ফাগুনের আগুন লেগেছে রাজশাহীর বিভিন্ন আম গাছ গুলোতে! দেশসেবা দেশসেবা ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ১:৫১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫ ব্যুরো সংবাদ: নানান ঐতিহ্যের পটভূমি এই রাজশাহী জেলা। সেই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীকে আমের রাজ্যও বলে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। সেই আমের রাজ্যের প্রতিটি আম গাছ ঢেকে আছে স্বর্ণাজ্জ্বল আমের মুকুলে। এ যেনো রাজশাহীর সকল আম গাছে ফাগুনের আগুন লেগেছে। প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় আম রপ্তানি হয়ে থাকে এই ঐতিহ্যবাহী জেলা রাজশাহী থেকে। রাজশাহী জেলাকে আমের রাজধানী বলেও কেউ কেউ ডেকে থাকেন। এ বছর রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা মিলে প্রচুর পরিমাণে আমের মুকুলসহ আমগাছ। আম চাষিদের দেখা যায়, মুকুলসহ আম গাছ পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় কাটাতে। আম চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, এ বছর আম গাছে যে পরিমাণ মুকুল এসেছে তাতে কোনও প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে আমের বাম্পার ফলন হতে পারে। গতবছর রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, জেলায় ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়েছে। এসব গাছ থেকে দুই লাখ ৬০ হাজার ১৬৪ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিলো। এ বছর ১৯ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়েছে। এসব গাছ থেকে ৭০ হাজার ২৩৪ মেট্রিক টন আম উৎপাদন ধার্য করা হয়েছে। আম চাষিরা বুক ভরা আশা বেধে বলেন, এবার কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে রাজশাহীর বাঘা উপজেলাতে প্রচুর পরিমাণ আম উৎপাদন হবে। এবার প্রতিটি বাগানে প্রচুর পরিমাণে আমের মুকুল দেখা যাচ্ছে। আমবাগান মালিকেরা বলছেন, এবার যে পরিমাণ মুকুল এসেছে আল্লাহতালা যদি কোন প্রকার দুর্যোগ না দেন, তাহলে এবার আমরা ব্যাপক ফলন পাবো। প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত এই আম, বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাতে রপ্তানি সহ বাংলাদেশের বাহিরে রপ্তানি করা যাবে। আমের রাজধানী রাজশাহী জেলাতে হরেক রকম আম চাষাবাদ হয়। এরমধ্যে মধ্যে ফজলী আম বৃহৎ আকারের সু-স্বাদু আম। একেকটি ফজলী আম ওজনে প্রায় এক কেজি পরিমাণে হয়ে থাকে। এবং ফজলী আম খেতেও অত্যন্ত স্ব-স্বাদু যা সাধারণত জৈষ্ঠ্যমাসের শেষাংশে বাজারে আসে। এছাড়াও, পুরুলিয়ান দুই ভাগে বিভক্ত মহারাজ ফজলি এবং সুরমা ফজলি, এ ফজলি আমগুলো আকারে অনেক বড় হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি হিমসাগর, আমরুপালী, খিসরাপাত এবং হাড়িভাঙ্গার কয়েকটি আমের জাত এবার অনেক বাগানেই চাষ করা হয়েছে। বাঘা উপজেলা সরেরহাট ইউনিয়নের চকর গ্রামের বাগান মালিক রাব্বানী সাহেব বলেন, আমার বিশ বিঘা জমিতে ৭২১টি আম গাছ রয়েছে। আমার বাগানে সাত প্রকারের আম জাতের গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ মুকুল এসেছে। আল্লাহতায়ালার নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আল্লাহতায়ালা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না দিলে এবং মুকুলের অর্ধেক পরিমাণ আম যদি থাকে, তাহলে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাতে আম রপ্তানি করতে পারব ইনশা’আল্লাহ। এবং বাংলাদেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে। এই আমের মৌসুমে রাজশাহীবাসী সহ সারাদেশের মানুষ আত্মীয়স্বজনদের নিকট আম পাঠিয়ে থাকেন। তাই বলায় যায়, আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখতেও রাজশাহীর আম এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। রাজশাহী জেলা হইতে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাতে আম রপ্তানি করা হয়। ইন্টারনেটের আশীর্বাদে অনলাইনে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও আইডি ব্যবহার করে দেশ-বিদেশে আম রপ্তানি করে থাকেন রাজশাহী জেলার তরুণ উদ্যোক্তারা। রাজশাহীর আম ভান্ডার খ্যাত, জেলার সবচেয়ে বড় আম হাট বেনেশ্বরের হাট থেকে সড়ক পরিবহনে সকল প্রকারের আম সারাদেশে রপ্তানি করে থাকেন বিভিন্ন আম ব্যাবসায়ীরা। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আমপ্রেমী মানুষ এই হাটে এসে আম কিনে তাদের বাড়ির ঠিকানায় কুরিয়ার করে থাকেন। অথবা অনেকেই তাদের পরিচিত ব্যাক্তিবর্গ দিয়ে এই হাট থেকে আম কিনে কুরিয়ারের মাধ্যমে নিয়ে থাকেন। সমাজের বিশিষ্টজনদের মতামত নিলে তারা বলেন, আশা করছি অন্তরবর্তীকালীন সরকার এবার এই বড় ধরনের একটি মৌসুমী ফলকে সকলেরই জন্য সহজলভ্য করে তুলবেন। SHARES জাতীয় বিষয়: