তালতলী বিএনপি আহ্বায়কের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, মামলা-হামলা ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ঘেরের মাছ লুটপাটের অভিযোগ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩:৩২ অপরাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২৫

মোঃ শাহজালাল, বরগুনা।।

বরগুনার তালতলী উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক মোঃ শহিদুল হকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, মামলা-হামলা ও দলের প্রভাব খাটিয়ে ঘেরের মাছ লুটপাটের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন নিজ দলের কর্মীরা। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তালতলীর সোনাকাটা ইউনিয়নের কবিরাজপাড়া গ্রামের মৃত আলী আকাব্বার মোল্লার পুত্র মোঃ ফারুক মোল্লা, হারুন মোল্লা ও মৃত: মীর শাহজাহান আলীর পুত্র আলমগীর হোসেন। ভুক্তভোগীগণ লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা বিএনপির রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত। আমাদের নিজ দলীয় কতিপয় স্বার্থান্বেষী চাঁদাবাজ-ধান্ধাবাজ, লুটতরাজকারী নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করতে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। তারা বলেন, আমাদের তালতলী উপজেলার ৪২নং বড় নিশানবাড়িয়া মৌজায় ৩১২, ১৩৬৪, ১৩৬৫ ও ১৩৬৮ নং খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত ১৯ একর জমিতে মাছের ঘের করে প্রায় ২৫ বছর যাবত ভোগ দখল করে আসতেছি। সেখানে আমরা যৌথভাবে দেশীয় বিভিন্ন মাছসহ গলদা চিংড়ি, কোরাল মাছ নির্বিঘ্নে চাষ করে আসছি। আমাদের মাছ চাষের উপর তালতলী বিএনপির প্রভাবশালী নেতা, বিতর্কিত উপজেলা কমিটির আহবায়ক মোঃ শহীদুল হক ও কতিপয় স্বার্থান্বেষী চাঁদাবাজ ধান্ধাবাজ, লুটতরাজকারীগণ আমাদের নিকট মোটা অংকের চাঁদা দাবী করতে থাকে। গত ফেব্রুয়ারী মাসের ১৩ তারিখ আমার গর্ভধারিণী মা মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা তড়িঘড়ি করে মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যাই।আমাদের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে তালতলী বিএনপির এ বিতর্কিত উপজেলা কমিটির আহবায়ক মোঃ শহীদুল হক ও তার অনুসারী কতিপয় স্বার্থান্বেষী চাঁদাবাজ, ধান্ধাবাজ, লুটতরাজকারীরা আমাদের ঘেরে অবৈধভাবে ঢুকে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ নিয়ে যায়। ২১ ফেব্রুয়ারী আমাদের মা মারা যান। আমরা যখন শোকার্ত, ঐ সময়েও আমাদের কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে বিএনপি নেতা শহীদুল হক ও তার শ্বশুর মাসুদ। আমরা মাছ লুটপাটের বিষয়টি তালতলী থানাকে অবহিত করলেও তাদের প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে মামলা দায়ের করতে সাহস পাইনি। ২৫ ফেব্রুয়ারী আমাদের মায়ের নামে দোয়া ও কুলখানি অনুষ্ঠান করছি ঐদিন ঐদুর্বৃত্ত চক্র আমাদের ঘেরে দুটি মেশিন লাগিয়ে সেচ দিয়ে শুকিয়ে ফেলে সম্পূর্ণ মাছ ধরে নিয়ে যায়। আমরা বাধা দিতে গেলে তারা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ আমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। জীবন রক্ষার্থে আমরা পালিয়ে আসতে বাধ্য হই। তারা এতটাই হিংস্র প্রকৃতির লোক যেকোন মুহুর্তে আমাদের খুন জখম করতে পারে। তাদের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে আমরা কোথাও কোন অভিযোগ করতে সাহস পাইনি। লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ লুটপাট করে নিয়ে যাওয়ায় আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। আমাদের জীবন জীবিকার একমাত্র উৎস মাছের ঘেরটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলায় আমাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। ভুক্তভোগীরা জানান, তালতলী বিএনপির নেতা মোঃ শহীদুল হক দলের প্রভাব প্রতিপত্তি ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর পাগলা কুকুরের মত হয়ে যায়। তার নেতৃত্বে কতিপয় স্বার্থান্বেষী চাঁদাবাজ ধান্ধাবাজ, লুটতরাজকারী নিয়ে তালতলীর বিভিন্ন যায়গায় নিরীহ মানুষের সম্পদ-সম্পত্তি দখলে নেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। এই শহীদুল হক বিএনপির নেতা হওয়া সত্ত্বেও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে সার্বক্ষনিক ভূমিকা পালন করছে। আওয়ামী লীগের শাসনামলে থানার দালালী, শালিশের নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি, অন্যে জমি দখল তাদের নেশা ও পেশা। আওয়ামী লীগের শাসনামলে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে এই শহীদুল হক ও তার অনুসারীরা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের স্বপক্ষে প্রকাশ্যে মিছিল মিটিং-গণসংযোগ করে। তিনি এলাকায় আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে পরিচিত। এই শহীদুল হকের নানাবিধ অসাংগঠনিক কর্মকান্ডে জড়ানোর কারনে তালতলীর অধিকাংশ বিএনপি নেতাকর্মী বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। তারা বলেন, আমরা বিএনপির জনন্মলগ্ন থেকেই বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত। ভুক্তভোগীরা গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে তালতলীর এই বিএনপির প্রভাবশালী নেতা, বিতর্কিত উপজেলা কমিটির আহবায়ক মোঃ শহীদুল হক ও তার অনুসারী কতিপয় স্বার্থান্বেষী চাঁদাবাজ, ধান্ধাবাজ, লুটতরাজকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিএনপির কর্নধার দেশ নায়ক জনাব তারেক রহমানসহ জেলা, বিভাগ ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।