত্বর থেকে মিঠাপুকুর থানা পর্যন্ত পদযাত্রা করে তারা থানার মূল ফটকে অবস্থান নেয়। পরবর্তীতে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে দ্রুততম সময়ে ধর্ষকের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায়।
প্রতিবাদের প্রধান দাবিসমূহ:
✅ অভিযুক্ত ধর্ষককে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে।
✅ সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
✅ ধর্ষণের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি কার্যকর করতে হবে।
✅ মিঠাপুকুর থানার ওসিকে অপসারণ করতে হবে, যিনি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের নতুন রূপ:
এই প্রতিবাদের মাধ্যমে মিঠাপুকুরের সাধারণ শিক্ষার্থীরা দেখিয়ে দিয়েছে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলতে দেওয়া যায় না। তাদের প্রতিবাদ শুধু মিঠাপুকুরের জন্য নয়, সারা বাংলাদেশের জন্য এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তারা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন—
❝ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আপনারা চোখ খুলুন! ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন! মিঠাপুকুরের সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেভাবে গর্জে উঠেছে, পুরো দেশকেও সেভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। ধর্ষকদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিশ্চিত করতে হবে। ❞
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন যে, ধর্ষক এবং তার পুত্র বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের দ্বারস্থ হয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে আন্দোলনকারীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—
“ক্ষমতার অপব্যবহার করে কেউ বিচার থেকে রেহাই পাবে না। আমরা নিশ্চিত করব যে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি আর চলতে দেওয়া হবে না।”
শিক্ষার্থীরা ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করলে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। প্রশাসনের কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। তবে তারা সাফ জানিয়ে দেন—
“ধর্ষক গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমরা আইন মানি, কিন্তু বিচার না পেলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান:
বিক্ষোভকারীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে কঠোর বার্তা দিয়েছেন:
“যদি প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিচারপ্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে, তবে সাধারণ জনগণই তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। আমরা অবিলম্বে **ধর্ষকের** গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানাই—কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।”
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি ধর্ষক গ্রেফতার না হয়, তাহলে আরও বড় কর্মসূচি দেওয়া হবে।
মিঠাপুকুরের এই প্রতিবাদ দেখিয়ে দিয়েছে— বিচারের অপেক্ষায় চুপ করে বসে থাকার দিন শেষ! এখন সময় রাস্তায় নেমে নিজের অধিকারের জন্য লড়াই করার। মিঠাপুকুরের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো যদি সারা দেশের শিক্ষার্থীরা গর্জে ওঠে, তাহলে ধর্ষণের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি কার্যকর করতে সরকার বাধ্য হবে।