খানসামায় ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:১৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০২৫

মো. আজিজার রহমান।।

ধর্ষণের চেষ্টা, নাকি ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি। এ নিয়ে এলাকায় চলছে, নানান গুঞ্জন। দিনাজপুরের খানসামায় দুই সন্তানের জননী ইপিজেড কর্মীকে ভুট্টা খেতে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টায় শাহিন ইসলাম (৩০) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শাহিন ইসলাম (৩০) উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের উত্তর ডাঙ্গাপাড়া এলাকার নাজির ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীে ওই নারী নিজেই বাদী হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেন। ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ২নং ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের আরজী জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের ডাঙ্গারহাট এলাকায়। ভুক্তভোগীর এজাহার সূত্রে জানা যায়, আমি নীলফামারী জেলা উত্তরা ইপিজেড এ চাকুরী করি। অভিযুক্ত শাহিন ইসলাম পেশায় একজন মোবাইল মেকার, অত্র উপজেলার পাকেরহাট বাজারে তার মোবাইল সার্ভিসিং এর দোকান আছে। আরেক অভিযুক্ত ফরহাদ হোসেন অভিযুক্ত শাহীনের চাচাতো ভাই। আনুমানিক ০৩ মাস পূর্বে আমি আমার ব্যবহৃত ১টি স্মার্ট মোবাইল ফোন সার্ভিসিং করার জন্য অভিযুক্ত শাহীনের দোকানে যাই। সেখানে যাওয়ার পর আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নাম্বার নেয় এবং বলে যে, মোবাইল ঠিক হলে জানাবো। আনুমানিক ১৫/২০ দিন পর আমার নষ্ট মোবাইল ফোন ঠিক হয়েছে মর্মে শাহিন আমাকে মোবাইল ফোন করে সংবাদ প্রদান করেন। তারপর আমি শাহীনের দোকান থেকে আমার মোবাইল ফোনটি সংগ্রহ করে ব্যবহার করতে থাকি। আমার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি তার কাছে থাকায় সে আমাকে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রকারের এসএমএস পাঠাতো এবং কল করে কথা বলতো। এছাড়াও অভিযুক্ত শাহিন ইসলাম গুগলের মাধ্যমে ব্যবহৃত নম্বর দিয়ে আমাকে কল করে কথা বলতো। একপর্যায়ে অভিযুক্ত শাহীন আমাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেম-ভালোবাসার কু-প্রস্তাবসহ তার সাথে একাকী দেখা করার জন্য আমাকে বিভিন্ন ভাবে অনুরোধ জানাতো। আমি বিবাহিত, আমার স্বামী, সন্তান ও সংসার রয়েছে মর্মে অভিযুক্ত শাহিন ইসলামকে বোঝানোর চেষ্টা করতাম এবং আমাকে প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে এসএমএস ও কল দিয়ে বিরোক্ত না করার জন্য অনুরোধ জানাতাম। কিন্তু অভিযুক্ত শাহিন ইসলাম আমার কোন কথা শুনতে রাজি হয় না। বরং আমাকে বিয়ে করার জন্য বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখাত। এরইধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাত ৯টায় ইপিজেড ছুটি শেষে আমি আমার বাবার বাড়ীতে চলে আসি। আমার বাবার বাড়ীতে আসার সময় শাহীন ও ফরহাদ আমাকে রাস্তায় দেখতে পায় এবং আমার পিছে পিছে মোটরসাইকেল যোগে আমার বাড়ীর সামনে রাস্তায় চলে আসে। অভিযুক্ত শাহিন ফোন করে জরুরী কথা আছে মর্মে আমাকে আমার বাবার বাসা থেকে বের হতে বলে। আমি অভিযুক্ত শাহীনের কথায় সরল বিশ্বাসে বাড়ীর বাইরে আসি এবং তারা আমাকে জানায় যে, “তোমার সাথে জরুরী কথা আছে চলো একটু নিরিবিলি জায়গায় যাই, তা না হলে কেউ দেখে ফেলবে” এই কথা বলে তাদের সহায়তায় আমাকে আমাদের বাড়ী হতে অনুমান ১০ গজ পূর্বে জনৈক আব্দুল হামিদের ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর অভিযুক্ত শাহিন ইসলাম আমাকে জড়িয়ে ধরে এবং আমাকে ভূট্টা ক্ষেতের মধ্যে ধস্তাধস্তিসহ আমার পরিহিত জামা কাপড় খুলে ধর্ষনের চেষ্টা করে। উক্ত সময় আমি চিৎকার করলে অনেকেই এগিয়ে আসে। ঘটনাস্থলে তারা আসলে তাদের ব্যবহৃত একটি রেজিঃ বিহীন লাল রংয়ের হিরো স্পেলেন্ডার প্লাস রেখে যে যার মত দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বলেন, আমি এই ঘটনায় থানায় এজাহার দায়ের করেছি। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শাহীন আলম থানায় একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আমি পেশায় একজন মোবাইল মেকানিক। পাকেরহাটে বাদশা প্লাজায় শাহিন টেলিকম নামে আমার একটি দোকান আছে। সেই সুবাদে শারমিন আক্তার দোকানে মাঝে মধ্যে আসে এবং নষ্ট মোবাইল ঠিক করে নিয়ে যায়। তিনি নীলফামারীর উত্তরা ইপিজিডে চাকরী করে। গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ইপিজিড ছুটি হলে চার্জার অটো করে পাকেরহাটে এসে নামে এবং আমাকে তার বাড়িতে মোটরসাইকেলে করে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বললে আমি সরল বিশ্বাসে তাকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যাই। তার বাড়ির কাছাকাছি যাওয়া মাত্র উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের ছমির উদ্দিন খোচার ছেলে সাইদুল ইসলাম সাধু ও আবু সুফিয়ান, জহির উদ্দিনের ছেলে মো. মোস্তাকিন, মো. নাদেরের মো. মমিনখাঁ, ছয়ফুদ্দিনের মো. জামিয়ার (৩৫)। তারা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে আমার মোটসাইকেলের সামনে এসে আমার মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নেয়। চাবি কেড়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্তগন ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। আমি অভিযুক্তদের গালিগালাজ করতে বাধা নিষেধ করায় সকল অভিযুক্তগন আমাকে এলোপাথারীভাবে কিলঘুষি লাঠি গুড়ি মারিয়া শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফুলা কালশিরা জখম করে সেই সাথে প্রাননাশের হুমকী প্রদান করে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, আমি এই ঘটনায় থানায় এজাহার দায়ের করেছি। এ বিষয়ে শাহীন আলম বলেন, আমাকে নিয়ে যে অভিযোগ দিয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। বরং আমি যে অভিযোগটি দিয়েছি এটি সত্য। এ ঘটনায় খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ নজমূল হক বলেন, আমি দুটো অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ দুটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।