স্বামীর পরকীয়া প্রেমে বাধা দেয়ায় নির্যাতনের শিকার স্ত্রী দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১:০৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২৫ মোঃ শাহজালাল।। বরগুনায় স্বামীর পরকীয়া প্রেমে বাধা দেয়ায় বেধড়ক মার খেয়েছেন সুখী বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূ। স্বামীর নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। তার স্বামীর নাম নান্না হাওলাদার । নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ বর্তমানে বরগুনা ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার ঘরবাড়িয়া গ্রামের বাড়িতে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া গ্রামের জবান আলী খান এর মেয়ে। অভিযুক্ত নান্না হাওলাদার বরগুনা সদর উপজেলার ৪নং ইউনিয়নের ঘটবাড়িয়া গ্রামের মৃত্যু শামসুল হক হাওলাদার এর ছেলে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দশ বছর আগে সুখী বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় নান্না হাওলাদারের । বর্তমানে তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।বিয়ের সময় ১ লাখ টাকা যৌতুকও দেওয়া হয়। গত আট মাস আগে নান্না হাওলাদার এর বড় ভাই মৃত্যু বরণ করেন। এর কিছু দিন যেতে না যেতে-ই ভাবির সাথে পরকীয়ায় জড়ান স্বামী নান্না হাওলাদার। সুখী বেগম জানতে পারেন নান্না হাওলাদার এর সঙ্গে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রীর আকলীমার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে কথা বলায় তার ওপর নেমে আসে নির্যাতন। দুটি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে স্বামী ও ভাবির অনৈতিক সম্পর্ক সহ্য করে আসছিলেন সুখী বেগম। এরপরও প্রায় সময়ে কারণে-অকারণে সুখী কে মারধর করেন তার স্বামী। এমনকি ওই ভাবিও সুখী কে মারধর করেন। ঘটনার দিন মঙ্গলবার বিকেলে স্বামী নান্না ও ভাবির পরকীয়া বাধা দিতে গেলে সুখীকে তার স্বামী কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করেন। এতে সুখী অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে আহত অবস্থায় একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে পরিবারের লোকজন ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে বরগুনা সদর ২৫০শয্যা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ শরীরে ক্ষত নিয়ে ব্যথার যন্ত্রণায় হাসপাতালের বেড নং( ৯) শুয়ে কাতরাচ্ছেন। বাম চোখ ও মুখের মাড়ি ফুলে গিয়ে ব্যথায় ঠিকমতো কথাও বলতে পারছে না।এমনকি একটি দাঁত উপড়ে ফেলা হয়েছে। সুখী বেগম জানান, মঙ্গলবার আমার স্বামী ও তার ভাবি আকলীমা একান্ত সময় পার করছিলেন। এ নিয়ে আমি কথা বললে আমাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। আমি আর কিছু বলতে পারি না। জ্ঞান ফিরে দেখি বিছানায় শুয়ে আছি। আহত অবস্থায় আমাকে ঘরে আটকে রাখা হয়। ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতে আমার পরিবারের লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর মা জানান, আমার মেয়েকে, জামাই নান্না প্রায়ই মারধর করেন। আমার পুত্রা চুন্নু মারা যাওয়ার পর আকলীমা একা হয়ে গেছে তাই জামাই নান্না ও তার ভাবিকে বিবাহ করতে চাই কিন্তু মেয়ে মেনে নিতে পারছে না।আর ঘরে আসলেই আমার মেয়ের সাথে জামাই চডাং চডাং করে। আমার মেয়েকে কোন ভাবে সহ্য করতে পারছে না। এর আগেও আমার মেয়ে সুখী কে বেধরক পিটিয়েছে। মেয়ের নির্যাতনের বিচার কি পাবো ? নির্যাতনের শিকার সুখী বেগমের মামা জাহাঙ্গীর খাঁন বলেন, নান্না তার ভাবিকে বিবাহ করবে বিদায় সুখী বাধা দিলে তার উপর চালান অমানবিক নির্যাতন। এটি বর্বর যুগকে ও হার মানিয়েছে। একটি দাঁত উপড়ে ফেলেছে ও শরীরের সমস্ত অঙ্গে ফুলা রক্তাক্ত ও জখম করেছে। তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে বিচার দাবি করেন। এক পর্যায় মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, সুখী চিকিৎসার পরে সুস্থ হলে নান্নার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত নান্না হাওলাদার মুঠোফোনে বলেন, সামান্য ভুলের কারণে তাকে মারধর করা হয়েছে এর বেশি কিছু না। এটা ঠিক হয়ে যাবে। বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। SHARES অপরাধ ও দুর্নীতি বিষয়: