কোয়ারেন্টাইনের উদ্ভাবক বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! শাহিদ হাতিমী দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১১:৩৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৫, ২০২০ গবেষণা রিপোর্ট: কোয়ারেন্টাইনের উদ্ভাবক বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! একথা তো দিবালাকের ন্যায়, স্পষ্ট যে, রাসূলে আরাবী মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সকল কথা, কাজ, চলাচল, সমর্থন ও আচরণ নিঃসন্দেহে উপকারী। বিশ্বনবী সা. সঙ্গরোধ করে প্রায় সময় গারে হেরায় নিমগ্ন থাকতেন। সেখান ওহী আসতো। সবার জানাকথা, মহাগ্রন্থ আল কুরআনের প্রথম বাণী ‘ইকরা’ আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেরা গুহায় কোয়ারেইন্টান (একদম একা অবস্থায় ধ্যানরত) থাকাকালিন নাজিল হয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে কোয়ারেন্টাইন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এটি যেকোনো উপায়ে মানতেই হবে। কিন্তু এই কোয়ারেন্টাইনের কথা সর্বপ্রথম যিনি বলেছিলেন তিনি হলেন মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)। এমনটিই বলছেন মার্কিন এক গবেষক। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা ও সংবাদভিত্তিক ম্যাগাজিন নিউজউইকের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। প্রতিবেদনটি লিখেন মার্কিন গবেষক ড. ক্রেইগ কন্সিডাইন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে অবস্থিত রাইস ইউনিভার্সিটির একজন গবেষক। এছাড়া তিনি একজন আন্তর্জাতিক বক্তা। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইমিউনোলজিস্ট ডা. অ্যান্থনি ফসি এবং মেডিকেল রিপোর্টার ডা. সঞ্জয় গুপ্তের মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন, সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি সুন্দর ব্যবস্থাপনায় হোম কোয়ারেন্টাইন থাকতে। একই সঙ্গে সুস্থ লোকদের জনসমাগম এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, এসব উপায়ই করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) থেকে বেঁচে থাকার সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম। মার্কিন গবেষক ড. ক্রেইগ কন্সিডাইন তার রিপোর্টে লিখেন, আপনারা কি জানেন মহামারির সময়ে সর্বপ্রথম কে এই সবচেয়ে ভালো কোয়ারেন্টাইনের উদ্ভাবন করেছেন? আজ থেকে প্রায় ১৩শ বছর আগে ইসলাম ধর্মের নবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.) পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম কোয়ারেন্টাইনের ধারণা দেন। যদিও তার সময়ে সংক্রামণ রোগের মতো কোনো বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। তারপরেও তিনি এসব রোগব্যাধিতে তার অনুসারীদের যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা ছিল কভিড-১৯ এর মতো প্রাণঘাতী রোগ মোকাবেলায় দুর্দান্ত পরামর্শ। তার সেই পরামর্শ মানলেই করোনার মতো যেকোনো মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এর উদাহরণ হিসেবে মার্কিন গবেষক মোহাম্মাদ (সা.)-এর একটি বাণী উল্লেখ করেন। তিনি লিখেন- ‘মোহাম্মাদ বলেছেন, যখন তুমি কোনো ভূখণ্ডে প্লেগ ছড়িয়ে পড়ার খবর শুনতে পাও তখন সেখানে প্রবেশ করো না। পক্ষান্তরে প্লেগ যদি তোমার অবস্থানস্থল পর্যন্ত পৌঁছে যায় তাহলে ওই জায়গা ত্যাগ কোরো না।’ তিনি আরো বলেছেন, যারা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে তাদের সুস্থ মানুষ থেকে দূরে থাকতে হবে। এভাবে বিভিন্ন সময়ে মানব জাতিকে সংক্রামণ থেকে রক্ষা করতে মোহাম্মাদ (সা.) রোগব্যাধিতে আক্রান্ত লোকদের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারেও উদ্বুদ্ধ করতেন। এ ব্যাপারে তার অমূল্য বাণীগুলো হচ্ছে- ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।’ ‘ঘুম থেকে ওঠার পরে হাত ধৌত করো। কেননা ঘুমের সময় তোমার হাত কোথায় স্পর্শ করেছে তা তুমি জান না।’ ‘খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধোয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে।’ ইত্যাদি। সবচেয়ে বড় কথা, মোহাম্মাদ (সা.) এটা বলেননি যে, শুধু তুমি প্রার্থনা করে বসে থাকবে। বরং তুমি প্রার্থনার পাশাপাশি চিকিৎসা নেবে। সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা পেতে মৌলিক নিয়মগুলি মেনে চলবে। এর উদাহরণ হিসেবে মোহাম্মাদ (সা.)-এর সময়ের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন মার্কিন গবেষক। তিনি তিরমিজি শরিফের বরাত দিয়ে লিখেন, ‘একদিন, মোহাম্মাদ এক বেদুইনকে লক্ষ্য করলেন যে, সে তার উটটি না বেঁধে চলে যাচ্ছে। তখন তিনি বেদুইনকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি তোমার উটটি বেঁধে রাখছো না কেন?’ জবাব বেদুইন বললো, ‘আমি ইশ্বরের (আল্লাহ) উপর ভরসা রেখেছি।’ তখন নবী বললেন, ‘তোমার উটটি আগে বেঁধে রাখ, তারপর আল্লাহ উপর আস্থা রাখ।’ তিনি আরো বলেন- মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনবিচ্ছিন্ন হয়ে একাগ্র থাকতেন, গুহায় সময় কাটাতেন, গারেহেরা মানে গুহায় তাঁর কাছে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী আসতো! মোটকথা, মোহাম্মাদ (সা.) ধর্মীয় ক্ষেত্রে যেমন অবদান রেখে অমর হয়ে আছেন। ঠিক তেমনই মানুষের জীবনযাপন বিষয়ক মহামূল্যবান যে পরামর্শ তিনি দিয়ে গেছেন তা আজও অনুকরণীয়। নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার। দ্বীন ইসলাম, জিন্দাবাদ। শাহিদ হাতিমী SHARES সম্পাদকীয় বিষয়: