ভাঙ্গায় পূর্বশত্রুতার জেরে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে জখম, থানায় অভিযোগ

দেশসেবা দেশসেবা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৩৪ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২৫

মোঃ রিপন শেখ।।

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই পরিবারের মা-বাবা ও দুই ছেলেকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শনিবার আহত মনোয়ারা বেগম নামের এক নারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। একই পরিবারের আহত মজিবুর মজিবুর রহমান ও তার ছেলে সাদ্দাম হোসেনকে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এছাড়াও মজিবুরের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও তাদের আরও এক ছেলে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মনোয়ারা বেগমের লিখিত অভিযোগের প্রতিপক্ষের অভিযুক্তরা হলেন, একই গ্রামের প্রয়াত আজিজ শেখের ছেলে ছানু শেখ (৫০), আনু শেখের ছেলে ওহিদুল শেখ (৩৫) ও সাগর শেখ (২২), প্রয়াত আজিজ শেখের ছেলে ইউনুস শেখ (৫৫), ছানু শেখের স্ত্রী আরজু বেগম (৪৫), হেলাল মাতুব্বরের স্ত্রী পিয়ারা বেগম (৪০), প্রয়াত মোতালেব শেখের স্ত্রী জাহানারা বেগম (৪৮), উপজেলার চর দুয়াইর এলাকার আলা মোল্লার ছেলে মিয়াজান মোল্লা (৪০)। অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, পুটিয়া এলাকার অভিযুক্ত বাসিন্দাদের সাথে পাশাপাশি বাড়ীতে বসবাস করেন- মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। তাদের বাড়ীর পালানের জমি নিয়ে বিরোধ ও শত্রুতা চলছিল। এ কারণে, অভিযুক্তরা মাঝে মধ্যেই তাদেরকে নানাভাবে হয়রানী করা, বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া ও মারধরের সুযোগ খুঁজছিল। গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাত প্রায় ৯ টার সময়ে কাউলিবেড়া বাজারের মোবাইল সার্ভিসিং এর দোকান বন্ধ করে বাড়ীর উঠানে পৌঁছায় মনোয়ারার বড় ছেলে সাদ্দাম হোসেন। এ সময় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে লাঠিসোঠা, লোহার রড, ধারালো ছ্যানদা, রামদা প্রভৃতি সহ অভিযুক্ত ছানু শেখের হুকুমে অন্যান্য অভিযুক্তরা মনোয়ারাদের বাড়ীতে প্রবেশ করে সাদ্দামকে এলোপাথাড়ী মারধর ও ধারালো অস্র দিয়েকুপিয়ে জখম করে। এতে তার একটি আঙ্গুলের মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় সাদ্দামের কাছে থাকা একটি টাকার ব্যাগ ওহিদুল শেখ ছিনিয়ে নেন। এরপর, সাদ্দামের ডাক-চিৎকার শুনে তার বাবা মজিবুর রহমান ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় তিনি মারপিট ফেরানোর চেষ্টা করলে তাকেও ধারালো রামদা দিয়ে কোপ দেন অভিযুক্তরা। একইসাথে, মনোয়ারা বেগম উপস্থিত হলে তাকেও এলোপাথাড়ী মারপিট করা হয়। তাদের ডাক-চিৎকার শুনে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রা। পরবর্তীতে, জীবননাশের প্রকাশ্য হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় অভিযুক্তরা। পরে প্রতিবেশীদের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মজিবুর তার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছানু শেখ ও ওহিদুল শেখের বক্তব্য জানতে তাদের বাড়িতে গিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি। তবে অভিযুক্তদের পক্ষে আরজু বেগম ও জাহানারা বেগম পাল্টা অভিযোগ করে জানান প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে তাদের লোকজন কে মারধর করেছে। ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী আব্দুল হাই ও শেখ কবির জানান, ছানু শেখ ও তার লোকজন গ্রাম্য শালিষ অমান্য করে মজিবুরের পরিবারের উপরে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছেন। তাই বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তসহ দোষীদের বিরুদ্ধে একটি ন্যায় বিচারের দাবি জানান তারা। গ্রাম্য মাতুব্বর শহীদ মাতুব্বর জানান, জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধটি দুই পক্ষের মধ্যে সমাধানের জন্য একাধিকবার শালিষ করা হলেও সমাধান করা যায় নি। এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আশরাফ হোসেন জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দোসীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।