পরীক্ষায় খাতা না দেখানোয় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ সহপাঠীদের বিরুদ্ধে

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২৫

আরিফুল ইসলাম।।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে সহপাঠীকে খাতা না দেখানোর কারনে মোঃ ইমন হোসেন নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকালে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ইমন শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং খুকনী ইসলামপুর গ্রামের মোঃ এমদাদুল হকের সন্তান। শুক্রবার বিকেলে নিহতের লাশ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। এদিকে নিহতের পরিবার থেকে এনায়েতপুর এবং বেলকুচি থানায় অভিযোগ দিতে গেলেও দুই থানার কেউই অভিযোগ নেয়নি। শুক্রবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে গেলে নিহত ইমনের বড় ভাই আরাফাত, চাচা শহিদুল এবং স্বজনরা জানান, চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিল ইমন। গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজি পরীক্ষা চলাকালে সহপাঠীরা কমন না পড়ায় ইমনের খাতা দেখে লিখতে চায়। ইমন খাতা না দেখানোয় পরীক্ষা শেষে মারপিট করে সহপাঠীরা। পরে বিষয়টি ইমন বাড়িতে এসে না বললেও পরদিন শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে ইমনের দুই সহপাঠী রাব্বি এবং রাজিম বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ঐদিন বিকেলে ইমনকে আবারও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বাসায় ফোন দিয়ে জানায় এক্সিডেন্ট হয়েছে। এসময় স্বজনেরা ইমনকে উদ্ধার করে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অস্ত্রপচার করে ইমনের মাথা ভেঙে যাওয়া খুলি জোড়া দেওয়া হয়। পরে হাসাপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাড়িতে আনলে শুক্রবার অবস্থার অবনতি হয়। এসময় আবারও হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিয়ে ইমনের স্বজনরা এনায়েতপুর থানা এবং পরে বেলকুচি থানায় গেলেও কোন থানাই মামলা গ্রহণ করেনি বলেও অভিযোগ করেন ইমনের বড় ভাই আরাফাত এবং চাচা শহিদুল। এদিকে ইমনকে বাড়ি থেকে রাব্বি এবং রাজিম নামের দুই সহপাঠী বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গেছে বলে হাসপাতালের প্রেসক্রিপশনে ইমন নিজেই একটি চিরকুটে লিখে রেখেছে ইমন। এ বিষয়ে গ্রাম্য প্রধান মোঃ লাল মিয়া মোল্লা জানান, মারপিটের ঘটনা শোনার পর আরও গ্রামের লোকজন নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং সেখানকার লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন ৮/১০ জন মিলে ইমনকে মারপিট করে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। কিন্তু কেন তাকে মারধর করা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি জানেন না। বিষয়টি নিয়ে এনায়েতপুর থানার ওসি রওশন ইয়াজদানী জানান, তিনি ট্রেইনিংয়ে আছেন। তবে বিষয়টি তিনি জানেন এবং জিডিমূলে লাশ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি থানায় না থাকায় বিস্তারিত জানার জন্য সেকেন্ড অফিসার মোঃ আনোয়ারুলের সাথে কথা বলতে বলেন। পরে বিষয়টি নিয়ে থানার সেকেন্ড অফিসার মোঃ আনোয়ারুল ইসালামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রাব্বি এবং রাজিমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।