রাজশাহী জেলার পুঠিয়া মটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে মিজান বাহিনীর আকষ্মিক তান্ডব

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:২৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
এস.এম. মাহবুবুল ইসলাম লিটন।।
রাজশাহী জেলার পুঠিয়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি বার্ষিক নির্বাচন নিয়ে রক্তক্ষয়ী  সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। ২২/৪/২৫ইং রোজ মঙ্গলবার দুপুর বারো ঘটিকায়, শ্রমিক ইউনিয়নের প্রার্থীগণ নির্বাচনে অংশ গ্রহণের জন্য মটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে নমিনেশন পেপার জমা দিতে গেলে, কিছু উশৃংখল সন্ত্রাসী হঠাৎ সে কার্যালয়ে গিয়ে কিছু নির্বাচন প্রার্থীকে আওয়ামীলীগ ট্যাগ দিয়ে তাদের নিকট হতে নমিনেশন পেপার জোর পূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে তাৎক্ষণিক ছিড়ে ফেলে। এ বিষয়ে মটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন কমিশনার, পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মন্ডল বলেন, “শ্রমিক ইউনিয়ন একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সংগঠন। এখানে সবার অধিকার আছে নির্বাচন করার। তবে, ফেডারেশন এবং শ্রমিক ইউনিয়নে বর্তমানে আওয়ামী লীগের কোনও অস্তিত্ব নেই।”
জানা যায়, মটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থাকা অবস্থায় একদল সন্ত্রাসী বাহিনী হঠাৎ মটর শ্রমিক ইউনিয়নে প্রবেশ করে ৫-৬টা প্রার্থীর নমিনেশন পেপার কেড়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলে এবং প্রার্থীদের অপমান অপদস্ত করে মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে বের করে দেয়। এই সকল প্রার্থীকে পুনরায় নির্বাচন কমিশন আগামী ২৩/৪/২৫ ইং তারিখে নমিনেশন পেপার জমা দেওয়ার জন্য জানিয়েছেন। যে সকল প্রার্থী নমিনেশন পেপার জমা দিতে পারে নাই তারা বলেন, “নির্বাচন কমিশন আমাদেরকে আগামী ২৩/৪/২৫ ইং তারিখে নমিনেশন পেপার জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।”
এখানে উল্লেখ্য যে, বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পুঠিয়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের একটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলামকে আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করেছিলো। যা জাতীয় গণমাধ্যমে একটি আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। এবং বহু নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে সে হত্যা কান্ডের বিচার এখনও চলমান।
 সাধারণ শ্রমিকের সঙ্গে মত বিনিময় কালে শ্রমিকেরা বলেন, “বিগত নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন শ্রমিক নেতা মো: নুরুল ইসলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগের দোসররা নির্বাচনে কারসাজি করে শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলামকে পরাজিত দেখিয়ে, শ্রমিক ইউনিয়ন দখল করে রেখেছিলো। শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম এই অপকর্মের প্রতিবাদ করে এবং রাজশাহী জেলা জর্জ কোর্টে নির্বাচনের ফলাফলের উপরে একটি মামলা করেছিলেন এবং সেই মামলার রায় তার পক্ষে এসেছিলো। রায় আসার দুই দিনের মধ্যে শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলামকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এবং তৎকালীন পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শাকিল আহমেদ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মিথ্যা এজাহার তৈরি করে এই হত্যা মামলাটিকে ভিন্ন খাতে পরিচালিত করার অপচেষ্টা করেন। পরবর্তীতে, ওসি শাকিলের এমন অপতৎপরতা রুখে দিতে শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ভুট্টু ও শরিফকে স্বাক্ষী করে শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলামের মেয়ে নিগার সুলতানা আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই হত্যা মামলার আসামিগণ হলেন, শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য আব্দুর রহমান পটল, রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ, পুঠিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক ও পুঠিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিঠু সহ আরো অনেকে।” শ্রমিক সদস্যরা আরও বলেন যে, “সন্ত্রাসী মিজানের ভাই লাড্ডু আজ এই শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে সহসভাপতি পদে নমিনেশন জমা দিয়েছেন। এবং এই সহসভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে শ্রমিক সদস্য ও শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার স্বাক্ষী ভুট্টু নমিনেশন জমা দিতে গেলে তাকে আওয়ামী লীগ ট্যাগ দিয়ে তার নিকট হতে নমিনেশন পেপার ছিনিয়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলে দেয় এই সন্ত্রাসী মিজান।
জানা যায়, শ্রমিক নেতা নুরুল হত্যা মামলা এখনও পর্যন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। রাজশাহী জেলার পুঠিয়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নে বিগত ২০১৮ সালে নির্বাচন হয়েছিলো। এবং সাত বছর পরে আবারও পুঠিয়া মটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন হতে যাচ্ছে। সাধারণ মটর শ্রমিক ভোটাররা ভোট দিতে ভয় পাচ্ছেন। এবং বলেন বিগত ২০১৮ সালের মত আবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কেউনা আবার হত্যার শিকার হয়ে যায় বলে সাধারণ শ্রমিকেরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
সেই ধারাবাহিকতায় আজকের এমন অনাকাঙ্ক্ষিত সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে, আবারও ২০২৫ এর নির্বাচনে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা আছে বলে বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ আশংকা প্রকাশ করেন।
মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় আগামী ২৫/৪/২৫ ইং তারিখ এবং প্রতীক বরাদ্ধ দেওয়া হবে আগামী ২৮/৪/২৫ইং তারিখে। প্রতীক সহ প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে আগামী ৩০/৪/২৫ইং তারিখে।
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে ১৪ই মে ২০২৫ইং তারিখে সকাল ৮ ঘটিকা হতে বিকেল ৪ ঘটিকা পর্যন্ত। পুঠিয়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য রয়েছেন ১৫০০জন, যা ভোটার তালিকার মোট ভোটার সংখ্যা।
পদ সংখ্যা রয়েছে ১৩টি। নমিনেশন পেপার জমা দিয়েছেন এ পর্যন্ত ৩২টি প্রার্থী।