পাবনা জেনারেল হাসপাতালে প্রসূতির স্বাভাবিক প্রসবের সময় নবজাতকের দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার অভিযোগ। দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১২:৫৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ৫, ২০২৫ আব্দুল্লাহ আল মামুন মঙ্গলবার ৪ মার্চ ২৫খ্রি. সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে প্রসূতির স্বাভাবিক প্রসবের সময় নবজাতকের দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা গ্রামের দুবাইপ্রবাসী রমজান খাঁর স্ত্রী শিউলী খাতুন। তিনি দুই সন্তানের জননী এবং তৃতীয় সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে ভয়াবহ এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হোন। রোগীর পরিবারের দাবি, শিউলী খাতুন গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই পাবনার গাইনী চিকিৎসক ডাক্তার শাহীন ফেরদৌস শানুর তত্ত্বাবধানে ছিলেন। মঙ্গলবার ভোররাতে তীব্র প্রসববেদনা উঠলে তাকে দ্রুত চিকিৎসকের চেম্বারে নেওয়া হয়। প্রাথমিক পরীক্ষা শেষে রোগীর অবস্থা জটিল মনে করে চিকিৎসক তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার দীপা মর্জিনা রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, গর্ভের শিশুটি মৃত। এরপর সকালে স্বাভাবিক প্রসব করানোর চেষ্টা করা হলে নবজাতকের দেহ বাইরে বেরিয়ে আসে, কিন্তু মাথা জরায়ুর ভেতরে আটকে থাকে। পরে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুর মাথা বের করা হয়। এই ঘটনার পর প্রসূতির স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। পরিবারের অভিযোগ, শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি আগে জানানো হয়নি এবং প্রসবের সময় যথাযথ চিকিৎসা ও যত্ন নেওয়া হয়নি। তারা এই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাক্তার রফিকুল হাসান জানান, ঘটনা জানার পরপরই তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নারগিস সুলতানা। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আরএমও ডাক্তার জাহিদ ইসলাম ও গাইনী বিশেষজ্ঞডাক্তার ফাতেমা মাসুর। আরও বলেন, “এই ঘটনায় যারা দায়িত্বে ছিলেন, তাদের সঙ্গে কথা বলা হবে। তদন্ত কমিটি সাত কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে। তদন্তে যদি কারও গাফিলতি পাওয়া যায়, তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ডাক্তার নারগিস সুলতানা বলেন, “রোগীর গর্ভের শিশুটি মৃত ছিল এবং প্রসবের সময় দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। যদি কোনো চিকিৎসক বা সেবিকার অবহেলা প্রমাণিত হয়, তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ ঘটনায় গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা অন্যান্য রোগী ও তাদের স্বজনদের মাঝেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রসূতি ও নবজাতকের সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আরও সতর্ক হওয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রসূতি শিউলী খাতুন হাসপাতালের একুশ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। SHARES অপরাধ ও দুর্নীতি বিষয়: